ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মর্গে দুই জঙ্গীর লাশ ॥ দেড় মাসেও নিতে আসেনি কেউ

প্রকাশিত: ০১:৩৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মর্গে দুই জঙ্গীর লাশ ॥ দেড় মাসেও নিতে আসেনি কেউ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ডিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুই জঙ্গীর মরদেহের খোঁেজ কেউ আসেনি। দেড় মাস ধরে পুলিশ হত্যা ও পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিলের গ্রেনেড বিস্ফোরনে হোতা জঙ্গী কামান্ডার কালাম ওরফে হিরণ ওরফে তুহিন (৩২) ও নোমান ওরফে আব্দুল্লাহ (৩৫) মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে হিমাগারে পড়ে রয়েছে। তাদের মরদেহ নিয়ে বিপাকে পড়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগ। দুই জঙ্গীর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ফরেনসিক বিভাগে সহকারী অধ্যাপক সোহলে মাহমুদ জনকন্ঠকে জানান, পুলিশকে বারবার তাগিদ দেয়ার পরও লাশগুলো বুঝে নিচ্ছে না। পুলিশ বলেছেন, আদালতে অর্ডারের তারা লাশগুলো নিবেন। এভাবে এক মাস পড়ে থাকায় দুই লাশ নিয়ে তারা বিপাকে আছেন। এমনকি মর্গে মরচুয়ারী জায়গা নেই। পুলিশের অনুমতি ছাড়া তারা লাশ দু’টি বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দিতে পারছি না। তিনি জানান, তারা আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করবেন। এরপর বেওয়ারিশ হিসেবে দুই জঙ্গীর মরদেহ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করবেন। ডিমএপির মিডিয়া উইং উপ-কমিশনার মারুফ হাসান সরকার জানান, নিহত কামাল জামায়াতুল মুজাহিদিনের (জেএমবি) ঢাকা অঞ্চলের নতুন কমান্ডার ছিলেন। নিহত অপর জঙ্গি সদস্য নোমান ছিলেন ঢাকা অঞ্চলের অপারেশনাল কমান্ডার। এর মধ্যে কামাল ওরফে হিরন গাবতলী ও আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। আর নোমান ও আব্দুল্লাহ পুরানো ঢাকার হোসেনি দালানের তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলার হোতা ছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁিড়র ইনচার্জ মোজাম্মেল হক জানান, গত ১৩ জানুয়ারি আটক এক জঙ্গি সদস্যকে নিয়ে হাজারীবাগ শিকদার মেডিকেলের পেছনে অভিযানে যান ডিবির এসি সানোয়ারের ইউনিট। এসময় আরও দুই জঙ্গি মোটরসাইকেলে এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। তখন বন্দুকযুদ্ধে তুহিন ও নোমান নিহত হয়। পরে হাজারীবাগ থানা পুলিশ লাশ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রেখে যায়। পুলিশের দাবি, আশুলিয়ার হত্যা ছাড়াও গাবতলীতে চেকপোস্টে পুলিশ হত্যা, কামরাঙ্গীরচর ও মিরপুরে জেএমবির আস্তানা ও পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিলের আগে বোমা হামলায় জড়িত ছিলেন কামাল। কয়েকজন জেএমবির নেতাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে তার নাম উঠে আসে। ঢামেক মর্গের ইনচার্জ মর্গ সহকারী সেকান্দার আলী জনকণ্ঠকে জানান, দুই জঙ্গী লাশ নিয়ে তারা বিপাকে আছেন। দেড়মাস ধরে মরদেহ দু’টি মর্গে হিমাগারের পড়ে রয়েছে। এদের কোন আতœীয়-স্বজনও তাদের খোঁজ নিচ্ছে না। আতœীয়-স্বজনও কি এদের অপকর্মগুলো ঘৃনা করে। আবার সকাল-বিকেল সাংবাদিকরা এসে বার বার জানতে চায় কিসের লাশ, কেউ নিচ্ছেন না কেন? এমন নান ধরনের প্রশ্ন। সেকান্দার জানান, প্রতিদিন গড়ে দুটি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য আসে। এসব লাশের পরিচয়ের জন্য সাতদিন অপেক্ষায় থাকতে হয়। তাই এই দুই জঙ্গীর লাশের জন্য অন্য লাশ রাখারও জায়গা পাচ্ছি না। এতদিন এই লাশগুলো মর্গের হিমাগারের রাখা হয়। মর্গ সহকারী সেকান্দার জানান, পুলিশকে বার বার বলা হয়েছে। তারা বলেছেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া লাশগুলো কিছুই করতে পারছে না। আদালতে অনুমতি পেলে দুই জঙ্গীর লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
×