ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাঠকশূন্য চাঁপাই সরকারী গণগ্রন্থাগার

প্রকাশিত: ০৩:৫১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পাঠকশূন্য চাঁপাই সরকারী গণগ্রন্থাগার

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারী গণগ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই গণগ্রন্থাগারে আসে না কোন পাঠক বা বই প্রেমিক। সারাদিন পাঠকশূন্য থাকে এই সরকারী পাঠগার। নির্মাণের পর পাঁচ বছর পেরিয়ে যাবার পর বিশাল এই ভবনে গড়ে উঠা পাঠাগারটি বর্তমানে নানা সঙ্কটে জর্জরিত। পাঠাগারের ৩০ হাজারের অধিক বই থাকলেও সদস্য সংখ্যা মাত্র ১৮ জন। প্রতিদিন সংবাদপত্র পড়তে আসে মাত্র ৫ থেকে ৬ জন। প্রথমে শহীদ সাটু হলে যাত্রা শুরু হলে নাম ছিল তথ্য মজলিস। পরে রূপান্তর হয়ে করা হয় সরকারী লাইব্রেরি। ২০০৫-২০০৬ সালে পাঠানপাড়া সংলগ্ন কোর্ট এরিয়ার জমির ওপর নির্মাণ করা হয় বিশাল ভবন। এখানে পাঠকদের জন্য রয়েছে ৩০ হাজার বইসহ অর্ধশতাধিক দৈনিক সাপ্তাহিকসহ নানান ধরনের ম্যাগাজিন। রয়েছে একটি বিশাল অডিটরিয়াম। কিন্তু গত পাঁচ বছরেও অনুষ্ঠিত হয়নি একটিও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সরকারী গণগ্রন্থাগারের নেই কোন উদ্যোগ শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠাগারমুখী করার। অজ্ঞাত কারণে কোন শিক্ষার্থীও সরকারী পাঠাগারমুখী হয় না। অধিকাংশ দিনে ২ জনের অধিক শিক্ষার্থী বা বই প্রেমিক এই পাঠাগারে আসে না। এমনিক অনেক জাতীয় দৈনিক পত্রিকার ভাঁজ ভাঙ্গার পাঠক পাওয়া যায় না। অবস্থা ক্ষতিয়ে দেখার জন্য এই প্রতিবেদক সপ্তাহজুড়ে গণগ্রন্থাগারের ওপর প্রখর ও গভীর নজর একান্তভাবে দিয়ে পাওয়া গেছে, প্রথম দিকে বহু বই প্রেমিক পাঠক লাইব্রেরির সঙ্গে যোগাযোগ করে খালি হাতে ফিরেছে। এখানে কোন ধরনের বই ইস্যু করা হয় না। তাছাড়া পাঠাগার কর্তৃপক্ষের প্রচার প্রচারনা বা সদস্য হবার আহ্বান করাসহ গ্রন্থাগারের সৌজন্যে বছরের কোন বিশেষ দিবস পালন না হবার কারণে ছাত্র-ছাত্রীরা আসে না। কোন সময় রচনা প্রতিযোগিতা বা সাধারণ জ্ঞানের প্রতিযোগিতা হলেও শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা জানতে পারে না। এই অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়াও বিশাল পাঠাগারের স্টাফ সংখ্যা খুবই কম। লাইব্রেরিয়ানের পদ থাকলেও চালানো হচ্ছে সহকারী লাইব্রেরিয়ান দিয়ে। অধিকাংশ সময়ে তিনি স্টেশনের বাইরে নানান কাজে ব্যস্ত থাকেন। ফলে পাঠাগার পরিচালিত হয়ে থাকে পিয়ন দিয়ে। সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার গ্রন্থাগার বন্ধ থাকে। সদস্য হতে হলে ছয় মাস মেয়াদে তিনশত টাকা ও এক বছর মেয়াদে পাঁচ শত টাকা জামানত রাখা হয়। বিধায় শিক্ষার্থীসহ কোন বই প্রেমিক ব্যক্তি সদস্য হবার আগ্রহ না দেখিয়ে লাইব্রেরি আসা বন্ধ করে দিয়েছে। জুনিয়র লাইব্রেরিয়ান দ্বারা পাঠাগার চালানোর প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে লাইব্রেরিয়ানসহ একাধিক পদে লোক নিয়োগ না করলে জনবল সঙ্কট কাটবে না। এসব কারণে বিশাল মাপের সরকারী লাইব্রেরি করার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে এই জেলা শহরে।
×