ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিশুদের ভালবাসুন

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শিশুদের ভালবাসুন

হারুনুর রশিদ সম্প্রতি বাংলাদেশে শিশু নির্যাতনের ঘটনা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা খুললেই দেশের কোথাও না কোথাও শিশু নির্যাতনের খবর পাওয়া যায়। আরও ভয়ঙ্কর খবর হলো শিশুদের নির্যাতন করেই ক্ষান্ত হয় না নরপশুরা এরপর তাদের হত্যা করা হয়। অতঃপর শিশুদের নিথর দেহকে ঘাতকরা কখনও মাটিচাপা দিয়ে রাখে আবার কখনও নদীতে ভাসিয়ে দেয়। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিশুদের নির্মম নির্যাতনের বেশকিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে। সিলেটের শিশু রাজনের নির্যাতনের যে ভিডিও চিত্রটি আমরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের কারণে খুব সহজে দেখতে পেয়েছি। সিলেটের রাজন খুলনার রাকিব ছাড়াও সম্প্রতি ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ও হবিগঞ্জে চার শিশুকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়াও সারাদেশে যে হারে শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে তাতে আমাদের দেশের সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক মূল্যবোধে চরম বিপর্যয় ঘটেছে বলে মনে করছি। সিলেটের শিশু রাজনকে নির্যাতনের ভিডিও চিত্র দেখে আমরা এ কথা কোন রকম সঙ্কোচ ছাড়াই বলতে পারি যে, মানবিক মূল্যবোধের কতটা নিচু স্তরে পৌঁছে গেছে। ঠিক মধ্যযুগে যেভাবে কন্যাসন্তানদের নির্যাতন করে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো তেমনিভাবেই আমাদের দেশের আগামীর ভবিষ্যতদের নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। দেশে শিশু নির্যাতনের ঘটনা আর কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। নারায়ণগঞ্জেও একাধিক মেধাবী ও প্রতিভাবান শিশুকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের দেশে প্রধানত দুটি সহজ পদ্ধতিতে শিশুদের টার্গেট করা হচ্ছে। এক. শিশুদের অপহরণের মাধ্যমে অপরাধীরা নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করছে। দুই. এক ধরনের বিকৃত মনের কিছু নরপশু রয়েছে যারা কোন কারণ ছাড়াই শিশুদের ওপর নির্মম নির্যাতন করছে। যারা শিশুদের নির্যাতন করে লাফালাফি করে, হাসে, উল্লাস করে তাদের কি মানব জাতির কোন্ স্তরে স্থান দেয়া যায়? অথচ আমরা সিলেটের রাজন, খুলনার রাকিবের ক্ষেত্রে তেমনটিই দেখতে পেয়েছি। এ চিত্রগুলো কোন সুস্থ মানুষের জন্য অত্যন্ত হৃদয়বিদারক, দুঃখজনক, অনভিপ্রেত। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, যেই দেশে পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট দশ বছর বয়সী শিশু শেখ রাসেলকে হত্যা করতে পারল সেই দেশে শিশুদের নির্যাতন ও হত্যার ঘটনাগুলোকে কোনভাবেই স্বাভাবিক বলা যাবে না। আর বর্তমানে যে হারে বাংলাদেশে শিশু নির্যাতন ও হত্যার ঘটনা ঘটছে তাতে মনে হয় এক সময় বাংলাদেশে শিশু নির্যাতনের হার বৃদ্ধি পেতে পারে। যা শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তায় উদ্বেগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। দেশে বর্তমানে ঘটে যাওয়া শিশু নির্যাতন ও হত্যার ঘটনাগুলোর যথাযথ বিচার ও অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে এক সময় উগ্রবাদী বিভিন্ন জঙ্গী গোষ্ঠী তাদের কাজের সুবিধার জন্য কোমলমতি শিশুদের প্রধান টার্গেট করতে পারে। আমরা ইরাক, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, লিবিয়া, সিরিয়া ও ফিলিস্তিনে বিভিন্ন গোষ্ঠীর হামলায় শিশুদের টার্গেট হতে দেখেছি যা কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়। সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর থেকে
×