নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ২২ ফেব্রুয়ারি ॥ রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, সীমান্ত চুক্তি ও সমুদ্র বিজয়ের ঘটনা বাংলাদেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। দেশ এখন মজবুত অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে। পদ্মা সেতুর মতো বৃহৎ প্রকল্প এ সরকার বাস্তবায়ন করছে। উন্নয়নের এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।
সোমবার দুপুরে জামালপুর সরকারী আশেক মাহমুদ কলেজের ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। কলেজের ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে, যাতে তোমরা বড় হয়ে অপরাপর দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পার। শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদ্যাসাগরে পরিণত করতে হবে। আদর্শ দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। অর্জিত শিক্ষাকে মানবকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।
দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। দেশে কলকারখানা, ক্ষেতে-খামারে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্ধবিশ্বাস ও মৌলবাদ যেন নিজেকে আকৃষ্ট করতে না পারে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আরও বলেছেন, এখন মানুষের কাছাকাছি থাকারও সুযোগ নেই। আমি বঙ্গভবনের চার দেওয়ালে বন্দী অবস্থায় আছি। গানের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অন্যদের দূরের মানুষ কাছে রয়, আর আমার কাছের মানুষগুলোই দূরে রয়। কবিতার ছন্দে তিনি বলেন, হাওড় জঙ্গল মহিষের সিং, এই নিয়ে ময়মনসিংহ। আমি বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছেলে। ব্যক্তিগত জীবনে আমার ৩ ছেলে ও এক মেয়ে। আমার একমাত্র মেয়েকে জামালপুরে বিয়ে দিয়েছি। কাজেই জামালপুরের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক বিরাজমান।
স্থানীয় কিছু দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, আমি সরকারপ্রধান নই। আমি দেশের প্রধান। কারও কোন দাবি দাওয়া থাকলে সরকারপ্রধানের কাছে করতে হয়। তবে আমার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
কলেজের ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আশেক মাহমুদ কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমান বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মুজাহিদ বিল্লাহ ফারুকী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ বাকীবিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরী, জামালপুর পৌর মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম মণি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব সোহরাব হোসেন, জামালপুর সদর-৫ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোঃ রেজাউল করিম হীরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।
রাষ্ট্রপতি কলেজের অনুষ্ঠানে ভাষণ শেষ করে হেলিকপ্টারে করে সরিষাবাড়ীর ডোয়াইল ইউনিয়নের হরখালি গ্রামে তার বেয়াই বাংলাদেশ ডাকবিভাগের সাবেক মহাপরিচালক এম বদিউজ্জামানের বাড়িতে যান। সেখানে তিনি মেয়ে স্বর্ণা হামিদের হাতের রান্না করা খাবার খান। পরে বিকেলে তিনি ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: