ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

অবৈধ ক্ষমতা দখলের বিষয়ে কমিশন ও শ্বেতপত্র হতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অবৈধ ক্ষমতা দখলের বিষয়ে কমিশন ও শ্বেতপত্র হতে পারে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকারীরা বিচারের আওতায় আসবেন বলে আশা করছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সে সময়ের দুর্নীতি-অন্যায় নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন ও শ্বেতপত্র প্রকাশ হতে পারে। পাশাপাশি সম্প্রতি এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, আইএফজে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতিবেদনে তারা প্রকৃত চিত্র না দিয়ে ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনগুলো দেখে মনে হচ্ছে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা হিসেবে যা খুশি তাই বলতে পারে না। তারা খ-িত ও ভিত্তিহীন তথ্য প্রচার করবে, আবার এরই ভিত্তিতে কেউ কেউ বলবেন বাংলাদেশে গণতন্ত্র গেল, তা চলবে না। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী পাস হওয়ার পরে অবৈধ ক্ষমতা দখল এবং সামরিক শাসনসংক্রান্ত একটি অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়েছে। এতে অবৈধ ক্ষমতা দখলকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার গত সাত বছর ধরে দেশ শাসনে বঙ্গবন্ধুর খুনীর বিচার, যুদ্ধাপরাধীর বিচার, ২১ আগস্টের হামলার বিচারের তদন্ত সম্পন্ন করাÑ এসব ঘটনাগুলো হাতে নিয়েছে। যেহেতু অবৈধ ক্ষমতা দখল শাস্তিযোগ্য অপরাধ, সেহেতু একই সঙ্গে সামরিক শাসন ও অবৈধ ক্ষমতা দখলের প্রচেষ্টা অথবা সংবিধান লঙ্ঘনের বিষয়টা নিয়ে এখন পর্যন্ত বিচার-আচারের কোন সূত্রপাত করতে পারিনি। তবে যেহেতু ১৫তম সংশোধনীতে অবৈধ ক্ষমতা দখলটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, সেহেতু এটা বিচারযোগ্য। সুতরাং অতীতে যেসব অবৈধ ক্ষমতা দখল ঘটে গেছে সেগুলো আজ হোক কাল হোক আমলে আসবে। যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আমলে আসছে। হাসানুল হক ইনু বলেন, ১/১১ নিয়ে আলোচনা হচ্ছেÑ এ ব্যাপারটা আছে এবং যারা ১/১১-এর সঙ্গে জড়িত, বিচার-আচার যখন শুরু হবে তখন তাদের (ডিসিশন মেকিং) দিয়েই শুরু হবে। ১/১১-এর ঘটনা নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠনের ব্যাপারে সরকার কোন পদক্ষেপ নেবে কিনাÑ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ১/১১-এর ঘটনা সংসদে আলোচনা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এখন মাহফুজ আনামের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো বিষয়টা আলোচনায় এলো। এটা নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত হয়নি। এ মুহূর্তে উন্নয়ন, জঙ্গী তা-ব, নাশকতা অন্তর্ঘাত বিষয়টাকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্নের কাজ চলছে। আগুন সন্ত্রাস মোকাবেলা করেছি, আর যাতে আগুন সন্ত্রাস না হয় তার ব্যবস্থা করছি। সুতরাং কমিশনের যে প্রস্তাব সেটা বিভিন্ন মহল থেকে উত্থাপিত হয়েছে, সরকার এটা শুনেছে। সরকার পরে এটা ভেবেচিন্তে দেখবে। তিনি বলেন, ’৭৫ থেকে বিভিন্ন সামরিক শাসনকালে দুষ্কর্ম, মানবাধিকার লঙ্ঘন, নির্যাতন, অত্যাচার-দুর্নীতির যেসব ঘটনা ঘটেছে, সামগ্রিক ব্যাপারে একটা শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি রাখে। তারপর বিচার-আচার কী হবে, সেটা সরকার দেখবে। কিন্তু এ ধরনের একটা শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি রাখে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম সম্পর্কে প্রতিহিংসার কথা বলেননি বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, দায়িত্ব নিয়ে বলছি, প্রধানমন্ত্রী অক্ষরে অক্ষরে সত্য কথা বলেছেন, যাতে আর কোন দিন ১/১১ না ঘটে। সেটি সতর্ক করে উচ্চারণ করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা স্মরণকালের সবচেয়ে স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনায় একচুলও ছাড় দেয় না। সম্প্রতি এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, আইএফজে এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনগুলোতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়ে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে, তা একচোখা বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন হত্যা-নির্যাতন, আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে তখন এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল চুপ থেকেছে, দায়সারা মন্তব্য করেছে। