ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অতিষ্ঠ গাড়িচালক

মোকামতলা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মোকামতলা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ উত্তরাঞ্চলের জাতীয় মহাসড়কের জংশন বগুড়ার মোকামতলায় চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে গাড়ি চালক ও সাধারণ মানুষ। যানবাহনের চালক হেল্পাররা বুঝতে পারে না এই লাঠি হাতে বুক উঁচিয়ে মোকামতলার জংশনের প্রতিটি পয়েন্টে অবস্থান নেয়া চাঁদাবাজরা কে? এলাকার লোক তাদের চেনে তবে কিছুই করতে পারে না। কারণ চাঁদাবাজদের গডফাদাররা এতটাই প্রভাবশালী যে পুলিশ আটক করার কয়েক মিনিটের মধ্যে ওপরের ফোনে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের ছেড়ে দেয়া হয়। সাধারণ লোক সাহস করে তাদের ধরে মোকামতলা পুলিশ তদন্তে কেন্দ্রে দিলে পুলিশের ভূমিকা হয় ঠুঁটো জগন্নাথ। এলাকাবাসীর কথা- পুলিশও যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে এই চাঁদা সন্ত্রাসীদের দমাবে কে? বগুড়া জেলা শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার উত্তরে মোকামতলা বন্দর। সংযোগ রুট বা জংশন রুটের পশ্চিমের পথ ধরে জয়পুরহাট, উত্তরের পথ ধরে রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় গামী যানবাহন যাতায়ত করে। পূর্বের পথ ধরে সোনাতলা উপজেলা এলাকায় যেতে হয়। উল্লিখিত জেলা থেকে রাজধানী ঢাকা ও পূর্বাঞ্চলের জেলায় যেতে মোকামতলা বন্দর পার হয়ে বগুড়ার ওপর দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। দিনাজপুরের হিলি থেকে পূর্বাঞ্চলের দিকে যাওয়া যানবাহনকেও মোকামতলা অতিক্রম করতে হয়। মোকামতলা বন্দরে এতকাল পাবলিক কেরিয়ারের (পাবলিক যানবাহন) মাালিক ও শ্রমিক সংগঠনের কর্মী ও চেইন মাস্টাররা নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা তুলতো। কিছুদিন ধরে দেখা যাচ্ছে এর বাইরে এক শ্রেণীর তরুণ যুবক কখনও চাঁদার রশিদ নিয়ে এবং লাঠি উঁচিয়ে যানবাহন থামিয়ে জোর করে চাঁদা আদায় করছে। এই চাঁদাবাজরা সংবাদপত্রের গাড়ি ও জরুরী রোগী পরিবহনের গাড়িকেও সহসা ছাড় দেয় না। চাঁদা দিতেই হবে এ যেন ওই বন্দরে নিয়মে পরিণত করেছে তারা। যে রশিদটি প্রদর্শন করা হয় তাতে লেখা আছে ‘শিবগঞ্জ উপজেলা অটোরিক্সিা-অটোভ্যান মালিক সমিতি’ শিবগঞ্জে খোঁজখবর করে জানা যায় এই নামে কোন সংগঠনই নেই। কখনও এই রশিদের মূলে কখনও কথিত সিরিয়ালের নামে লাঠি তুলে চাঁদা আদায় হচ্ছে। চাঁদা না দিলে হরহামেশাই অশ্লীল ভাষায় গালি ও লাঠি দিয়ে যানবাহনের ওপর আঘাদ করা হয়। শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটি ও অটোসাইকেল ভ্যান চালকদের কখনও মারধর করা হয়। গাড়ির চালকরা সমবেত হয়ে যে প্রতিবাদ করবে তা করে না। কারণ জাতীয় এই মহাসড়কে হাতাহাতি লেগে গেলে উভয় প্রান্তে মুহূতেই শত শত গাড়ি আটকে পড়ে। এই অবস্থায় বেপরোয়া চাঁদাবাজদের দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত কেটে পড়ে। চাঁদাবাজরা মহাসড়কে এই জংশন পয়েন্টকে ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করছে। সূত্র জানায় (এবং সরেজমিন দেখা গেছে) কথিত ওই সমিতির নামে প্রতিটি পিকআপ ভ্যান ও ট্রাক্টর থেকে ৫০ টাকা করে, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত ভটভটি থেকে ২০ টাকা করে, রিক্সাভ্যান থেকে ১৫ টাকা করে চাঁদা তোলা হচ্ছে। প্রাইভেট যানবাহনকেও চাঁদা দিতেই হয়। বড় বাস ও মিনিবাসও বাদ যায় না। তবে এই ক্ষেত্রে তারা (বড় ও মিনি বাসের চালক কন্ডাক্টর) মোটর শ্রমিক নেতাদের চেনা থাকায় চাঁদা চাইতে পারে না। চাঁদা চাওয়ার সময় মোবাইল ফোনে নেতাদের জানানো হলে ওই চামচারা পালায়। দ্রুত ফিরে এসে ফের যথারীতি চাঁদাবাজি শুরু করে দেয়। এই বিষয়ে মোকামতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তিনি প্রতিহত করার চেষ্টা করে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। কোন কাজ হচ্ছে না। শিবগঞ্জ থানার ওসি বলেন তিনি বিষয়টি জানেনই না।
×