ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টালমাটাল ফিফায় ভোটযুদ্ধ আজ

প্রকাশিত: ০৪:৩৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

টালমাটাল ফিফায় ভোটযুদ্ধ আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টালমাটাল ফিফায় আজ ভোটযুদ্ধ। সেপ ব্লাটারের উত্তরসূরি বেছে নিতে পূর্ব নির্ধারিত বিশেষ কংগ্রেসে ভোটাভুটির মাধ্যমে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবে। বহুল কাক্সিক্ষত আজকের ভোট অনুষ্ঠিত হবে ফিফা সদর দফতর সুইজারল্যান্ডের জুরিখে। বিশেষ এই নির্বাচনে ফিফার সর্বোচ্চ মসনদে বসতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ প্রার্থী। এরা হলেনÑ উয়েফার জেনারেল সেক্রেটারি সুইজারল্যান্ডের জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো, আগের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ফিফার সহ-সভাপতি প্রিন্স আলী আল হুসেইন, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সভাপতি সালমান বিন ইব্রাহিম আল-খলিফা, ফিফার কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য জেরোমে চামপাঙ্গে ও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যবসায়ী টোকিও সেক্সওয়েল। পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে দু‘জনকে এগিয়ে রাখছেন সবাই; সার্বিকভাবে নির্বাচনী প্রচার এবং অবস্থান, সমর্থন অনুসারে। এরা হচ্ছেনÑ এশিয়ার ফুটবল নেতা বাহরাইনের শেখ সালমান ও সুইজারল্যান্ডের জিয়ান্নি ইনফ্যান্টিনো। আজকের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফিফায় ১৮ বছরের রাজত্বের অবসান হচ্ছে ব্লাটারের। সুইস এই ব্যক্তি এবং তাদের অনুসারীরাই আজকের নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করেন। অথচ এখানে ব্লাটার কিংবা প্লাতিনি কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছেন না নিষেধাজ্ঞার কারণে। ব্লাটারের গড়া রাজ্যসভার আসনগুলোতে বসবে সম্পূর্ণই ভিন্ন মানুষেরা। নির্বাচনের মাধ্যমে ঘটে যাবে ব্লাটার সাম্রাজ্যের পতন। ১৯৯৮ থেকে টানা তিনি ফিফা সভাপতি হিসেবে আসীন ছিলেন। অনেক ফিফা এবং ফুটবল কর্মকর্তা এটাই শেষবারের মতো জুরিখ সফর করবেন। ২০১৯ সালে পরবর্তী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আর তাদের ফিরে আসার সুযোগ নেই। ফিফায় ২০৯ সদস্য ফেডারেশন আছে। এবার নির্বাচনে যিনি সভাপতি হবেন তিনি গত ৫০ বছরের মধ্যে মাত্র চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে এই পদে আসীন হবেন। এবারের বিশেষ ফিফা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও দুর্নীতি শেষ হবে বলে মনে করছেন অনেকে। কেননা এবারের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন করে অনেক নিয়মকানুনও যোগ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে সংস্কারও হবে ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংস্থার। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ১২ জন। এর মধ্যে ছিলেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার কিংবদন্তি দিয়াগো ম্যারাডোনা। আরও ছিলেন ব্রাজিলের জিকো ও পর্তুগালের লুইস ফিগো। শেষপর্যন্ত এদের কেউই চূড়ান্ত লড়াইয়ে আসেননি। প্লাতিনির খায়েশ ছিল ব্লাটার উত্তর যুগে রাজত্ব করার। কিন্তু ফিফার এথিকস কমিটির কাছে ধরা খেয়েছেন ফরাসী এই কিংবদন্তিও। যে কারণে তিনিও নেই প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। আর তাই ফিফার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো তারকার বাইরে থেকে প্রথমবার সভাপতি হতে যাচ্ছেন। মূলত ব্লাটার ও প্লাতিনি নিষিদ্ধ হওয়ায় অন্যদের জন্য সুযোগ এসেছে। ঘটনা ২০১১ সালের। প্লাতিনিকে হাতে রাখতে ২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক দিয়েছিলেন ব্লাটার। সেটা কোন ধরনের ফুটবল কর্মকা-ের জন্য দেয়া হয়নি এমনটাই তদন্তে বেরিয়ে আসে। যদিও পরবর্তীতে প্লাতিনি ও ব্লাটার দুজনই এটাকে পারস্পরিক সমঝোতার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত লেনদেন এবং সেটা আসলে ফুটবল উন্নয়নের স্বার্থেই দেয়া হয়েছে এমনটা দাবি করেছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছিল, কেন তাহলে ব্যক্তিগত এ্যাকাউন্টে এই বিপুল অর্থ লেনদেন করা হলো। শেষ পর্যন্ত ফিফা নৈতিকতা কমিটি ব্লাটারকে সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করে এবং দু’জনকে সব ধরনের ফুটবল কর্মকা- থেকে ৮ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়। বুধবার অবশ্য দু’জনেরই শাস্তির মেয়াদ দুই বছর কমিয়ে ৬ বছর করা হয়েছে।
×