ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে পারছে না

যমুনা ও বড়াল নদীর নাব্য হ্রাস

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

যমুনা ও বড়াল নদীর নাব্য হ্রাস

বাবু ইসলাম, সিরাজগঞ্জ ॥ যমুনা ও বড়াল নদীর পানি দ্রুত কমে যাওয়ায় বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে নাব্য সঙ্কটে কমপক্ষে ৫০টি পণ্যবাহী জাহাজ ডুবোচরে আটকা পড়েছে। বন্দর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে পাবনার বেড়া উপজেলার চরশাফুলা, চরনাকলিয়া, ব্যাটারিরচর, কৈটলা, লতিফপুর এবং মুন্সীখোলা নামক স্থানে বড় আকারের ডুবোচর জেগে উঠেছে। এসব স্থানে পানির গভীরতা না থাকায় পণ্যবাহী জাহাজ সরাসরি বন্দরে ভিড়তে পারছে না। বিশেষ করে সার ও ডিজেলভর্তি জাহাজ আটকা পড়ায় চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে ইরি-বোরো চাষাবাদে বিঘœ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, প্রায় এক মাস ধরে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে সার, ডিজেল ও কয়লাবাহী জাহাজ ভিড়তে পারছে না। অবশ্য ছোট ছোট লাইটারেজ জাহাজ ব্যবহার করে সারসহ বিভিন্ন পণ্য বন্দরে আনা হচ্ছে। শুকনো মৌসুমের শুরু থেকেই এবার যমুনা ও বড়াল নদীর পানি দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। এ কারণে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরের সংলগ্ন এলাকায় বড়াল নদীর চ্যানেলে ১০ থেকে ১২ ফুট গভীরতার স্থলে বর্তমানে ৫ থেকে ৭ ফুট গভীরতায় নেমে এসেছে। এ নাব্য টিকিয়ে রাখার জন্য ড্রেজার দিয়ে ভরাট হওয়া স্থান ও ডুবোচর কাটার কাজ শুরু হলেও তেমন কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। ড্রেজার দিয়ে বালি কেটে অপসারণ করা হলেও ৭ থেকে ৯ ফুট পর্যন্ত গভীরের বেশি কাটতে পারছে না। এ কারণে পণ্যবাহী জাহাজগুলো ওই নৌবন্দরে ভিড়তে পারছে না। নৌবন্দর থেকে প্রায় সোয়া এক কিলোমিটার দূরে আটকা জাহাজগুলো থেকে লাইটারে করে ট্রলারে তুলে পণ্য স্থানান্তর করতে ও ওঠানামায় পণ্যের পরিবহন খরচ বেশি হচ্ছে। বাঘাবাড়ী পোর্টের ইজারাদার আব্দুস সালাম জানান, ওই নৌবন্দরসংলগ্ন এলাকায় তীব্র নাব্য সঙ্কটের কারণে পণ্যবাহী জাহাজ ভিড়তে পারছে না। বন্দর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে চ্যানেলের লতিফপুর, ব্যাটারিরচর ও কৈটলাসহ বিভিন স্থানে কমপক্ষে ৫০ সার, তেল ও পণ্যবাহী জাহাজ আটকে পড়েছে এবং সেখান থেকে ছোট ছোট নৌযান দিয়ে মালামাল খালাস করে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরে নিয়ে আসার কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে যেভাবে জাহাজ থেকে সার খালাস করা হচ্ছে তাতে ভরা মৌসুমে উত্তরঞ্চালের বিভিন্ন জেলায় এই বন্দর থেকে সুষ্ঠুভাবে সার সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বালি অপসারণের জন্য ড্রেজিং অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে বাঘাবাড়ী নৌবন্দরের দায়িত্বে নিয়োজিত বিআইডবিউটিএর এক সহকারী পরিচালক জানান, লতিফপুরের কাছে ডুবোচর অপসারণের কাজ বলছে। এ ড্রেজার মেশিন কাজ করলেও একপাশ দিয়ে অপসারণ হয় অপর পাশ দিয়ে ভরাট হয়ে যায়। এ চ্যানেলের বিভিন্ন স্থানে সার্বক্ষণিক নাব্য ধরে রাখার জন্য আরও একটি অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রেজার মেশিন প্রয়োজন। তবে নৌবন্দর এলাকার চ্যানেলে বিশেষ ব্যবস্থায় সার ও ডিজেল নৌবন্দরে পৌঁছানোর কাজ অব্যাহত থাকায় উত্তরাঞ্চলে ইরি-বোরো চাষাবাদে বিঘœ ঘটার আশঙ্কা নেই।
×