ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আন্দোলনের মাধ্যমেই হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আন্দোলনের মাধ্যমেই হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আন্দোলন ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও সংস্কৃতি রক্ষায় নতুন করে আন্দোলন শুরু করার কথা বললেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমেই হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র পুরোপুরি নির্বাসিত। যারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন, তারাই গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছেন। অতীতেও একই কাজ করেছিলেন। আজ গণতন্ত্র উদ্ধার ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। আর গণতন্ত্র উদ্ধারে আন্দোলন ছাড়া কোন বিকল্প নেই। নতুন করে আন্দোলন শুরু করতে হবে। এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতি, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও গণতন্ত্র, মানুষের অধিকারগুলোকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, যে চেতনায় একুশে ফেব্রুয়ারির জন্ম হয়েছে, তা আজ কপটতা, ব্যবসা, উৎসব আর ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। ভাষাকে আজ বিকৃত করা হচ্ছে। যাদের কারণে মায়ের ভাষা ফিরে পেয়েছি, একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাদের কথা মানুষ এখন জানতে পারে না। স্বাধীনতার মূল বীজ নিহিত ছিল একুশে ফেব্রুয়ারির মধ্যে। যে ভূখ-ে বাস করছি তার সূত্রপাত ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমেই হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমানের অবদান অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। তার কারণেই বাংলাদেশে নতুন আদর্শ, নতুনত্ব, নতুন আশার আলো দেখতে পেয়েছিলাম। সেটা ছিল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। বিএনপি একটি উদার মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক দল উল্লেখ করে বলেন, দলটিকে আমরা যদি সুসংগঠিত করতে পারি এবং একটা আদর্শভিত্তিক দল হিসেব প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলেই বিএনপি যুগ যুগ ধরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটা অনন্য ভূমিকা রেখে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ। তারা অতীতে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। এখন তারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটা অনির্বাচিত সরকার পরিচালনা করছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। যার কারণে দেশে রাজনৈতিক শূন্যতা বিরাজ করছে। আর এর সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গী, সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থীরা। মওদুদ বলেন, আমাদের ইতিহাস জানতে হবে। আওয়ামী লীগ অনেক পরে স্বাধীনতার কথা বলেছে। স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার আওয়ামী লীগ যে দাবিটা করে এটা সত্য নয়। তারা ৬দফা দাবি দিয়েছে ১৯৬৬ সালে। কিন্তু সেখানেও বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা বলে নাই। ১৯৭১ সালের সমঝোতার সময়ও তারা স্বাধীনতার কথা বলে নাই। আলোচনায় অংশ নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। ভূলুণ্ঠিত গণতন্ত্রকে ফিরে পেতে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশে অলিখিত বাকশাল চলছে। এ থেকে মুক্ত হতে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। দেশকে উচ্চ মর্যাদায় নিতে শপথ নিতে হবে। তাহলেই শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা করা হবে।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল করেছিল। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতেই বিএনপির জন্ম হয়েছিল। রাজনীতি থেকে শুরু করে সর্বস্তরে অবক্ষয় চলছে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাইকে শপথ নিতে হবে।
×