ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কাজী আজিজের জবানবন্দী

সাখাওয়াত নিজ হাতে মালেককে গুলি করে হত্যা করে ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

সাখাওয়াত নিজ হাতে মালেককে গুলি করে হত্যা করে ॥ যুদ্ধাপরাধী বিচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের পঞ্চম সাক্ষী কাজী আব্দুল আজিজ তার জবানবন্দীতে বলেছেন, রাজাকার সাখাওয়াত নিজ হাতে আব্দুল মালেককে গুলি করে হত্যা করে। গুলি করার আগে ছেলেটি রাজাকারদের বলে, স্যার আমাকে একটু অযু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ার সুযোগ দেন। তখন রাজাকাররা বলে একবারেই নামাজ পড়ে নিস। সাক্ষীর জবানবন্দী শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী তাকে জেরা করেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ২ মার্চ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা চমন। আর আসামি পক্ষে ছিলেন সাত্তার পালোয়ান ও আব্দুস শুকুর। সাক্ষী তার জবানবন্দীতে বলেন, আমার নাম কাজী আব্দুল আজিজ। আমার বর্তমান বয়স আনুমানিক ৬৬ বছর। আমার ঠিকানা- গ্রাম- চিংড়া, থানা- কেশবপুর, জেলা- যশোর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল আনুমানিক ২১/২২ বছর। আমি দশম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। চিংড়া বাজারে আমার চাচা কাজী রশিদের একটি গোডাউন ছিল। সেখানে তিনি বিভিন্ন মালামাল রেখে ব্যবসা করতেন। তার কোন ছেলে মেয়ে ছিল না। ১৯৭১ সালে ২৮ আশ্বিন প্রতিদিনের মতো আমি আমার চাচার গোডাউনে দোকানদারি শুরু করি। এর পর আনুমানিক ৮টা সাড়ে ৮টার দিকে রাজাকার ইব্রাহিম, রাজাকার আব্দুল আজিজ সরদার, রাজাকার আব্দুল খালেক মোড়লসহ আরও ৫/৬ জন রাজাকার একটি ছেলেকে পিঠমোড়া বেঁধে আমার দোকানের সামনে দিয়ে বাজারের পশ্চিম পাশে আলাউদ্দিন মুন্সীর দর্জির দোকানের পশ্চিম দিকে নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর আমি দোকান বন্ধ করি। আমি এবং পার্শ্ববর্তী দোকানদার খন্দকার আব্দুল রাজ্জাক এক সঙ্গে বাড়ির দিকে রওনা হই। বাড়ি যাওয়ার পথে আলাউদ্দিন দর্জির দোকানের সামনে পৌঁছালে ঐ রাজাকাররা আমাদের দাঁড় করায়। সেখানে শুনি যে, রাজাকার ইব্রাহিম আটককৃত ঐ ছেলেটিকে বলছিল, ‘তুই রেডি হয়ে নে’। তখন ঐ ছেলেটি রাজাকারদের বলে, ‘স্যার আমাকে একটু অযু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ার সুযোগ দেন।’ তখন রাজাকার ইব্রাহিম বলে, ‘একবারে নামাজ পড়িস।’ এর পর রাজাকার ইব্রাহিম আমাদের দুইজনকে আটককৃত ছেলেটিকে চিংড়া বাজারের পশ্চিম পাশে খেয়া ঘাটের দিকে নিয়ে যেতে বলে।
×