ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে প্রত্যয়নপত্রও জমা দিতে হবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে

প্রার্থীদের আজকের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে ॥ প্রথম দফা ইউপি নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

প্রার্থীদের আজকের মধ্যে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে ॥ প্রথম দফা ইউপি নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফা প্রার্থীদের আজকের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। আইন অনুযায়ী দলীয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দলের প্রত্যয়ন সংক্রান্ত চিঠিও জমা দিতে হবে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কোন প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হবে না। ইসি জানিয়েছে আগ্রহী প্রার্থীদের অফিস চলাকালেই তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে। শেষ সময়ের পরে আর কারও মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সুযোগ নেই। গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় নির্বাচনের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলার ৭৫২ ইউপি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়। তবে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতায় ১৩ ইউনিয়নের নির্বাচন তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ফলে প্রথম দফায় ৭৩৯ ইউপিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। মনোনয়নপত্র জমা শেষে ২৪ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি বাছাই করা হবে। তবে যাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হবে তারা প্রার্থীরা ফিরে পেতে তিন দিনের মধ্যে আপীল করতে পারবেন। ইতোমধ্যে ইসির পক্ষ থেকে ইউপি নির্বাচনের জন্য আপীল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এদিকে আগ্রহী প্রার্থী ও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ের সুবিধার্থে ইতোমধ্যে প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতার বিষয়টি নির্ধারণ করে মাঠ পর্যায়ে ইসির পক্ষ থেকে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান, সাধারণ ও সংরক্ষিত সদস্য পদে হলফনামা ও টিআইএন দেয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। যা পৌরসভার ক্ষেত্রে ছিল। স্বপদে থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন। তবে সরকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা প্রার্থী হতে চাইলে তাদের পদত্যাগ করতে হবে। এলপিআরে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনের যোগ্য হবেন না। তবে পেনশনভুক্তদের ক্ষেত্রে নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাধা নেই। ঠিকাদার ও নিত্যপণ্যের ডিলারদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়েও কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। পরিবারের কোন সদস্যের নিত্যপণ্যের ডিলারশিপ বা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সঙ্গে আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে ওই পরিবারের সদস্যরা প্রার্থী হতে পারবেন না। তবে অন্য ইউনিয়ন পরিষদের ঠিকাদার হলে তিনি যোগ্য বিবেচিত হবেন। এ ছাড়া প্রার্থীদের কেউ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জন্য সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অত্যাবশ্যক পণ্যের (চাল, ডাল, চিনি, আটা, সার, কীটনাশক ইত্যাদি) ডিলার হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। তবে অন্য ইউনিয়নের ডিলার হলে নির্বাচনের যোগ্য হবেন। এদিকে রাজনৈতিক দলগুলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্র্বাচনে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করে প্রার্থীদের কাছে প্রত্যয়নপত্র দেয়ার কাজও সম্পন্ন করেছে। ইসি জানিয়েছে রাজনেতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে একজন মাত্র প্রার্থীর মনোনয়ন দিতে হবে। সে অনুযায়ী আওয়ামী ও বিএনপির পক্ষ থেকে সব ইউনিয়নের জন্য একজন মাত্র প্রার্থী বাছাই করে চিঠি দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রত্যয়ন করা হয়েছে দলীয় সভানেত্রীর স্বাক্ষরে। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থীর প্রত্যয়ন দেয়া হয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের স্বাক্ষরে। জাতীয় পার্টির প্রার্থীর প্রত্যয়ন দেবেন দলের মহাসচিব। ইসির হিসেব অনুযায়ী ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য এখন পর্যন্ত ২১ রাজনৈতিক দল তাদের প্রার্থীর প্রত্যয়ন দিতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম, পদবি ও স্বাক্ষর ইসিতে জমা দিয়েছে। নির্বাচনে এসব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের অনুকূলে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীক দেয়া হবে নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দকৃত প্রতীক থেকে। এ ছাড়া সদস্য ও সাধারণ সদস্য পদে কমিশনের অনুমোদিত প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। আইন অনুযায়ী এ দুটি পদে নির্বাচন হবে নির্দলীয়ভাবে। ইসি সূত্র মতে ইউপি নির্বাচনে যারা প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাদের অবশ্যই নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ জন্য ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ছয় মাসের জেল বা উভয়দ-েরও বিধান রাখা হয়েছে। ইসি জানায় আচরণবিধি মেনেই প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এেেক্ষত্রে কোন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোন প্রকার মিছিল বা শোডাউন করা যাবে না। কোন প্রার্থী ৫ জনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ বা জমা দিতে পারবেন না। এ বিধান লঙ্ঘন করা হলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইউপি নির্বাচনী আচরণবিধিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে কোন প্রার্থী কর্তৃক রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় অন্য কোন প্রার্থী বা ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা কোন রাজনৈতিক দলের কেউ কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবে না। একইভাবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময়ও অন্য কোন পক্ষ থেকে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। এটা করা হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া নির্বাচনী বিধিমালায় বলা হয়েছে কোন ভোটার প্রার্থীর প্রস্তাবক বা সমর্থক হিসেবে চেয়ারম্যান অথবা সংরক্ষিত আসনের সদস্য বা সাধারণ আসনের সদস্য পদে নির্বাচনে একটির অধিক মনোনয়নপত্রে তার নাম ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ভোটার একই পদে একাধিক মনোনয়নপত্রে তাহার নাম ব্যবহার করেন তাহলে সেই মনোনয়নপত্র বাতিল করা হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে ৩ মার্চ প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রথম দফায় ২২ মার্চ ভোটগ্রহণ করা হবে।
×