ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ত্রবিরতির দায়িত্বে পুতিন

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

অস্ত্রবিরতির দায়িত্বে পুতিন

রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন চলতি সপ্তাহান্তে সিরীয় অস্ত্র বিরতিকে বাস্তবে রূপ দেয়ার প্রচেষ্টাকে নিজের হাতে গ্রহণ করেছেন। তিনি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং গত দুই দিন বিমান হামলার সংখ্যা হ্রাস করতে রুশ সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। খবর গার্ডিয়ান অনলাইনের। রুশ নেতা অস্ত্র বিরতির প্রতি সমর্থন আদায়ে এবং অস্ত্র বিরতির জটিল বিষয়াদি ব্যাখ্যা করতে ইরান, সৌদি আরব, ইসরাইল ও সিরিয়ার নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। তিনি একটি সমন্বয় কেন্দ্রও খুলেছেন, যেখানে বিবদমান পক্ষগুলো অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘিত হওয়ার সুনির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ পাঠাতে পারবে। সিরিয়ার কোন সমস্ত্র গ্রুপ এরই মধ্যে অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে রাশিয়া জানায়। জিহাদী দল ইসলামিক স্টেট ও আল নুসরা ফ্রন্ট সোমবার ওয়াশিংটন ও মস্কোর সম্মত অস্ত্রবিরতির শর্তাবলীর অধীনে অস্ত্র বিরতির আওতা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। সব সিরীয় বিরোধী গ্রুপ ওই সব শর্ত মানবে কিনা, তা স্পষ্ট নয় এবং এতে অস্ত্রবিরতির বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষুণœ হবে। কোন কোন গ্রুপের সঙ্গে আল নুসরা ফ্রন্টের পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। সৌদি উদ্যোগে গঠিত নিগোশিয়েটিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত সিরীয় সরকারবিরোধী দলগুলো অস্ত্রবিরতিকে সুনির্দিষ্টভাবে অনুমোদন করেনি। বিরোধী পক্ষের আশঙ্কা, রুশ বিমানবাহিনীর সমর্থনপুষ্ট সিরীয় সরকারী বাহিনী আল নুসরাকে দমন করার ছদ্মাবরণে বিদ্রোহীদের ওপর হামলা অব্যাহত রাখবে। রুশ উদ্যোগের যথার্থতা নিয়ে এটি কালক্ষেপণ ও সিরীয় সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করার চেষ্টা যে নয়, তা নিয়ে লন্ডন সন্দিহান রয়েছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ মস্কোর সিরিয়া নীতির সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কিনা, যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরেই সে বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করে এসেছে। পুতিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের এক ক্ষুদ্র দল নিয়েই পররাষ্ট্রনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে যুক্তি দেখায় যুক্তরাজ্য। নিজেই পুতিন অস্ত্রবিরতি প্রক্রিয়াতে তার সদিচ্ছাকে যুক্ত করায় তা উৎসাহব্যঞ্জক হতে পারে। বুধবার তিন ঘণ্টার মধ্যে পুতিন ফোনে সৌদি বাদশা সালমান, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানী, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আর আসাদ এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতা নিয়াহুর সঙ্গে কথা বলেন। সিরিয়া অস্ত্রবিরতির বিষয়ে পুতিনের ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত সম্ভবত কয়েকটি বিষয়ের আভাস হতে পারে। পাঁচ বছরে পড়া গৃহযুদ্ধের অবসান যে সামরিক উপায়ে সম্ভব নয়Ñ একথা তিনি স্বীকার করেছেন এবং তিনি ধারণা করছেন যে, সিরীয় সরকারী বাহিনীর ভূখ- পুনর্দখল বিশেষত গত তিন মাসে আলেম্পোর চারদিকে অর্জিত সাফল্য আলোচনার টেবিলে আসাদের হাতকে যথেষ্ট শক্তিশালী করেছে। রাজনৈতিক আলোচনা শুরুর আগে অস্ত্রবিরতি হলেও উত্তর ও পশ্চিম সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের ওপর হামলা চালানো যাবে। সোমবার পুতিনের সঙ্গে ফোন কলে অস্ত্রবিরতির উদ্যোগ নিয়ে একমত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এ কথা বলেন। অস্ত্রবিরতি কার্যকর করতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছে, ওবামাও বুধভার সে বিষয়ে এক সতর্কবাণী উচ্চারণ করেন। তবে তিনি ইরাক ও সিরিয়ার ভূখ- থেকে ইসলামিক স্টেট গ্রুপকে হটিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতি হওয়ার কথা বলেন। এর আগে ওবামা হোয়াইট হাউসে জর্দানের বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে দুই নেতা বলেন যে, গৃহযুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা এবং ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করা সিরিয়ার ক্ষেত্রে তাদের সবচেয়ে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত বিষয়। ওবামা বলেন, আমরা এ নিয়ে প্রত্যাশার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে খুবই সতর্ক। রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি কঠিন।
×