ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠের আসর

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠের আসর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বৃষ্টিস্নাত মনোরম এক বিকেল। দুপুরে হঠাৎ করে ঘটে যাওয়া শিলাবৃষ্টি যেন এ সময়টাকে কবিতার জন্য উপযুক্ত করে দিয়ে গেছে। দেশের বরেণ্য কবিরা একে একে আসছেন, কেউ কেউ খোশগল্প করছেন। কবি ও লেখক সৈয়দ শামসুল হক, কবি আনোয়ারা সৈয়দ হক, হাবীবুল্লাহ সিরাজী থেকে শুরু করে অনেকেই ইতোমধ্যে হাজির হয়েছেন। কবি আনোয়ারা সৈয়দ হক গল্পের ছলে নিজের লেখা কবিতার বই কৌশলে নিজে কিনে পাঠকদের বই কেনার প্রেরণার কথাও শোনালেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রাঙ্গণে বুধবার এভাবে কবিদের আড্ডা চলার কোন এক সময়ে মাইকে ঘোষণা এলো এখনই শুরু হচ্ছে ‘কবিকণ্ঠে কবিতা’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এ আসরের আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার আমন্ত্রণ পেয়ে নির্দ্বিধায় এ পদটি অলঙ্কৃত করেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। অনুষ্ঠানে শ্রোতার সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন, কিন্তু কবিদের সরব উপস্থিতির কোন ঘাটতি ছিল না। কবিদের নিজের লেখা কবিতা পাঠে যেমন ছিল উচ্ছলতা, তেমনি ছিল আনন্দ ও প্রাণের উচ্ছ্বাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি কবি রবিউল হুসাইন। তিনি বলেন, যার প্রাণ আছে সে প্রাণী, আর যার মন ও মনন আছে সে কবি। আজ আমরা কবিদের এ মিলনমেলায় তাদেরই কণ্ঠে কবিতা শুনব, যারা তাদের কবিতা দিয়ে রাঙিয়ে রেখেছেন আমাদের মনোজগতকে। শুরুতে নিজের লেখা থেকে ‘পথ’ কবিতাটি পড়ে শোনালেন কবি আতাহার খান। এরপর কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা তার ‘বুলেট’ কবিতা পাঠ করেন। তিনি যখন তার উচ্চারণে বলেন- ‘বুলেট তোমার নিজের কোন ভিন্ন মত নেই’ তখন পুরো অনুষ্ঠানে এক ভিন্ন আবহ তৈরি হয়। কবিরাই হাততালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। পরে কবি অসীম সাহা পাঠ করেন তার ‘রক্তস্নাত শহীদ মিনার’ কবিতাটি। কবি তারিক সুজাত পড়ে শোনান ‘ভাষার জন্য ভালবাসা’ কবিতাটি। কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী তার ‘আমার সাহস’ কবিতাটি পাঠ করেন। কবি শিহাব সরকার পাঠ করেন ‘একুশের নতুন কবিতা’। এছাড়া অন্য যারা তাদের লেখা কবিতা পড়ে শোনান তারা হলেনÑ কবি আনোয়ারা সৈয়দ হক, রবিউল হুসাইন, রবীন্দ্র গোপ, খোরশেদ বাহার, শামস হক, রণজিত কুমার এবং সব শেষে নিজের লেখা কবিতা পড়ে শোনান সৈয়দ শামসুল হক। শিল্পকলায় ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’ মঞ্চস্থ ॥ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের তুমুল জনপ্রিয় নাটক ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’। বের্টল্ড ব্রেশটের মূল নাটকটির রূপান্তর ও নির্দেশনা দিয়েছেন আসাদুজ্জামান নূর। নাটকটির এ প্রদর্শনীতে মাখন চরিত্রে আবুল হায়াতের পরিবর্তে অভিনয় করেন পান্থ শাহরিয়ার। তবে আগের মতোই দেওয়ান গাজী চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেন আলী যাকের। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেনÑ আলী যাকের, সারা যাকের, রুনা খান, পান্থ শাহরিয়ার, মোস্তাফিজ শাহীন, ফারুক আহমেদ, লাবণ্য, শামীমা নাজনীন, ঝুমু মজুমদার, অরণ্য, জিয়াউল হাসান কিসলু, গোলাম সারোয়ার, বেলায়েত হোসেন মিরু, পিন্টু, শাওন প্রমুখ। সর্বপ্রথম ১৯৭৭ সালে এ নাটকটি মঞ্চে আনে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়। এরপর নিয়মিত মঞ্চায়নে নাটকটি দর্শকের প্রশংসা অর্জন করে। গত ১২ বছর এই নাটকের প্রদর্শনী বন্ধ ছিল। গত ১১ সেপ্টেম্বর গঙ্গা-যমুনা নাট্য উৎসবকে কেন্দ্র করে নাটকটি আবারও নিয়মিত প্রদর্শনী শুরু হয়।
×