ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমি কোন ক্রিকেট গ্রেট নই’

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

‘আমি কোন ক্রিকেট গ্রেট নই’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তার উপলব্ধিটা ফেলে দেয়ার মতো নয়। নিজেই বুঝতে পারছেন বিশ্ব ক্রিকেটের যেসব গ্রেট ইতোমধ্যে অবসর নিয়ে ফেলেছেন তাদের চেয়ে বেশ পিছিয়ে ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। কারণ ১০১ টেস্ট খেলার পর যখন অবসরে যাবেন তার ব্যাটিং গড় থাকবে ৩৮ এর সামান্য ওপরে। গড়পড়তায় এমন ব্যাটিং গড় এখন অধিকাংশ দেশের ব্যাটসম্যানদেরই থাকে টেস্ট ক্রিকেটে। এ কারণেই ম্যাককুলাম নিজেই দাবি করলেন তিনি কোন গ্রেট ক্রিকেটার হতে পারেননি। ক্রাইস্টচার্চে আজ রাতে শুরু হওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি খেলেই ক্যারিয়ারের ইতি ঘটবে নিউজিল্যান্ড অধিনায়কের। এর আগে সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন ম্যাককুলাম। ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেকে নিয়ে যে সন্দেহটা প্রকাশ করেছেন ম্যাককুলাম সেটাকে অনেকেই সরল স্বীকারোক্তি হিসেবেই দেখছেন। কারণটা তার ব্যাটিং গড়। কিন্তু শুধু একজন ব্যাটসম্যান কিংবা উইকেটরক্ষক হিসেবে চিন্তা করলে এটাই সঠিক মনে হবে সবার। তবে ক্রিকেটার হিসেবে ম্যাককুলামের পরিচয়টা আসলে ভিন্নমাত্রার। তিনি ব্যাট হাতে নামা মানেই প্রতিপক্ষ শিবিরে একটা বাড়তি দুশ্চিন্তা। ফরমেট যেটাই হোক তার ব্যাটের ধারটাই সবার জন্য বিভীষিকাময়! বিধ্বংসী ব্যাটিং দেখতে দর্শকরা যে প্রত্যাশা নিয়ে থাকেন ম্যাককুলাম ব্যাট হাতে নামলে সেই ভক্তদের মধ্যে অন্য এক উন্মাদনা চলে আসে। ম্যাককুলাম নিজের বিষয়ে বলেন, ‘আমি আসলে কোন গ্রেট ক্রিকেটার হিসেবে চলে যাচ্ছি না। তবে আমি একটা দায়িত্ব্ অবশ্যই পালন করতে পেরেছি দলের হয়ে। কিছু অবদানও রেখেছি সবসময়। আমি ক্রিকেটের স্টাইল অনুসারে না খেলে যেভাবে নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করেছি সেটা আমাকে বেশ শক্ত মানসিকতার ক্রিকেটার হিসেবেই উপস্থাপন করেছে। আমার ক্যারিয়ারজুড়েই এভাবে খেলে গেছি আমি।’ সত্যিই ২০০৪ সালে ঠিক যেভাবে, যে মেজাজে ব্যাটিং করেছেন ম্যাককুলাম সেটাতে কখনও পরিবর্তন দেখা যায়নি। যেকোন পরিস্থিতির মধ্যেই তিনি এমনটাই করে গেছেন। আক্রমণাত্মক মেজাজ থেকেছে অটুট। এ বিষয়ে ম্যাককুলাম বলেন, ‘এটা খেলার অবস্থায় পরিবর্তন ঘটায়। আর সে কারণেই এ ধরনের মানসিকতা আমার খুব পছন্দীয় ছিল। যখন পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল তখনও আমি এমন মানসিকতা ধরে রাখতে পেরেছি।’ ১০০ টেস্ট খেলার জন্য ১২ বছর ধরে ক্রিকেটে থাকতে হয়েছে ৩৪ বছর বয়সী এ কিউই অধিনায়ককে। এ বিষয়ে ম্যাককুলাম বলেন, ‘টানা ১০০ টেস্ট খেলতে সক্ষম হয়েছি- এটার জন্য আমি বেশ গর্বিত। শুধু দীর্ঘ এ সময়ের জন্যই নয়, বরং ইনজুরিকে এড়িয়ে থাকতে পারা এবং সফরের কঠিন সময়গুলোতে ও বিভিন্ন সময়ে পারফর্মেন্সে উত্থান-পতনের পরও যে দলে থেকেছি এটা সত্যিই বিস্ময়কর আমার কাছে। আর এই দীর্ঘ সময় ধরে একাদশে থাকতে পারার বিষয়টা যখন পেছন ফিরে তাকাই সেটা সত্যিই অন্যরকম এক গর্বে বুক ভরিয়ে দেয়।’ ২০১২ সালে মাইক হেসন-ম্যাককুলামের যৌথ দলটি ঘরের মাঠে আর কোন টেস্ট হারেনি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিদায়ী সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ইনিংস ব্যবধানের হার সঙ্গী হয়েছে এবার। কিন্তু টানা এত বছর খেলেছেন সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট ম্যাককুলাম। তিনি বলেন, ‘গত ১৫/২০ টেস্ট আমার জীবনের সবচেয়ে বিস্ময়কর অংশ। নিজ দেশের কাছে অকৃত্রিম ভালবাসা থাকাটা জরুরী একজন ক্রিকেটারের। আমরা দলের সবার মধ্যে এটাই দৃঢ় করার চেষ্টা চালিয়েছি। আর এটাই আমাদের বিশ্ব ক্রিকেটে একটি শক্তিশালী ও সুসংবদ্ধ দলে পরিণত করেছে।’]
×