ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি বুধবার

প্রকাশিত: ০৫:১০, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশ-ভারত মুখোমুখি বুধবার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করার ঐতিহাসিক দিন ছিল রবিবার। দিনটি ২১ ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের এই দিনেই বাঙালীর রক্ত রাজপথে ঝরেছিল। এদিন প্রাণ হারানো সেসব ভাষা শহীদদের গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানালেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যরা। এশিয়া কাপকে সামনে রেখে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শুরুর আগে সালাম-রফিক-বরকতদের স্মরণে মিরপুর বাংলা স্কুলে চলে যান মাশরাফিবাহিনী। এরপর স্কুলের শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন মাশরাফি-মুশফিক-সৌম্যরা। মাঝখানে আর দুইদিন বাকি। আজ ও মঙ্গলবার। এরপরই বুধবার থেকে বাংলাদেশের এশিয়া কাপ মিশন শুরু হয়ে যাবে। সেইদিন এশিয়া কাপও শুরু হবে। যেটিকে ধরা হচ্ছে, এশিয়া কাপের ১৩তম আসর। তবে টি২০ ফরমেটে প্রথমবার এশিয়া কাপ আয়োজিত হবে। তাই সেটিকে এশিয়া কাপ টি২০’র প্রথম আসরই বলা যায়। বাংলাদেশে দুইদিন পর শুরু হওয়া এ টি২০ ফরমেটের প্রথম এশিয়া কাপের উদ্বোধনী দিনেই ভারতের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। যে ভারতের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত কোন টি২০ ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচই টি২০ বিশ্বকাপে খেলে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে নটিংহ্যামে একটি ও ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে মিরপুরে একটি ম্যাচ খেলে। প্রথম ম্যাচটিতে ২৫ রানে ও দ্বিতীয় ম্যাচটিতে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। তবে গত বছর জুনে যে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ ও ভারত, তাতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে বাংলাদেশই। এ সিরিজ জয় থেকে যে আত্মবিশ্বাস পুঁজি হয়েছে, সেটি বুধবার কাজেও লেগে যেতে পারে। ভারতের বিপক্ষে খেলার পর ২৬ ফেব্রুয়ারি চলতি বাছাইপর্বের সেরা দলের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। যদিও এখনও কোন দল বাছাইপর্ব থেকে চূড়ান্ত পর্বে খেলবে, তা নিশ্চিত হয়নি। আজ দুটি ম্যাচ শেষেই তা নিশ্চিত হয়ে যাবে। বাছাইপর্বের দলের বিপক্ষে খেলে ২৮ ফেব্রুয়ারি বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও এখন পর্যন্ত টি২০তে বাংলাদেশের জয়ের কোন রেকর্ড নেই। চার ম্যাচ খেলে সবকটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে প্রথম টি২০ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কাছে জোহানেসবার্গে ৬৪ রানে হারে বাংলাদেশ। এরপর ধীরে ধীরে হারের ব্যবধান কমতে থাকে। ২০১৩ সালে পাল্লেকেলেতে ১৭ রানে হারে। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে সিরিজের টানা দুই ম্যাচে যথাক্রমে ২ রান ও ৩ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। তবে শেষ দুটি ম্যাচে বাংলাদেশও জেতার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল। ২ রানে হারা ম্যাচে ১৬৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১ বলে ৩ রানের প্রয়োজন থাকে। কিন্তু তা তুলতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০ ওভার খেলে শেষ বেলায় হার হয়। একই অবস্থা হয় ৩ উইকেটে হারা ম্যাচের বেলাতেও। বাংলাদেশের করা ১২০ রান অতিক্রম করতে গিয়েই বিপাকে পড়ে শ্রীলঙ্কা। শেষ বলে গিয়ে জিততে লঙ্কানদের ২ রান লাগে। তা নিয়ে নেয় শ্রীলঙ্কা। জিতে যায়। এবার এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর জন্যই নামবে বাংলাদেশ। এবারের এশিয়া কাপে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ নিজেদের শেষ ম্যাচটি খেলবে ২ মার্চ। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দলটি হচ্ছে পাকিস্তান। এশিয়ার টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে পাকিস্তানকেই শুধু টি২০তে হারানোর যোগ্যতা দেখিয়েছে বাংলাদেশ। সেটি সর্বশেষ গত বছর এপ্রিলেই। দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজের একটি ম্যাচে জিতেছে পাকিস্তান। আরেকটিতে জিতে সিরিজ ড্র করেছে বাংলাদেশ। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে যেমন বাংলাদেশ টি২০ ম্যাচ খেলেছে বেশি। তেমনি হেরেছেও বেশি। ৮ ম্যাচ খেলে ৭টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। তবে এ দলটির বিপক্ষে জয়ও আছে। এখন দেখা যাক, এবারও সেই জয়ের ধারা বজায় থাকে কি না। ১৯৮৪ সাল থেকে এশিয়া কাপে এর আগে ১২ আসর হয়। প্রতি আসর হয় ওয়ানডে ফরমেটে। এবার প্রথমবারের মতো টি২০ ফরমেটে খেলা হচ্ছে। আগের ১২ আসরের মধ্যে ১৯৮৪ সালের এশিয়া কাপ ছাড়া ১১ আসরেই অংশ নেয় বাংলাদেশ। ২০১২ সালে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায় বাংলাদেশ। ফাইনাল খেলে। কিন্তু ২ রানের জন্য হেরে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। রানার্সআপ হয়। এছাড়া প্রতি আসরেই বাংলাদেশের ভরাডুবি হয়। ২০০৪ ও ২০০৮ সালে ৬ দল নিয়ে এশিয়া কাপ হয়। দুই গ্রুপ করে খেলা হয়। এরপর সেরা চার দল নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ড হয়। সেরা দুই দল ফাইনালে খেলে। শুধু এ দুই আসরে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারে বাংলাদেশ। আর কোন আসরেই গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে যেতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার কী করবে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে নেতৃত্ব দিতে যাওয়া মাশরাফির দল? মাশরাফির আশা ভাল খেলা। তবে এটিও স্মরণে রাখতে হবে, টি২০ ক্রিকেটে এখনও শক্তিধর দল হয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ।
×