ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দূর্ঘটনায় মৃত্যুঝুঁকির আশঙ্কা

বিলবোর্ডের কাটা অংশ পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বিলবোর্ডের কাটা অংশ পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে রোড ডিভাইডারের ওপর গেঁড়ে বসা বিলবোর্ডগুলো এখন আর নেই। কিন্তু রয়ে গেছে প্রায় দেড় ফুট ব্যাসার্ধের বিলবোর্ড পিলারের নিচের অংশ। নগরীতে চসিকের ৮৮০টি অবৈধ বিল বোর্ডের গোড়ার অংশ এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পথচারীদের জন্য। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাস্তায় ডুবে থাকা লোহার অংশবিশেষ যানবাহনের চাকার জন্য মারাত্মক অবস্থানে রয়েছে। যে কোন মুহূর্তে বিকট শব্দে টায়ার বিস্ফোরণসহ ঘটতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা। এদিকে, চউকের উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সড়ক মেরামত ও সংস্কার কাজের বছরখানেক পার না হতেই বেহাল দশা সড়কের। সড়কের নবনির্মিত ডিভাইডার ভেঙ্গে অবৈধ বিলবোর্ড ব্যবসায়ীরা পিলারের গোড়ার অংশ রাতের আঁধারে তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অপরদিকে, সিটি কর্পোরেশনের দোহাই দিয়েও অনেক বিলবোর্ডের কর্তৃত্ব অংশ তুলে নিচ্ছে দিনমজুর শ্রেণী। অভিযোগ রয়েছে, কর্পোরেশন লাভের প্রত্যাশায় অবৈধ বিলবোর্ড স্থাপনে কোন ধরনের বাধা প্রয়োগ করেনি। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা বিলবোর্ডের আড়ালে নগর ঢেকে দেয়ার অপতৎপরতায় মেতেছিল একযুগেরও বেশি সময় ধরে। চসিকের অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে যুগ যুগ ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবেশ। বিপদগামী হয়েছে পথচারীসহ সাধারণ মানুষ। কিন্তু বিলবোর্ড উচ্ছেদের নামে এখন চলছে সড়ক বিনষ্টের অপপ্রয়াস। মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছে শিশুসহ পথচারীরা। কারণ, বিলবোর্ড স্থাপনকৃত পিলারগুলো দেড় থেকে দুই ফুট ব্যাসার্ধের। যে কোন সময় শিশু কিশোররা পড়ে যেতে পারে কাটা পিলারের গোড়ার অংশে। এছাড়াও যানবাহনেরও বিশাল ক্ষতি হতে পারে। যুগের পর যুগ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় থাকা বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো একটির বৈধতা নিয়ে ১০টি অবৈধ বিলবোর্ড গেঁড়ে বসার ঘটনা ঘটিয়েছে। নগরীতে দীর্ঘ প্রায় বারো বছরে ৮৮০টি বিজ্ঞাপনী প্রচারণার হিসাব মিলেছে চসিকের রাজস্ব বিভাগে। বিজ্ঞাপনী প্রচারণার আকার আকৃতি ও ধরন পরিবর্তন করে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসলেও কর্পোরেশন কিছুই বলেনি পকেট বাণিজ্যের কারণে। রাজস্ব বিভাগের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা যারা মাঠপর্যায়ে এবং প্রচারণা নবায়ন ও সংস্থাপনে জড়িত তারাই মূলত ছিল নিয়ন্ত্রক। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের যোগদানের পর থেকে প্রচারণার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। মাঠপর্যায়ের তদন্ত শেষে দেখা গেছে সব ক’টি বিলবোর্ডই অবৈধ। পরিবেশবিদদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ও নগরবাসী এমনকি মিডিয়ায় কর্মরতদের চাপের মুখে অবশেষে কর্পোরেশন বিলবোর্ড ও বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপনী প্রচারণা উচ্ছেদে নামে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে দিনের বেলায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হলেও এ বছরের শুরুতে অভিযানের ধরন পাল্টিয়েছে চসিক। সিটি কর্পোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়ে রাঘব বোয়ালদের অবৈধ বিলবোর্ড উচ্ছেদে নামে চসিক। রাতের আঁধারে নগরীর আনাচে কানাচে থাকা বিজ্ঞাপনী প্রচারণা সাফ করে ফেলা হলেও রয়ে গেছে বিশালাকার বিল বোর্ডের খুঁটির নিচের অংশ। এখন আবার শুরু হয়েছে রাস্তা খুঁড়ে রাতের আঁধারে ও দিনের বেলায় পিলারের গোড়া তুলে নেয়ার অপচেষ্টা। চউক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে প্রায় ২২টি ছোট বড় সড়কের রোড ডিভাইডারের মাধ্যমে রাস্তা সংস্কার ও চওড়া করা হয়েছে। এ ব্যাপারে চউকের কয়েক প্রকল্প পরিচালক ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, বছর দুয়ের যেতে না যেতেই সড়কের ডিভাইডারগুলো ভেঙ্গে কর্পোরেশন বিলবোর্ডের গোড়া তোলার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।
×