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে খুনের পর সামরিক শাসনামলেও নীরবতা পালন করে। সামরিক শাসনামলে শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়া হলেও নীরবতা পালন করেছে তারা। খালেদার আগুন সন্ত্রাসের সময়ও এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতি দিল না, টু শব্দটি করেনি একচোখা সংস্থা। জাতীয় সংসদ নিয়ে টিআইবি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা সঠিক নয়। তথ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবি মিথ্যা প্রচার করেছিল, উত্তর দিতে পারেনি। জাতীয় সংসদকে বলতে পারে না যে দুর্নীতির আঁখড়া। তিনি বলেন, তারা বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরেন না। ভিন্ন কোন পক্ষের হয়ে একচোখা প্রতিবেদন তৈরি করছে, যা আমরা গ্রহণ করতে রাজি নই। কারণ এ তথ্য খ-িত, যেখানে সঠিক চিত্রের প্রকাশ পায়নি। সরকার ডেইলি স্টার বা প্রথম আলোর সঙ্গে বৈরী কোন আচরণ করছে না দাবি করে ইনু বলেন, ওই দুটি পত্রিকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা আন্তরিকভাবে নিয়মিত অংশ নিচ্ছেন। এমনকি নিয়মিতভাবে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের সরকারী বিজ্ঞাপন দেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গত ২১ ফেব্রুয়ারি তাদের ক্রোড়পত্র দেয়া হয়েছে। লিখিত বক্তব্যে ইনু বলেন, সম্প্রতি এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, আইএফজে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনগুলোতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে তার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। তিনি বলেন, এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, আইএফজে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের গণমাধ্যম পরিস্থিতি নিয়ে যতটা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন ১৯৭১ সালে যখন সমগ্র বাঙালী জাতির ওপর ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা-গণধর্ষণ-যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছিল, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল, খুনী মোশতাক-জিয়ার সামরিক শাসনামলে যেভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে কবর দেয়া হয়েছিল, ২০০৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য জনসভা মঞ্চে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল, এক-এগারো পরবর্তীতে যেভাবে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পদদলিত করা হয়েছিলÑ তখন ঠিক ততটাই নীরব ছিল। শুধু তাই না, যখন ইতিহাসের বর্বরতম যুদ্ধাপরাধের বিচার হচ্ছে, তখন তারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে নানারকম ফন্দিফিকির করছে। তিনি বলেন, ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত প্রথম এবং ২০১৪ থেকে বর্তমান দ্বিতীয় মহাজোট সরকার আমলে রাজনৈতিক কারণে রাষ্ট্র-সরকার-প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুক্ত সংবাদপত্র, মুক্ত গণমাধ্যম, মুক্ত সাংবাদিকতা, মুক্ত মতপ্রকাশের ওপর কোন হস্তক্ষেপ, হয়রানি করা হয়নি। বরং এ আমলে সংবাদপত্র, গণমাধ্যম, সাংবাদিকগণ স্মরণকালের সবচাইতে বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে এবং সবচাইতে বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোন নীতি বা পদক্ষেপ নেই। সরকারের নীতিই হচ্ছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে আরও সম্প্রসারিত ও বিকশিত করা। সেজন্য সরকার গণমাধ্যম ও সাংবাদিকবান্ধব নীতি প্রণয়ন ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশে বর্তমানে ২ হাজার ৮শ’ ৩৪টি পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে, যার বেশির ভাগই সরকারের সমালোচনামুখর। সংসদীয় কমিটি টিআইবির নিবন্ধন বাতিলের সুপারিশ করেছে, যা তাদের এখতিয়ারভুক্ত। তবে সরকার এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। সরকার সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে বিজ্ঞাপনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে না, করছেও না। সে সুযোগও সরকারের নেই। সরকারী বিজ্ঞাপন সবাই পাচ্ছে। বেসরকারী বা ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কোথায় কিভাবে বিজ্ঞাপন প্রদান করবে, তা তাদের নিজস্ব বিষয়। এ ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। সরকারের সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সামান্যতম নিয়ন্ত্রণ আরোপের কোন নীতি বা অভিপ্রায় নেই। সরকার ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর সঙ্গে বৈরিতা করছেÑ কেউ কেউ এমন বললেও সত্যি হলো এই যে, ওই দুটি সংবাদপত্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা নিয়মিত উপস্থিত হয়ে অংশগ্রহণ করে আসছেন আন্তরিকভাবেÑ কোন বৈরিতা নেই। তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ ৪৯ নাগরিক সমাজ সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই অভিযুক্তরা তাদের দোষ স্বীকার করে নিয়েছে। উপরন্তু বিষয়টি নেহাতই আদালতের, সরকারের নয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক খুবই স্বল্প সময়ের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছিল জননিরাপত্তার স্বার্থে। কারণ আন্তর্জাতিক অপরাধে ট্রাইব্যুনালে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় প্রকাশের পর ফেসবুককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে যেভাবে চাঁদে সাঈদীকে দেখা গেছে বলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালিয়ে সারাদেশে নারকীয় তা-ব-অন্তর্ঘাত-নাশকতা চালানো হয়েছিল, তা নিশ্চয়ই দেশবাসী ভুলে যাননি। কোন দায়িত্বশীল সরকারই জেনে-শুনে-বুঝে এ ধরনের নারকীয় তা-ব-অন্তর্ঘাত-নাশকতা থেকে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য পদপেক্ষ নিলে তা গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরা হিসেবে চিহ্নিত করাও দুঃখজনক। চিহ্নিত ও আত্মস্বীকৃত জঙ্গীবাদীগোষ্ঠী কর্তৃক বেশ কয়েকজন ব্লগার গুপ্ত হত্যার দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। সরকার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গুপ্ত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। ব্লগার রাজীব হত্যাকা-ের বিচারও সম্পন্ন হয়েছে। এ জঙ্গীবাদী-উগ্রবাদীগোষ্ঠী শুধু মুক্তমনা ব্লগারই নয়, ইসলামের শান্তিবাদী-সুফীবাদী সাধক ও চিন্তাবাদীদের ওপরও গুপ্ত হামলা-হত্যা চালাচ্ছে। সরকার খুনী-জঙ্গীবাদী-মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পদপেক্ষ অব্যাহত রেখেছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এক-এগারো সময়কালের ঘটনার বিবরণ মাত্র। এখানে কোন অত্যুক্তি নেই, বিষোদ্গার নেই। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে সে সময়ে সেনাসমর্থিত সরকার কর্তৃক রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মচারী এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর যে নির্যাতন হয়রানি হয়েছিল, তারই পরিষ্কার চিত্রটি দেখতে পাই। এখানে কোন হিংসা-প্রতিহিংসার বিষয় নেই। গণতন্ত্রে একটি সংবাদপত্র বা একজন সম্পাদক বা সাংবাদিক রাজনীতিকদের সমালোচনা করতে পারেন। একজন রাজনীতিক কি সংবাদপত্র বা কোন সাংবাদিক বা সম্পাদকের যৌক্তিক সমালোচনা করার অধিকারও রাখেন না? কোন রাজনীতিক সংবাদপত্র বা সাংবাদিক বা সম্পাদকের সমালোচনা করলেই এত শোরগোল তোলা হয় কেন? প্রধানমন্ত্রী এক-এগারো পরবর্তী সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের কয়েকজন সম্পাদক বা সাংবাদিক নিয়ে যে কথা বলেছেন, সেটাতো সত্য ঘটনাই বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী কি সত্য কথাও বলার অধিকার রাখেন না? গণমাধ্যম রাজনীতিবিদদের যুক্তিসঙ্গত সমালোচনা করলে যেমন গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, ঠিক তেমনই রাজনীতিকরাও যুক্তিসঙ্গতভাবে গণমাধ্যমের সমালোচনা করলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও সঙ্কুচিত হয় না। তবে গণমাধ্যম উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনীতিকদের চরিত্রহননে অপপ্রয়াস পেলে কিংবা রাজনীতিকরা যুক্তি ছাড়া গণমাধ্যমের সমালোচনা করলে গণতন্ত্রের ক্ষতি হয়, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি এ থেকে উৎসাহ পায়। রাজনীতিকদের যেমন ন্যূনতম নৈতিক মান বজায় রাখা উচিত, ঠিক তেমনই একজন সম্পাদকের ন্যূনতম নৈতিক মান বজায় রাখা উচিত। একজন রাজনীতিক যদি নৈতিকতার বিবেচনায় সমালোচিত হতে পারেন, একজন সম্পাদকও নৈতিকতার বিবেচনায় সমালোচিত হতে পারেন। কোন সম্পাদকের পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ নয়। গণমাধ্যমের ওপর কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করার অভিপ্রায় সরকারের নেই।
×