ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পে স্কেল ইস্যুতে ফের আন্দোলনে যাচ্ছেন ভার্সিটি শিক্ষকরা

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পে স্কেল ইস্যুতে ফের আন্দোলনে যাচ্ছেন ভার্সিটি শিক্ষকরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পে স্কেল ইস্যুতে আবার আন্দোলনে যাচ্ছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বেতন ও মর্যাদার প্রশ্নে শিক্ষকদের দাবি আগামী ৬ মার্চের মধ্যে বাস্তবায়ন না হলে ফের কঠোর কর্মসূচী দেবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতিগুলোর ঐক্যবদ্ধ জোট বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ৬ মার্চ অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বেতন-বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না হলে ৮ মার্চ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সভা থেকে দেয়া হতে পারে শিক্ষকদের লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা। পে স্কেলে মর্যাদাহানির অভিযোগ ও বৈষম্য নিরসনের দাবিতে সরকারকে দেয়া আল্টিমেটাম শেষে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সভায় নতুন করে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলনের কথা জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। সভায় ঢাকাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। সভা শেষে শিক্ষক নেতারা জানান, আগামী ৬ মার্চ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে বেতন-বৈষম্য নিরসন সংক্রান্ত পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সভায় শিক্ষক প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করছি। সভায় দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের বিষয়ে ফলপ্রসূ সাড়া না পাওয়া গেলে ৮ মার্চ ফেডারেশনের সাধারণ সভায় কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবেন শিক্ষকরা। আগের মতো লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণাও আসতে পারে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক নেতা। ফেডারেশনের সভায় আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে শিক্ষক নেতারা বলেছেন, ফেডারেশনের সাধারণ সভায় আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত যতটুকু অগ্রসর হয়েছি সে বিষয়টি আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন ও সরকারের পদস্থ চারজন সচিবদের সঙ্গে আমাদের কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সঙ্গেও এক দফা আলোচনা হয়েছে। আমাদের দিক থেকে সব ধরনের সহযোগিতা আমরা প্রদান করেছি বলে বলেছেন শিক্ষক নেতারা। মহাসচিব অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ৬ মার্চ পুনর্গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির চূড়ান্ত সভা অনুষ্ঠিত হবে, সভায় শিক্ষক প্রতিনিধিরাও থাকবেন। ওই সভার ওপর নির্ভর করে শিক্ষকদের মতামত নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। কঠোর কর্মসূচীর কোন পরিকল্পনা রয়েছে কিনাÑ জানতে চাইলে ওই শিক্ষক নেতা বলেন, শিক্ষকরা চাইলে হতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমরা বেতন-বৈষম্য নিরসন কমিটির সঙ্গে চার দফা বৈঠক করে আমাদের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছি। আমরা আশা করছি, ৬ তারিখের বৈঠকে শিক্ষকদের দাবির সমাধান হবে। শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের অবসান হবে। আমরা দীর্ঘ দশ মাস ধরে আন্দোলন করছি। কিন্তু আমাদের দাবি বাস্তবায়নে অবহেলার লক্ষ্য করছি, যা কাম্য হতে পারে না। আমরা বার বার সময় দিয়েছি যাতে ছাত্রদের কোন ক্ষতি না হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নতুন জাতীয় বেতন কাঠামোয় সৃষ্ট বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে গত ১১ জানুয়ারি থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ১৮ জানুয়ারি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে ফেডারেশনের নেতারা দাবি-দাওয়া তুলে ধরে পরের দিন সাধারণ সভা করে আন্দোলন স্থগিত করেন। এরপর বেতন-বৈষম্য নিরসনে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনায় অগ্রগতির কথা জানিয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষকরা বলেন, কর্মবিরতি স্থগিতের মেয়াদ ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছেন তারা। একই সঙ্গে বলেন, ২৩ তারিখের মধ্যে যদি সমস্যাটির সম্মানজনক সমাধান হয় তবে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমরা ধন্যবাদ জানাব। আর যদি না হয় তাহলে সার্বিক অগ্রগতি এবং কর্মসূচী পর্যালোচনা করে পরবর্তী নতুন কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার বসেছিল ফেডারেশনের সভা। যেখান থেকে ফের সময় বেঁধে দেয়া দিলো ফেডাররেশন। প্রধানমন্ত্রƒীকে আজ থেকে স্মারকলিপি দেবেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা ॥ নতুন পে স্কেলে সৃষ্ট বেতন-বৈষম্য নিরসনে সরকারের উদাসীনতার অভিযোগ এনে সোমবার কর্মসূচী ঘোষণার পর আজ থেকে মৌন মিছিল করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি সংবলিত পত্র দেবে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)। এমপিওর দাবিতে শিক্ষকদের অনশন চলছে ॥ এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচী পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সৃষ্টপদে নিয়োগপ্রাপ্ত নন-এমপিও বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদ। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মঙ্গলবার পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচী দ্বিতীয় দিনের মতো পালন করছেন শিক্ষকরা।
×