ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ই-টেন্ডারে যুক্ত হচ্ছে সব সরকারী সংস্থা

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ই-টেন্ডারে যুক্ত হচ্ছে সব সরকারী সংস্থা

নাজনীন আখতার ॥ চলতি বছর সব ধরনের দরপত্র গবর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্টে (ই-জিপি) নেয়া হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পুরো সরকারী কার্যক্রমের একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ই-জিপি বাস্তবায়নে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে রয়েছে। সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ই-জিপি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদনে এ তথ্য দিয়েছে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ। ওই প্রতিবেদনে গত পাঁচ বছরে ই-জিপির সফলতা, কার্যকারিতা ও আগামীর পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়। ‘ইলেক্ট্রনিক টেন্ডার, ঝুট ঝামেলা নেই আর’- এই সেøাগান সামনে রেখে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সকল সংস্থাকে ই-জিপিতে আনার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের ই-জিপি এখন বিশ্ব মনোযোগ আর্কষণ করেছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সঙ্গেই এখন এটা তুলনীয়। ই-টেন্ডারিং, ই-চুক্তি বাস্তবায়ন ও ই-পারফর্ম্যান্স মেজারমেন্ট- এই তিনটি মূল অংশের সমন্বয়ে বাংলাদেশের ই-জিপি সিস্টেম মনোযোগ কেড়েছে। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, জাম্বিয়া ও উগান্ডার প্রতিনিধি দল এ উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সফর করেছে। ই-জিপির সাফল্যের কারণে তৃতীয় রিজিওনাল পাবলিক প্রকিউরমেন্ট কনফারেন্স ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য, দরপত্র দাখিল করা নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে মারামারি, দরপত্র বাক্স ছিনতাইয়ের গতানুগতিক চিত্রের মধ্যে অনলাইনে দরপত্র প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সময়ে। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রিফর্ম প্রজেক্ট-২ এর আওতায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে জাতীয় ই-জিপি পোর্টাল স্থাপন করা হয়। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি ই-জিপি গাইডলাইন জারি করা হয়। ওই বছরের ২ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ই-জিপি পোর্টালের উদ্বোধন করেন। ওই বছরের ২৩ আগস্ট ই-জিপিতে প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হয়। সংসদীয় কমিটিকে দেয়া বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে বলা হয়, ই-টেন্ডারিং এবং ই-ব্যবস্থাপনা একীভূত করে সরকারী ক্রয় প্রক্রিয়াকরণের জন্য ই-জিপি ব্যবস্থা নেয়া হয়। ই-জিপি চালুর ফলে বর্তমানে ঘরে বসে দরপত্র জমা দেয়া যাচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে চারটি সরকারী সংস্থা- স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দফতরে সরকারী ক্রয় পাইলট ভিত্তিতে ই-জিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই চারটি সংস্থা বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনার ৫০ শতাংশ অর্থ ব্যয় করে। ওই চারটি সংস্থা শতভাগ (কার্য ও পণ্যের ক্ষেত্রে ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত) দরপত্র ই-জিপিতে বাস্তবায়ন করছে। ই-জিপি ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ায় এতে যুক্ত হওয়ার জন্য প্রায় সব সরকারী সংস্থা আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং দ্রুত এর প্রসার ঘটছে। সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ, অধিদফতর, পরিদফতর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, সরকারী মালিকানাধীন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিসহ সরকারী অর্থ ব্যবহারকারী মোট এক হাজার ২৩৩টি ক্রয়কারী সংস্থাকে চলতি বছর ই-গবর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্টে (ই-জিপি) অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে ১১১টি ক্রয়কারী সংস্থা এতে যুক্ত রয়েছে।
×