ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কক্সবাজারে পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কক্সবাজারে পানির স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, খোলা জায়গা ও জলাধার ভরাট, ব্যাপক পাহাড় কর্তন ও গাছপালা ধ্বংস করার কারণে কক্সবাজারে সুপেয় পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। বছর দেড়েক আগে যেখানে মাত্র একশ’ থেকে ১২০ ফুটের মধ্যে সুপেয় পানি পাওয়া যেত, সেখানে দুই থেকে আড়াইশ’ ফুট নিচে নলকূপের পাইপ বসাতে হচ্ছে। শহরের ট্যুরিস্ট জোন খ্যাত কলাতলী এলাকায় প্রায় ১২ ফুট নিচে নেমে গেছে পানির স্তর। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কতিপয় আ’লীগ ও বিএনপি নেতার ইন্ধনে কলাতলীর আশপাশে ব্যাপক পাহাড় কেটে ভাড়া বাসা নির্মাণ ও অবাধে গাছপালা নিধন করায় আস্তে আস্তে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। আসন্ন শুষ্ক মৌসুমে এ সঙ্কট আরও তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। পানি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সমুদ্র নতুবা বাঁকখালী নদী থেকে দূষণমুক্ত পানি উত্তোলন ও প্রাকৃতিক পানির উৎসগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় দলীয় মন্ত্রী-এমপি, নেতা ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদের নামে সাগর পাড়ের কোটি কোটি টাকা মূল্যের সরকারী জায়গা (গণপূর্তের) প্লট আকারে বরাদ্দ নেয়। রাষ্ট্রের ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিএনপি নেতারা তড়িঘড়ি করে ওইসব প্লটে নির্মাণ করে নেয় বিভিন্ন স্থাপনা। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, খোলা জায়গা কমে যাওয়া, পাহাড় কর্তন ও গাছপালা ধ্বংস করা এবং জলাশয়গুলো ভরাট করে ফেলা হয়েছে ওইসময়। ওসব দালানে বসানো হয়েছে এক একটিতে একাধিক গভীর নলকূপ। নলকূপগুলো বসাতে নিয়ম মাফিক দূরত্ব বজায় রাখা হয়নি মোটেও। বিএনপি আমলে স্থাপিত বহুতল ভবন বা অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে সৃষ্টি হওয়া সুপেয় পানির সঙ্কটে বর্তমানে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় ও পর্যটকদের। এ সঙ্কট থেকে পরিত্রাণ পেতে পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো সংরক্ষণের জন্য সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন মহল। কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, সুপেয় পানি পেতে হলে দেড়-দুই হাজার ফুট দূরত্বের মধ্যে গভীর নলকূপ স্থাপনের নিয়ম রয়েছে। কলাতলীতে অপরিকল্পিতভাবে বসানো হয়েছে বোম-মটর সংযুক্ত গভীর নলকূপ। অথচ প্রয়োজন মাফিক সকল মটরে পানি পাওয়ার নিয়ম মানা হয়নি। এছাড়া নির্বিচারে গাছপালা ধ্বংস করা ও ব্যাপক পাহাড় কাটার কারণে এ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভবিষ্যতে পরিবেশ আরও অবনতি হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
×