ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মিসরে দুগ্ধপোষ্য শিশুর যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মিসরে দুগ্ধপোষ্য শিশুর যাবজ্জীবন

এখন বয়স মাত্র চার বছর। তাকে দেয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদ-। আরও অদ্ভুত ব্যাপার হলো- শিশুটির বয়স যখন এক বছর, যখন যে মায়ের দুধ খায়, তখন নাকি সে হত্যা করেছিল, যার কারণে তার আজীবন কারাদ- হয়েছে। বিচারের নামে এই তামাশা হয়েছে মিসরে। খবর ওয়েবসাইটের। প্রহসন কাকে বলে- এই বিচারের ফিরিস্তি শুনলে তা স্পষ্ট হবে। যাবজ্জীবন দ- পাওয়া শিশুটির নাম আহমেদ মানসুর কারমি। তার বিরুদ্ধে চারটি হত্যার অভিযোগ, আটটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ, একটি ভাংচুর-লুটপাট-অগ্নিসংযোগের অভিযোগ এবং সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের হুমকি দেয়া নিয়ে একটি অভিযোগ আনা হয়েছে। অবাক করার বিষয় হলো- তখন শিশুটি তার দ্বিতীয় জন্মদিনেও পা দেয়নি। এই মামলার আরও যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি রয়েছে তা শুনলে আকাশ থেকে পড়বেন হয়ত। শিশুটির জন্ম ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। তার বিরুদ্ধে হত্যা, লুটপাট, হুমকির অভিযোগ আনা হয় ২০১৪ সালের গোড়ার দিককার ঘটনার ওপর। গণতান্ত্রিক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার প্রতিবাদে মুসলিম ব্রাদারহুড তুমুল বিক্ষোভ করছিল। সেই সময় গড়পড়তা মামলা দেয়া হয় বিক্ষোভকারীদের নামে। এমন একটি গণমামলায় ঢুকিয়ে দেয়া হয় আহমেদ মানসুর কারমির নাম। তখন সে দুধের শিশু। হাস্যকর ব্যাপার হলো, মামলার এজাহারে কারমির নাম দেখে আদালতে তার জন্মসনদ পেশ করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে মামলা চলে যায় সামরিক আদালতে। সামরিক আদালত গেল মঙ্গলবার মামলার রায় দেয়। এ সময় আদালতে হাজির ছিল না কারমি। রায়ে তার আজীবন কারাদ- হয়। এটি ছিল সামরিক আদালতের গণবিচারের গণরায়। কারমির সঙ্গে আরও ১১৪ জনের যাবজ্জীবন দ- হয়। কিন্তু বিচারক কি এসব আসামির বয়স জেনে রায় দিয়েছেন- না কি তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের সবাইকে একবাক্যে যাবজ্জীবন দিয়েছেন? মানবাধিকারকর্মীরা দাবি করছেন, সামরিক আদালতের বিচারক মামলা না পড়েই আন্দাজে রায় দিয়েছেন। হয়েছেও তাই। যে কারণে একজন দুধের শিশুও বাদ যায়নি। ২০১৩ সালে মিসরের সামরিক বাহিনী মুরসির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গণগ্রেফতার ও গণমামলা দেয়া শুরু হয়। সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যারাই গেছে, তাদের কোন না কোন মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। মিসরে একসঙ্গে ৪০০-৫০০ জনকে প্রাণদ- দেয়া হয়েছে। শত শত মানুষকে কারাদ- দেয়া হয়েছে। মুরসির কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার পর এ পর্যন্ত ৪০ হাজার বিরোধী সমর্থককে জেলে পাঠানো হয়েছে। এই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। হাস্যকরই বটে। মিশিগানে ৭ জনকে গুলি করে হত্যা যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে পর পর তিনটি ঘটনায় এক বন্দুকধারীর গুলিতে সাতজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও দুজন। শনিবার রাতে কালামাজো শহরে নীল রঙের একটি শেভ্রলে গাড়ি নিয়ে ঘুরে ঘুরে ৪৫ বছর বয়সী ওই শ্বেতাঙ্গ বন্দুকধারী এসব হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমের খবর। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ গ্রেফতার করতে গেলে ওই ব্যক্তি বাধা দেননি। গাড়িতে তার অস্ত্রও পাওয়া গেছে। তাকে গ্রেফতারের পর কালামাজো কাউন্টি পুলিশ এক বিবৃতিতে নাগরিকদের বলেছে, ‘বিপদ কেটে গেছে’। অবশ্য কাউন্টির আন্ডার শেরিফ পল ম্যটিয়াস এসব ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন হত্যাকাণ্ড’ বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের এনবিসি নিউজের খবরে বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যায় কালামাজো কাউন্টির একটি এ্যাপার্টমেন্ট ভবনে প্রথম ঘটনাটি ঘটে। সেখানে এক নারীকে কয়েকটি গুলি করা হয়। গুরুতর আহত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর ঘণ্টা তিনেক পর একটি গাড়ির দোকানে তিন ব্যক্তির ওপর গুলি চালানো হয়, যাদের মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আর তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে ক্র্যাকার ব্যারেল নামের একটি রেস্তরাঁর পার্কিং লটে। সেখানে চারজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আহত একজন পরে হাসপাতালে মারা যান। নিহতদের মধ্যে ১৪ বছর বয়সী একটি কিশোরীও রয়েছে।
×