ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইতিহাসের বাজে সময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড!

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ইতিহাসের বাজে সময়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের বাজে সময় অতিবাহিত করছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড! গত কয়েক মৌসুম ধরেই দলটি আছে ব্যর্থতার মধ্যে। চলমান ২০১৫-১৬ মৌসুমেও রেড ডেভিলসদের অবস্থা করুণ। কোন আসরেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না ইংলিশ পরাশক্তিরা। যে কারণে ফুটবল বোদ্ধারা বলতে শুরু করেছেন, ইতিহাসে বাজে সময় অতিবাহিত করছে ম্যানইউ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে বাজে সময় কাটানো ম্যানইউ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ে খেলছে উয়েফা ইউরোপা লীগে। দ্বিতীয় সারির এই লীগেও কাহিল অবস্থা ইউনাইটেডের। নকআউট পর্বের প্রথম ম্যাচেই হারের স্বাদ পেয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার রাতে শেষ ৩২ পর্বের প্রথম লেগের ম্যাচে স্বাগতিক ডেনমার্কের ক্লাব এফসি মিডজিল্যান্ডের কাছেও ২-১ গোলে হেরেছে অতিথি ম্যানইউ। হতাশ করেছে আরেক ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলও। জার্মান ক্লাব অগর্সবার্গের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে দ্য রেডসরা। দলটির কোচ হিসেবে জার্মান ক্লাবের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা তাই সুখের হলো না জার্গেন ক্লপের প্রথম লেগে জিততে না পারলেও ইউরোপা লীগের সেরা ষোলোয় খেলার সুযোগ থাকছে লিভারপুল ও ইউনাইটেডের। আগামী শুক্রবার ফিরতি লেগের ম্যাচে দুটি দলই খেলবে নিজেদের মাঠে। ম্যানইউ, লিভারপুলের মতো হতাশ করেছে ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলিও। স্প্যানিশ ক্লাব ভিয়ারিয়ালের কাছে ১-০ গোলে হেরেছে দিয়াগো ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব। তবে দাপুটে জয় পেয়েছে জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ও স্পেনের ভ্যালেন্সিয়া। ডর্টমুন্ড ২-০ গোলে হারিয়েছে পর্তুগালের এফসি পোর্তোকে। ভ্যালেন্সিয়া গোলবন্যা করেছে অস্ট্রিয়ার ক্লাব র‌্যাপিড ভিয়েনার জালে। স্প্যানিশ ক্লাবটির জয় ৬-০ গোলে। জোড়া গোল করেন শান্টি মিনা। একটি করে গোল করেন পারেজো, নেগ্রেডো, গোমেজ ও রড্রিগো। প্রিমিয়ার লীগে মন্দ সময়ে থাকলেও মিডজিল্যান্ডের কাছে ম্যানইউর হারে অবাক হয়েছে ফুটবল বিশ্ব। এই দলটির নামই ঠিকমতো জানা নেই ফুটবলামোদিদের। গুগল জানাচ্ছে, ক্লাবটির বয়স মাত্র ১৭ বছর। আরও বিস্ময়কর তথ্য, পরশুর আগে দুই মাস তারা মাঠেই নামেনি। তার ওপর সর্বশেষ দশ ম্যাচের নয়টিতেই হেরেছে। সেই ডেনিশ ক্লাবটির কাছেই হেরেছে ম্যানইউ! মিডজিল্যান্ড কেমন মানের ক্লাব সেটা আরও কয়েকটা পরিসংখ্যানে দৃষ্টি দিলে বুঝতে সুবিধা হবে। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় এ নিয়ে নিজেদের মাঠে তৃতীয়বার এক ম্যাচে দুইয়ের বেশি গোল করতে পেরেছে তারা। এর আগে যে দুইটি দলের সঙ্গে গোল করেছিল, ওয়েলশের সেই দুইটি ক্লাব ব্যাঙ্গোর এফসি ও নিউ সেইন্টস এফসির নাম হয়ত অনেকেই শোনেননি। নিউ সেইন্টস তাও পেশাদার ফুটবল খেলে, ওয়েলশের শীর্ষ লীগেও অনেক দিন ধরেই খেলছে। কিন্তু ব্যাঙ্গোর এফসি আধা পেশাদার দল। গ্রুপ পর্বেই ইতালিয়ান ক্লাব নেপোলির কাছে দুই লেগ মিলিয়ে ৯-১ গোলে হার মানে মিডজিল্যান্ড। এমন একটা ক্লাবের কাছেই কি না নাকানিচুবানি খেল ইউরোপের অন্যতম সেরা ও ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। অঘটন যে ঘটতে যাচ্ছে সেটা ম্যাচের আগেই আভাস মিলেছিল। ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে অনুশীলনে হঠাৎ হাঁটুতে চোট পান ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া। শেষ মুহূর্তে নামতে হয় সার্জিও রোমেরোকে। ইউনাইটেডের নিয়মিত একাদশের অনেকেই ছিলেন না, তরুণ ম্যাকনয়্যার-লাভরা সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু তুলনামূলক অভিজ্ঞ ক্যারিক, মাতারাই বেশি হতাশ করেছেন। ম্যাচের বেশির ভাগ সময়ই মধ্যমাঠে ইউনাইটেডকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। মেম্ফিস ডিপাইয়ের ৩৭ মিনিটের গোলে ম্যানইউ ম্যাচে লিড নেয়। কিন্তু ৪৪ ও ৭৭ মিনিটে পিওনে সিসটো ও পল ওনুয়াচোর গোলে স্মরণীয় এক জয় পায় মিডজিল্যান্ড। ম্যানইউ কোচ লুইস ভ্যান গালের পায়ের তলায় মাটি আগেই সরে গেছে। যে কোন মুহূর্তে তল্পিতল্পা গোছাতে হতে পারে তাকে। নিশ্চিতকরেই বলা যায়, আগামী মৌসুমে ম্যানইউর ডাগআউটে থাকছেন না তিনি। এই হারের পর আবারও জোরেশোরে ভ্যান গালের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
×