ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তানোরে স্কুলশিক্ষক নিয়োগ ॥ ৮ লাখ টাকা ভাগাভাগি

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

তানোরে স্কুলশিক্ষক নিয়োগ ॥ ৮ লাখ টাকা ভাগাভাগি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ তানোর উপজেলার সরনজাই উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে ৮ লাখ টাকার বিনিময়ে ভোকেশনাল শাখায় এক বিএসসি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোন নিয়ম না মেনেই গোপনে রাজশাহী নগরীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে নামমাত্র পরীক্ষা গ্রহণের পর নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। সেখানেই নিয়োগ প্রার্থীর কাছ থেকে ডোনেশন বাবদ নেয়া ৮ লাখ টাকার পুরোটায় ভাগবাটোয়ারা করে নেয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান, স্কুলের সভাপতি আব্দুল মালেক, নিয়োগ বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধি রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ওমর ফারুক ও বিষয়ভিত্তিক প্রতিনিধি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আলী আকবর ছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার নির্দেশিত ২২ অক্টোবরের পর থেকে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হলেও স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে ২৩ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়। এজন্য বুধবার বিকেলে দায়সারাভাবে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। পরীক্ষায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের পছন্দের আরও তিনজন ‘প্রক্সি’ পরীক্ষায় অংশ নেই। আগে থেকে দেয়া প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণের পর মুস্তাফিজুর রহমান নামের প্রার্থীকে নিয়োগ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত একজন জানান, বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য সেপ্টেম্বর মাসে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপানো হয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞপ্তিতে ভুল থাকার কারণে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সংশোধনী ছাপানো হয় ২৩ অক্টোবর। তবে তারা আগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়েই নিয়োগ প্রক্রিয়া গোপনে সারছেন। আগের পেপার কার্টিং দেখিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ২০১৫ সালের ৩ ডিসেম্বর তারা নিয়োগের অনুমতিও নিয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ওই স্কুলের সভাপতি আব্দুল মালেক ডোনেশন নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, স্কুলের শিক্ষক দরকার, তাই নিয়ম মেনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে তারপরও নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেননি। পরে তিনি মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। যোগাযোগ করা হলেও ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নানেরও মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তানোর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে সন্দেহ তারও ছিল। তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নিয়মে নাকি ২২ অক্টোবরের আগে নিয়োগ অর্ডার নেয়া থাকলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। তারা পেপার কাটিং দেখিয়েছে সেপ্টেম্বর মাসের। সে কারণে তিনি নিয়োগ বোর্ডে গিয়েছিলেন। তবে তিনি ২৪ ফেব্রুয়ারি নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলে জানান। শিক্ষা অধিদফতরের ডিজির প্রতিনিধি রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ওমর ফারুকের সঙ্গে একাধিকার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
×