ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পে দ্রুত বিদ্যুত সংযোগ

প্রকাশিত: ০৩:৪৭, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শিল্পে দ্রুত বিদ্যুত সংযোগ

রাজনৈতিক অস্থিরতা হরতাল-অবরোধ সত্ত্বেও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বেসরকারী বিনিয়োগ বেড়েছে ১০ শতাংশ। এ সময়ে জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ, বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া গেছে সোমবার প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর চূড়ান্ত হিসাব থেকে। দেশে জ্বালানি সঙ্কট, ব্যাংকের উচ্চ সুদ হার, রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, টানা হরতাল-অবরোধের যুক্তি দেখিয়ে অর্থনীতিবিদরা বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, সার্বিকভাবে জাতীয় অর্থনীতিতে যে গতি সঞ্চার হয়েছে, তা অস্বীকার করা যাবে না। যে কারণে মানুষের মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। বাংলাদেশ যে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ থেকে ক্রমশ মধ্যম আয়ের দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এ বিষয়টি নিয়ে শুধু দেশেই নয়, এমনকি আলোচনা হচ্ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। বর্তমান বিশ্বে সব রকম জ্বালানি তেলের দাম একেবারে পড়ে যাওয়ার বিষয়টিকেও অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা দেখছেন এক রকম আশীর্বাদ হিসেবে। কিছু দিন আগে বিনিয়োগ বোর্ডের উদ্যোগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিনিয়োগ সম্মেলন, যাতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেখানে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের নানাবিধ সমস্যা-সঙ্কটসহ তা থেকে উত্তরণের উপায় যেমন মিলেছে; তেমনি মিলেছে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি তথা অঙ্গীকার। বর্তমানে বিনিয়োগের অন্যতম প্রতিবন্ধক ভূমি সংকুলান, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদ হার, বিদ্যুত ও জ্বালানি সমস্যা সর্বোপরি মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল। বাস্তবে সব সমস্যার সমাধান রাতারাতি সম্ভব নয়। তবে আশার কথা এই যে, বিদ্যুত সমস্যার সমাধান মিটে গেছে অনেকটাই। সরকার আগামী দু’বছরের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুত সংযোগ দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে উন্নয়নের জন্য চাই শিল্পোন্নয়নে বিদ্যুত সংযোগ। এটি যত দ্রুত সম্পন্ন করা যায় ততই মঙ্গল। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা প্রায়ই অভিযোগ করে থাকেন যে, বাংলাদেশে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে প্রায়ই ভূমি সংস্থান, বিদ্যুত সংযোগসহ অবকাঠামো উন্নয়নে যথেষ্ট সময়ক্ষেপণ হয়ে থাকে। এতে বিনিয়োগ ব্যয় বৃদ্ধি পায়। বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ কমে যায়। তবে দেশে নতুন ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিতসহ চার মাসের মধ্যে শিল্পে বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার সিদ্ধান্তটি এ ক্ষেত্রে অবশ্যই আশার সঞ্চার করেছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) আগামী জুনের মধ্যে পেন্ডিং সকল শিল্প আবেদনকারীকে বিদ্যুত সংযোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, সারাদেশে পল্লী বিদ্যুত সমিতিগুলোতে বর্তমানে নয় হাজার শিল্প সংযোগের জন্য অপেক্ষমাণ। এখন পল্লী বিদ্যুত যদি তাদের কথা রাখতে সমর্থ হয়, তাহলে শিল্প খাত তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে আরও দ্রুতগতি সঞ্চার হবে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। তবে মনে রাখা দরকার যে, শিল্পে বিদ্যুতের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। এর জন্য পরিবহন ব্যবস্থার সঙ্গে চাহিদার সঙ্গতি ও সমন্বয় থাকতে হবে সর্বদাই। এখানে লো ভোল্টেজসহ ট্রিপের সমস্যা থাকাও বাঞ্ছনীয় নয়। আরও যা জানা যায় তা হলো, পরিবেশগত ছাড়পত্রের অভাবে নাকি অনেক শিল্পে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। সে অবস্থায় পরিবেশ অধিদফতরকেও দ্রুত তৎপর হতে হবে।
×