ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্কুলছাত্রী সমেলা বেগম নেমে পড়েন মিছিলে

প্রকাশিত: ০৩:৪৮, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

স্কুলছাত্রী সমেলা বেগম নেমে পড়েন মিছিলে

৫২ সালে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন সমেলা বেগম। স্কুলে থাকতে তিনি বাংলাভাষার আন্দোলনে নেমে পড়েন। ৫৫ সালে তার বিয়ে হয়। নীলফামারীর ভাষাসৈনিক সঙ্গীতশিল্পী প্রয়াত ওয়ালিউর রহমানের সহধর্মিণী নারী ভাষাসৈনিক সমেলা রহমান বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও সেদিনের কথা আজও ভোলেননি। স্মৃতিচারণে তার অনেক কথায় বেরিয়ে আসে। জেলা শহরের কলেজ সড়কে প্রয়াত স্বামীর বাড়িতে জীবনের শেষ সময় তিনি অতিবাহিত করছেন। তার তিন ছেলে চার মেয়ে। উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণার প্রতিবাদে সে সময় ঢাকা যেমন উত্তাল হয়েছিল তেমনি অনেক জেলার মতো নীলফামারীতেও সেই ঢেউ এসে লেগেছিল। মহান ভাষা আন্দোলনে অন্যান্য নেতাকর্মীর সঙ্গে তৎকালীন ছাত্র সমাজের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। সে সময়ের রাজনীতিক ও মন্ত্রী খয়রাত হোসেন, শিক্ষাগুরু আবু নাজেম মো. আলী (বর্তমান সাংস্কৃতিকবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের বাবা), এ্যাডভোকেট দবির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ নেতাদের দিক নির্দেশনায় মূলত ছাত্ররাই ভাষা আন্দোলনের গতিকে ধরে রেখেছিল। ৬৩ বছর পর ভাষাসৈনিকদের অনেকেই আজ বেঁচে নেই। যারা রয়েছেন, তারাও বয়সের ভারে নড়তে পারেন না। অনেকেরই খোঁজখবর নেই। এদের ভেতর যারা আজও বেঁচে আছেন, তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য হলেনÑ সমেলা রহমান। তার বাবার নাম ছিল সমজান আলী, মায়ের নাম সফিরন নেছা। ১৯৫২ সালে তিনি নীলফামারী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন। সে সময়ে নীলফামারীতে যে ক‘জন ছাত্রী বা নারী ভাষা আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে সমেলা রহমান একজন। তিনি জানান, ছুটোছুটি দৌড়ঝাঁপ করে ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছি। আমাদের পরিবার ছিল রক্ষণশীল। তখনকার সামাজিকতার কারণে মা-বাবাসহ অন্যদের কাছ থেকে প্রচুর কট্যুক্তিও হজম করতে হয়েছে। এরপরও দমে যাইনি। ভাষার দাবি আদায়ে আমরা ছিলাম অনড়- আপোসহীন। করেছি মিছিল মিটিং। আন্দোলন বেগবান করতে সে সময় নীলফামারীর উকিলপাড়ায় চাচা মিঞার বাড়িতে শলা-পরামর্শে করেছি। ভাষা আন্দোলনে নীলফামারীর মেয়েদের মধ্যে আরও যারা সক্রিয় ছিলেন, তারা হলেনÑ জাকিয়া সুলতানা, ফৌজিয়া বেগম বেবী, ফিরোজা বেগম, মমেনা বেগম, রোকেয়া, সালেহা ও হালিমা। সহযোগিতা করেছেন ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী বুলু, হালিমা ও আয়েশা। -তাহমিন হক ববী নীলফামারী থেকে
×