ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে ফিলিস্তিনী ও ইসরাইলীদের প্রতি কেরি

উত্তেজনা প্রশমন করুন

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

উত্তেজনা প্রশমন করুন

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি রবিবার ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে আলোচনাকালে পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ইসরাইলী ও ফিলিস্তিনীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করার আহ্বান জানান। তিনি ফিলিস্তিনী সংঘাতের দু’রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেন। খবর গার্ডিয়ান ও এএফপির। পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জন কারবি এক বিবৃতিতে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সবাইকে শান্ত থাকা এবং সহিংসতা, উস্কানিদান এবং উত্তেজনাকর কথাবার্তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক কেরি জর্দান সফরকালে আব্বাসের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। কেরি জর্দানের দক্ষিণাঞ্চলীয় আবাবা বন্দরে বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হন। ইসলামিক স্টেট গ্রুপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাদশা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় মিত্র। বাদশার প্রাসাদ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাদশা প্রথমে ফিলিস্তিনী ও ইসরাইলীদের মধ্যকার শান্তি প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট অচলাবস্থা দূর করতে এবং দু’রাষ্ট্র সমাধানের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সমাজ ও যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আমেরিকান কূটনীতিকরা বলেন, কেরি ও আবদুল্লাহ সিরীয় সঙ্কট নিয়েও আলোচনা করেন। কারবি বলেন, কেরি এক টেকসই দু’রাষ্ট্র সমাধান চাইতে এবং সেই লক্ষ্যে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে ওয়াশিংটনের প্রতিশ্রুতির কথা আব্বাসের কাছে জোর দিয়ে তুলে ধরেন। কারবি বলেন, কেরি ইসরাইলি বসতিস্থাপনের অবৈধতা নিয়ে আমাদের নীতিও পুনব্যক্ত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরাইলী ও ফিলিস্তিনীদের মধ্যে আয়োজিত শান্তি আলোচনা ২০১৪-এর এপ্রিলে ভেঙ্গে পড়ে এবং নতুন সংলাপের সম্ভাবনা ক্রমশ সুদূরপরাহত বলে মনে হয়। ১ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনীদের ছুরিকাঘাত, বন্দুক থেকে গুলি ছোড়া এবং গাড়ি চালিয়ে ধাক্কা দেয়ার মতো হামলায় ২৭ ইসরাইলী, এক আমেরিকান ও এক ইরিত্রীয় নিহত হয়। এএফপির এক হিসাবে এটা যায়। একই সময়ে ইসরাইলী বাহিনীর হাতে ১৭৬ ফিলিস্তিনী নিহত হয়। তাদের বেশিরভাগই হামলা চালাতে গিয়ে মারা যায়, কিন্তু অন্যরা সংঘর্ষ ও বিক্ষোভ দেখানোর সময় নিহত হয়। কোন কোন বিশ্লেষক বলছেন, পশ্চিম তীরে ইসরাইলী দখলদারিত্ব ও ইহুদি বসতি স্থাপন নিয়ে ফিলিস্তিনীদের হতাশা, শান্তি প্রক্রিয়ায় অগ্রগতিরশূন্য সাফল্য এবং তাদের নেতৃত্বের অন্তর্কলহ অসন্তোষ বহ্নিতে ইন্ধন যুগিয়েছে। বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনীরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এক অন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য ফ্রান্সের পেশ করা এক প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়। কিন্তু ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সেই প্রস্তাবকেটি নাকচ করে দেন। কেরি ও আব্বাসের আলোচনায় জেরুজালেমের একটি পবিত্র স্থানে সৃষ্ট উত্তেজনা নিয়েও কথা হয়। এ স্থানটি মুসলিমদের কাছে আল আকসা মসজিদ এবং ইহুদীদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত। ইসরাইল ঐ স্থানটির ধর্মীয় স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে, ফিলিস্তিনীদের এ অভিযোগ কয়েক মাস ধরে চলমান সহিংসতার মাত্রা চড়িয়ে দিয়েছে। ফিলিস্তিনী নেতারা বলছেন, কোন স্বাধীন রাষ্ট্র সৃষ্টির লক্ষ্যে কোন আন্দোলন না থাকায় হতাশা থেকেই অনেক ফিলিস্তিনী হামলায় লিপ্ত হয়েছে। ইসরাইল বলছে, ফিলিস্তিনী নেতারা এবং সামাজিক মিডিয়া ফিলিস্তিনীদের সহিংসতার পথে উস্কে দিচ্ছেন। কেরির সঙ্গে বৈঠককালে আব্বাস ইসরাইল ও ফিলিস্তিনীদের মধ্যকার রাজনৈতিক অচলাবস্থা দূর করতে মার্কিন হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
×