ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

১০ শতাংশ কম দরে একমির শেয়ার পাবেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

প্রকাশিত: ২১:৪০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

১০ শতাংশ কম দরে একমির শেয়ার পাবেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বুক বিল্ডিং পদ্ধতির পুরনো নিয়মে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেডের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত শেয়ারের নিলাম হলেও প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য সংশোধিত পাবলিক ইস্যু বিধিমালা কার্যকর হবে। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিলাম শেষে শেয়ারটির যে কাট অফ প্রাইস দাঁড়িয়েছে, তা থেকে ১০ শতাংশ কম দরে শেয়ার পাবেন অনিবাসী বাংলাদেশী ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত বুধবার কোম্পানির ইস্যু ম্যানেজার আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডকে এ নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিআসেইসি)। একমি ল্যাবরেটরিজের ইস্যু মূল্য নির্ধারণ ও শেয়ারের কোটা পদ্ধতির জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস, ২০১৫ কার্যকর হবে। আইপিওর পুরনো বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ারদর (কাট অফ প্রাইস) নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ টাকা ২০ পয়সা। ইলেকট্রনিক বিডিং প্রক্রিয়ায় ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি এ দর নির্ধারণ করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের এ দরেই শেয়ার কিনতে হবে। আর পুরনো নিয়ম অনুযায়ী সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে এ দরেই শেয়ার বেচার কথা। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সুবিধা দিতে বুক বিল্ডিং পদ্ধতির নতুন নিয়ম অনুযায়ী কাট অফ প্রাইসের ওপর ১০ শতাংশ ছাড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির নির্দেশ দিয়েছে। এ সুবিধা অনিবাসী বাংলাদেশীরাও (এনআরবি) পাবেন। আইপিওতে এখন সাড়ে ৮ টাকা কমে ৭৭ টাকা দরেই শেয়ারটি কিনতে পারবেন। অবশ্য কমিশনের এ নির্দেশের ফলে আইপিও শেয়ার বিক্রি থেকে ১৭ কোটি টাকা কম পাবে একমি। এর আগে সঙ্গত, গত ৩১ ডিসেম্বর বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে শেয়ার দর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনে বিএসইসি। তবে এ নিয়ম কার্যকরের আগে পুরনো নিয়মে পাঁচ কোটি শেয়ার বিক্রির অনুমোদন পায় একমি। এরই ধারাবাহিকতায় ২ ফে¦ব্রুয়ারি বুক বিল্ডিং পদ্ধতির পুরনো নিয়মে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য একমির বরাদ্দকৃত দুই কোটি শেয়ারের জন্য নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। তবে গত বুধবার কোম্পানির শেয়ারের কোটা পদ্ধতিতেও নতুন নিয়ম কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। ফলে কোম্পানির পাঁচ কোটি শেয়ারের মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫০ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড ১০, এনআরবি ১০ ও অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ করতে হবে। সংশোধিত বিধি অনুযায়ী, যোগ্য বিনিয়োগকারী ও মিউচুয়াল ফান্ডকে কাট অফ প্রাইসে শেয়ার কিনতে হবে। আর এনআরবি ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১০ শতাংশ হ্রাসকৃত মূল্যে শেয়ার পাবেন। টানা দুদিনের নিলাম শেষে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দকৃত একমির দুই কোটি শেয়ারের বিপরীতে ১০ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৮০০ শেয়ার ক্রয়ের প্রস্তাব দেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যে ৪৮৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা ২০ পয়সা দরপ্রস্তাব করে। অংশ গ্রহণকারী ১৯৩ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৮ প্রতিষ্ঠানই এ দরপ্রস্তাব করে। বিভিন্ন দরে কেনার প্রস্তাব দেয়া হলেও শুধু সর্বোচ্চ দরে যারা শেয়ার কেনার প্রস্তাব দিয়েছে, তারাই আনুপাতিক হারে বরাদ্দ পাবেন। এক্ষেত্রে নতুন কোটা পদ্ধতি কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য হওয়ায় যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বেশি শেয়ার পাবেন। গত ৭ ডিসেম্বর একমি ল্যাবরেটরিজের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের নির্দেশক মূল্য ৭১ টাকায় অনুমোদন দেয় শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর পর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বুক বিল্ডিংয়ের জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের নিকট শেয়ার বিক্রির পর আইপিওর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য শেয়ার বরাদ্দে প্রসপেক্টাস প্রকাশ করবে কোম্পানি। ২০১৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ৫ টাকা ৬৫ পয়সা ও শেয়ার প্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ৬৬ টাকা ১৬ পয়সা। একমি ল্যাবরেটরিজের ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। আর রেজিস্ট্রার টু দি ইস্যু হিসেবে থাকবে প্রাইম ফিন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত একমি ল্যাবরেটরিজ ফার্মাসিউটিক্যাল, হার্বাল, আয়ুর্বেদিক, ভেটেনারিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরির পাঁচ শতাধিক ওষুধ উৎপাদন করে। ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (আইএসও) সনদ পাওয়া একমি ল্যাবরেটরিজের পণ্য অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রির পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্য আমেরিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও রফতানি হয়।
×