ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিপক্ষ আরব আমিরাত

লঙ্কানদের লক্ষ্য জয় দিয়ে শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

লঙ্কানদের লক্ষ্য জয় দিয়ে শুরু

মিথুন আশরাফ ॥ এশিয়া কাপ টি২০তে আজ শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রাত সাড়ে সাতটায় ম্যাচটি শুরু হবে। নিশ্চিতভাবেই বলা চলে, কোন অঘটন না ঘটলে ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কাই জিততে যাচ্ছে। বাছাইপর্বে টানা তিন জয় নিয়ে চূড়ান্ত পর্বে খেলা নিশ্চিত করলেও লঙ্কানদের সামনে দুর্বল দলই আরব আমিরাত। শ্রীলঙ্কা হচ্ছে এশিয়া কাপের ওয়ানডে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দল। আর আরব আমিরাত এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপে অংশ নিচ্ছে। এ নিয়ে ১৩ বার এশিয়া কাপ আয়োজন হচ্ছে। ১২ বারই ওয়ানডে ফরমেটে খেলা হয়েছে। এবার হচ্ছে প্রথমবারের মতো টি২০ ফরমেটে খেলা। স্বল্প ওভারের প্রথম আসরেই আরব আমিরাত সুযোগ করে নিয়েছে। আফগানিস্তান, ওমান, হংকংয়ের মতো দলকে পেছনে ফেলে চূড়ান্ত পর্বে খেলছে। এরআগে ২০০৪ ও ২০০৮ সালেও আরব আমিরাত এশিয়া কাপে খেলেছে। তবে প্রথম পর্বের গ-িই অতিক্রম করতে পারেনি। এবার চূড়ান্ত পর্ব শেষেই লীগ পর্বের সেরা দুই দল ৬ মার্চ খেলবে ফাইনালে। স্বাভাবিকভাবেই ফাইনালে খেলার মতো দল আরব আমিরাত নয়। সেই চিন্তাও কল্পনা প্রসূতই হবে। সেই কল্পনায় যেতে চায় না আরব আমিরাতও। তাদের লক্ষ্য একটাই থাকবে ভাল খেলা। এরপর সুযোগ বুঝে ‘কোপ’ মারা যাকে বলে সেই কাজটি করার চেষ্টাও থাকবে। অর্থাৎ পারলে কোন একটি দলকে হারানো। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে যে কোন একটি দলকে হারাতে পারলে আর কি লাগে আরব আমিরাতের। যে কাজটি কোনদিন করতে পারেনি আরব আমিরাত, এবার সেই আশাই আছে। সেই প্রত্যাশায় শুরুতেই লঙ্কানদের বিপক্ষে লড়াই করতে হবে। এর আগে কোনদিনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে লঙ্কানদের বিপক্ষে খেলেনি আরব আমিরাত। শ্রীলঙ্কা অনেক শক্তিশালী দল। শুধু বর্তমান চ্যাম্পিয়নই নয়, সবচেয়ে বেশি ৫ বার চ্যাম্পিয়ন দলটিও শ্রীলঙ্কা। আর এর আগে ১২ বার যে এশিয়া কাপ ওয়ানডে ফরমেটে হয়েছে, ১১ বারই ফাইনালে খেলেছে শ্রীলঙ্কা। এ দলটি এবারও শিরোপা জিততে চায়। একমাত্র ‘আন্ডারডগ’ দল আরব আমিরাতকে হারিয়ে শুভ সূচনাও করতে চায়। শ্রীলঙ্কা দলটি এবার লাসিথ মালিঙ্গার নেতৃত্বে খেলবে। সঙ্গে টেস্ট অধিনায়ক অ্যাঞ্জলো ম্যাথুসও থাকছেন। মালিঙ্গা দলে থাকা পেস আক্রমণ অনেক শক্তিশালী হয়ে গেছে। আর অলরাউন্ডার ম্যাথুসেরতো তুলনাই হয় না। এ দু’জনই আরব আমিরাতকে হারিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন। এর বাইরে বামহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথও ফিরেছেন। হেরাথের অভিজ্ঞতাই আরব আমিরাতকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। অভিজ্ঞতার ঝুলি আছে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়েও। তিলকারত্মে দিলশান, দিনেশ চান্দিমাল, চামারা কাপুগেদারা ও থিসারা পেরেরা আছেন। এ ব্যাটসম্যানরা বিশ্বের যে কোন দলের জন্যই হুমকি! সেখানে আরব আমিরাততো দুর্বল দলই। মালিঙ্গার সঙ্গে যে লুয়ান কুলাসেকারা আছেন আর হেরাথের সঙ্গে সচিত্র সেনানায়েকে, এ বোলিং বৈচিত্র্যই আরব আমিরাতকে মুহূর্তেই গুটিয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। এ দলটিতে অবশ্য এবার নেই মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা। এ দুই তারকা ক্রিকেটারকে ছাড়াই এবার এশিয়া কাপ খেলতে হবে শ্রীলঙ্কাকে। সেটি আরব আমিরাতের বিপক্ষে না ভোগালেও টেস্ট খেলুড়ে বাকি দলগুলোর বিপক্ষে ভুগতে পারে লঙ্কানরা। এশিয়া কাপের আগে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ হারই যে তার প্রমাণ বহন করে। আরব আমিরাতের জন্য চূড়ান্ত পর্বে খেলাই সাফল্য। এর সঙ্গে চূড়ান্ত পর্বে টেস্ট খেলুড়ে চার দেশের বিপক্ষে খেলতে পারলে যে অভিজ্ঞতা হবে, তা ভবিষ্যতে কাজে লাগানোর যে প্রয়াস সেটিই আরব আমিরাতের বড় পুঁজি হয়ে দাঁড়াবে। তারাও জানে জেতা অসম্ভবই! তাই যত ভাল খেলা যায়, সেদিকেই মনোযোগটা বেশি থাকবে। সেই ভাল খেলতে ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ নাভিদ ও টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদের ওপরই আরব আমিরাত ভরসা করবে। এখন এ ভরসায় কতদূর কি করা যায় তা সময়ই বলে দেবে। তবে আজ ম্যাচটিতে শ্রীলঙ্কার যতটানা উপকার হবে, তারচেয়ে বেশি উপকার হবে আরব আমিরাতেরই। দলটি যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে নেবে। যা পরবর্তী ম্যাচগুলোতে কাজে দেবে। আর শ্রীলঙ্কা জিতলে শুভ সূচনা করতে পারবে। একটি টুর্নামেন্টে যা সবচেয়ে বেশি জরুরী।
×