ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আইএসের হাতে বন্দী সুইডিশ কিশোরী অবশেষে মুক্ত

প্রকাশিত: ০৩:৪৩, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আইএসের হাতে বন্দী সুইডিশ কিশোরী অবশেষে মুক্ত

মেরিলিন নেভালেইনেন যখন সুইডেন ত্যাগ করে তখন তার বয়স মাত্র ১৫ এবং সে ছিল গর্ভবতী। আইএসে যোগ দেয়ার উদ্দেশে সে সুইডেন ছেড়ে গেলেও তখনও জঙ্গী গ্রুপটি সম্পর্কে তার কোন ধারণা ছিল না। কিন্তু ইরাকের মসুলে আইএসের হাতে বন্দী থাকাকালে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে কাটাতে মুক্তির জন্যে বেপরোয়া হয়ে ওঠে সে। শেষ পর্যন্ত ইরাকের কুর্দী বাহিনী তাকে উদ্ধার করে এবং দেশে ফেরত পাঠায়। সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ভেরুনিকা নর্ডলান্ড শুক্রবার জানান, মেরিলিন পরিবারের সঙ্গেই সুইডেন ফিরেছে। সে মূলত সুইডেনের বোরাস শহরের বাসিন্দা। মেরিলিন তার বাবা-মায়ের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সুইডেন পৌঁছায়। গত ৮ মাসে তার বাবা-মা বেশ কয়েকবার ইরাক গেছে শুধু তাকে উদ্ধার করতে। পুলিশ জানিয়েছে, বন্ধু মুক্তার মোহাম্মদ আহমেদের সঙ্গে মেরিলিন সিরিয়া যায়। মুক্তার মরক্কোর নাগরিক। সে ২০১৩ সালের আগস্টে ১৭ বছর বয়সে একাই সুইডেন যায়। তবে জোট বাহিনীর বিমান হামলায় সে মারা যায়। কুর্দিস্তান রিজিওনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ১৭ ফেব্রুয়ারি কুর্দী বাহিনী মসুলের কাছ থেকে কিশোরীটিকে উদ্ধার করে। মেরিলিন তার উদ্ধার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু না জানিয়ে টিভি চ্যানেল কুর্দিস্তান ২৪কে এক সাক্ষাতকারে বলে, ২০১৪ সালে মুক্তারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মুক্তার আইএসের ভিডিও দেখে বিপ্লবী হয়ে যায়। মেরিলিন বলে, আহমেদ আইএসে যোগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। আমিও বলি, অসুবিধা নেই। কারণ আমি জানতাম না আইএস মানে কি কিংবা ইসলাম সম্পর্কেও কোন ধারণা ছিল না। ২০১৫ সালের মে মাসে তারা সুইডেন ত্যাগ করে। তখন মেরিলিন গর্ভবতী। তারা ট্রেন ও বাসে করে ইউরোপ পাড়ি দিয়ে তুরস্ক সীমান্ত দিয়ে সিরিয়ায় প্রবেশ করে। আইএস সেখান থেকে তাদের মসুলে নিয়ে যায়। মসুলে দুর্বিষহ জীবনের বর্ণনায় মেরিলিন বলে, ঘরে বিদ্যুত, পানি কিছুই ছিল না। এমনকি অর্থ পর্যন্ত ছিল না। সেখানে খুবই কঠোর জীবন ছিল। সে আরও বলে, যখনই আমার হাতে ফোন আসে তখনই মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করি। আমি বাড়ি যেতে চাই, এ কথাই বার বার মাকে বলি। ওই সময়ে মেরিলিন তার মাকে যে বার্তা পাঠিয়েছিল তা প্রকাশ করেছে সুইডিশ গণমাধ্যম। সে লিখেছে, আমি বোমা হামলায় মারা যাচ্ছি অথবা তারা আমাকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে অথবা আমি নিজেই নিজেকে হত্যা করব। সুইডিশ গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইরাকে সে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। সন্তানসহ তাকে সুইডেনে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। Ñএএফপি
×