ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ড. আহমদ শরীফ স্মারক বক্তৃতায় আয়শা খানম

নারী আন্দোলন অন্যান্য সামাজিক আন্দোলন থেকে পৃথক

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

নারী আন্দোলন অন্যান্য সামাজিক আন্দোলন থেকে পৃথক

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেছেন, নারীর নিজের সংগ্রামকে তার বৃহত্তর জীবনের অন্যান্য সংগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা যাবে না। লিঙ্গীয় বৈষম্য বিলোপের সঙ্গে অন্যান্য ক্ষেত্রের সংগ্রাম সংশ্লিষ্ট ও জড়িত। নারী আন্দোলন অন্যান্য সামাজিক আন্দোলন থেকে পৃথক, ভিন্ন রকম। এর অনেক বৈচিত্র্য আছে, এর নারীবাদী নীতি বা চিন্তাধারা এবং প্রেক্ষিত, বৈশ্বিক যোগাযোগসূত্র, সীমানা এবং এর সংগঠিত করার বিশেষ পদ্ধতি আছে, যা নারী আন্দোলনকে অন্যান্য সামাজিক আন্দোলন থেকে আলাদা করে ফেলে। নারী আন্দোলনের অর্থের সাথে নারীর সামাজিক অবস্থান নির্ণয়ের এবং সামাজিক সম্পর্ক নির্ণয়ের প্রক্রিয়া নিহিত। নারীর শ্রেণী, গোত্র, ধর্ম, বর্ণ, বয়স কীভাবে তার সামাজিক অবস্থান তৈরি করছে তা চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া। এই সংগ্রামের মূল লক্ষ্য হলো চলমান আন্দোলনকে আরও সমতাভিত্তিক, অধিক মানবিক, অধিক স্থায়ী এবং অধিক নিরাপদ বিশ্ব তৈরি করা। বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদ ভবনের মিলনায়তনে আয়োজিত ড. আহমদ শরীফ স্মারক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক কে এ এম সা’দউদ্দিন এবং টিপু বিশ্বাসকে ড. আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার-২০১৬ প্রদান করা হয়। অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে স্বদেশ চিন্তা সংঘ। স্মারক বক্তৃতায় আয়শা খানম আরও বলেন, নারী আন্দোলনের বিষয় বিবেচনা করার সময় নারীকে তার শ্রেণী, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, নৃতাত্ত্বিক পরিচয় থেকে পৃথক করে দেখা কখনও কোন মতেই সম্ভব নয়, ঠিকও নয়। এর অর্থ নারীর নিজের সংগ্রাম তার বৃহত্তর জীবনের অন্যান্য সংগ্রাম থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখা যাবে না। লিঙ্গীয় বৈষম্য বিলোপের সাথে অন্যান্য ক্ষেত্রের সংগ্রাম সংশ্লিষ্ট ও জড়িত। বৃহত্তর সামাজিক আন্দোলনের কর্মসূচীতে আরও আন্দোলন কর্মসূচী যুক্ত করতে হয়। যেমন সামাজিক ও অন্যান্য আইনী, অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি ও কাঠামোগত পরিবর্তন, যাতে নারীর যথাযথ অবস্থান তথা নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ অবস্থান তৈরি হয় এবং একই সঙ্গে নারী আন্দোলনের সাথে এসব প্রতিষ্ঠানের নানা উত্তেজনা বা বিরোধী অবস্থানও তৈরি হয়। নারীবাদী রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, লিঙ্গীয় কারণে বৈষম্যমূলক আরচণ, দৃষ্টিভঙ্গি, সংস্কৃতি, শোষণমূলক ব্যবস্থার শিকার হয়ে নিপীড়নের, নির্যাতনের শিকার হয়। এই বক্তব্যই নারীবাদী রাজনীতি তথা নারীবাদের মৌল বক্তব্য। আর এই চিন্তাধারাই নারী আন্দোলনকে শক্তি যোগায়। এতে নারীবাদ শব্দটি ব্যবহার করা হলো কি হলো না, এ ক্ষেত্রে তা মূল বিবেচ্য বিষয় নয়। সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ড. আহমদ শরীফ ছিলেন একজন বুদ্ধিবৃত্তিক চরিত্র। যারা ছিলেন প্রচ-ভাবে আত্মশক্তিতে বলীয়ান শক্তিশালী চরিত্রের মানুষ। কোন শক্তির কাছে মাথা নত না করে তাঁরা আজীবন সত্য প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে গেছেন। বর্তমানে এই দেশে সেই বুদ্ধিবৃত্তিক চরিত্রের মানুষ আর নেই।
×