ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিজ জিতে টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া, ম্যাচসেরা জো বার্নস

ম্যাককুলামের বিদায়ী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের হার

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ম্যাককুলামের বিদায়ী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের হার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ওয়ানডের মতো টেস্টের বিদায়টা রঙ্গিন হলো না। অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের ‘ফেয়ারওয়েল’ ম্যাচে হারল নিউজিল্যান্ড। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে ৭ উইকেটের বড় জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০তে জিতে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান দখল করল অস্ট্রেলিয়া। বুধবার পঞ্চম ও শেষদিনে ৩ উইকেট হারিয়ে প্রয়োজনীয় ২০১ রান তুলে নেয় স্টিভেন স্মিথের দল। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ৫০৫ রান। আর কিউইরা অলআউট হয় যথাক্রমে ৩৭০ ও ৩৩৫ রানে। ১৭০ ও ৬৫ রানের দুর্দান্ত দুটি ইনিংস উপহার দিয়ে অসিদের জয়ের ‘নায়ক’ ওপেনার জো বার্নস। বিদায় বেলায় জয় না পেলেও নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলতে পারাটাকেই গর্বের বলে উল্লেখ করেন ম্যাককুলাম। চমৎকার এক ক্যারিয়ার পাওয়ায় মাঠের সতীর্থ, বাইরে ক্রিকেট বোর্ড (এনজেডসি) এবং স্ত্রী ও পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আধুনিক সময়ের চিত্তাকর্ষক এই ব্যাটসম্যান। ১ উইকেটে ৭০ রান নিয়ে শেষ দিনের খেলা শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। বুধবার ৩৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে আরও ১৩১ রান তুলে নেয় সফরকারীরা। মোট ৫৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্মিথ-বাহিনী। ডেভিড ওয়ার্নার ২২ রান করে ফিরেছিলেন আগের দিনই। কাল ৬৫ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেন বার্নস, প্রথম ইনিংসে যিনি করেছিলেন ১৭০। দারুণ ব্যাটিংয়ে ম্যাচসেরা এই ওপেনার। হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন স্মিথও। ওয়ানডে স্টাইলে মাত্র ৪৬ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক। উসমান খাজা করেন ৪৫ রান। ২০১৫-২০১৬ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার টপ-অর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানের প্রত্যেকে কমপক্ষে ৬৯২ বা তার বেশি রান সংগ্রহ করলেন, সেঞ্চুরি ১৮ ও হাফ সেঞ্চুরি ১০টি! ১৯৯২-১৯৯৩’র পর থেকে এ নিয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১০ টেস্টে অপরাজিত অস্ট্রেলিয়া। অধিনায়ক জীবনের শুরুতেই টানা ১১ টেস্টে অপরাজিত স্মিথ, জয় ৭টিতে! তবে এতকিছুর মাঝেও আলোচনায় কেবলই ম্যাককুলাম। ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের মধ্য দিয়ে সাবেক হয়ে গেলেন ধুরন্ধর এই উইলোবাজ। চৌদ্দ বছরের ক্যারিয়ারে যিনি নিউজিল্যান্ডের খোলনলচেটাই বদলে দিয়েছেন। নিজের আক্রমণাত্মক দর্শন ছড়িয়ে দিয়ে ব্ল্যাক-ক্যাপসদের আকর্ষণীয় এক দলে পরিণত করেছেন। তার নেতৃত্বেই কিউইরা প্রথমবারের মতো খেলেছে বিশ্বকাপের ফাইনালে। বিদায় বেলায় নিজে এতটুকু কৃতিত্ব নেননি, ‘গত কয়েক বছর আমার খেলাটা দারুণ উপভোগ করেছি। হয়তো কিছু ম্যাচ হেরেছি, তবে হৃদয় দিয়ে খেলেছি। এ জন্য সতীর্থদের ধন্যবাদ। নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে খেলতে পারাটা আমার সারাজীবন মনে থাকবে।’ বলেন ম্যাককুলাম। ভবিষ্যত নিয়েও আশাবাদী বিদায়ী অধিনায়ক, ‘এই দলটা অনেক দূর যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। দলে সামনে থেকে পথ দেখানোর মতো কয়েকজন ক্রিকেটার রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, অনেক ভাল মানুষ আছে। আর আমার দর্শনটা ধারণ করার জন্য ওদের ধন্যবাদ। এ জন্য হয়তো অনেক সময় মূল্য দিতে হয়েছে।’ ক্রিকেটকেই জীবন করে নেয়ায় এতদিন পরিবারকে খুব বেশি সময় দিতে পারেননি। তাই তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন বি-ম্যাক, ‘ক্রিকেটার হিসেবে এতগুলো বছর পরিবার ছেড়ে বাইরে থাকা অনেক কঠিন ব্যাপার। তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, চৌদ্দটি বছর আমাকে স্বপ্নপূরণের সুযোগ করে দেয়ায়। আর লিস (স্ত্রী এলিসা) তোমাকে বলছি, বাকি জীবন ধরে আমি প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করে যাব। এটা কোন কথার কথা নয়।’
×