ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তদন্ত কমিটি নীরব

সাবেক রেল কর্মকর্তাদের সই জাল করে দুর্নীতি

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

সাবেক রেল কর্মকর্তাদের সই জাল করে  দুর্নীতি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে রেলের অবসরপ্রাপ্ত ডিভিশনাল এস্টেট অফিসারদের সই জাল করার ঘটনা ঘটেছে। ওই দফতরের এক কর্মচারী বিভিন্ন স্টেশন এলাকা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অবৈধভাবে ভূমি ব্যবহারের ক্ষতিপূরণ ডিমান্ড নোটিস প্রদান করেছে। পাহাড়তলীর বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার দফতরের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী এ ঘটনা ঘটালেও ডিজির দফতর থেকে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সিআরবির প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার দফতর থেকে এ কর্মচারীর প্রতারণা তদন্তে কমিটি গঠন করে রিপোর্ট চাওয়া হলেও তা এখনও স্থবির হয়ে আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, এ কর্মচারীর প্রতারণা তদন্তে ডিজির দফতর থেকেও একটি কমিটি গঠন করা হলেও তাও কার্যকর হচ্ছে না। এদিকে, এ কর্মচারী পূর্বাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপককে ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখ্য, উর্ধতন কর্মকর্তাদের বেকায়দায় ফেলতে এ ধরনের কর্মকা- ঘটানো হচ্ছে কিনা তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। জানা গেছে, গত বছরের ১ নবেম্বর পাহাড়তলী থানাধীন সরাইপাড়া এলাকার জিয়াউল হকসহ ৯ জন রেল ভূমি ব্যবহারে প্রতারণার শিকার হয়েছেন পাহাড়তলীর বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা দফতরের আবুল হাশেম নামের এক কর্মচারীর কারণে। এ কর্মচারী ও দফতরে কর্মরত থাকাকালে সময়ে প্রাক্তন ডিভিশনাল এস্টেট অফিসারের সই জাল করে ব্যাকডেটে ক্ষতিপূরণ ডিমান্ড নোটিস ইস্যু করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এদিকে, এস্টেট বিভাগের বিধি বিধান লঙ্ঘন করে সাধারণ মানুষকে হয়রানির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম এমপি, রেলের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, দুর্নীতি দমন বিভাগের মহাপরিচালক, পূর্বাঞ্চলীয় মহাব্যবস্থাপক মকবুল হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী (পূর্ব), প্রধান বিদ্যুত প্রকৌশলী, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী/ব্রিজ, বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক এবং চট্টগ্রামের আঞ্চলিক দুর্নীতি দমন বিভাগের পরিচালক বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে বিচার দাবি করে। কিন্তু এ ঘটনায় প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার দফতর থেকে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিতে বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার বরাবর দ্রুত তদন্তের নির্দেশনা দিয়ে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চিঠি পাঠানো হয়েছে প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার দফতর থেকে। গত বছরের ২৯ নবেম্বর কর্মচারী আবুল হাশেম অবসরে গেলেও পাহাড়তলীর ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার দফতরে এখনও নানাভাবে প্রতারণার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে, ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকার পূর্ব নাসিরাবাদ মৌজায় এ কর্মচারীর তত্ত্বাবধানে প্রায় শূন্য দশমিক ১৫ একর জলাভূমির আশপাশ এলাকায় বস্তিঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল মালেক ভুঁইয়া এ বিষয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনকি এ ভূমি ওই শিক্ষকের আবাস গৃহ সংলগ্ন হওয়ায় ইজারা গ্রহণের মাধ্যমে মৎস্য লাইসেন্স পাওয়ার আবেদনও জানিয়েছে। কিন্তু এ বিষয়েও বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার দফতর থেকে কোনপ্রকার পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।
×