ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পাঠাগার থেকে ভাষা আন্দোলন

প্রকাশিত: ০৪:১০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পাঠাগার থেকে ভাষা আন্দোলন

আমাদের গর্বের ভাষা আন্দোলনে লাইব্রেরি-গুলোর ভূমিকা কম ছিল না। একটা সময় প্রতিটি জেলা শহরে এবং তৎকালীন মহকুমা শহরের ছোট্ট পাঠাগারগুলোতে পাঠকরা সমবেত হয়ে খোঁজখবর করতেন। ওই সময়ে পাবলিক কল অফিসের এনালগ টেলিফোন এবং টেলিগ্রামে জরুরী খবর আদান-প্রদান হতো। খুবই বেশি জরুরী হলে রেলওয়ে স্টেশনের কন্ট্রোল রুমের টেলিফোনের অপেক্ষায় থেকে খবর জানা যেত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জেলা ও মহকুমা শহরের লাইব্রেরির পাঠকরা পাঠ শেষে ঢুঁ দিতেন রেলওয়ে স্টেশন ও টেলিগ্রাম অফিসে। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশ যখন উত্তাল, পাকিস্তানী বর্বর শাসকরা যখন আন্দোলন দমাতে মরিয়া, তখন বগুড়ার আন্দোলনকারীর অনেকেই শহরের উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরি বেছে নিয়েছিলেন আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে। ওই সময় উডবার্ন পাবলিক লাইব্রেরির তরুণ সহকারী গ্রন্থাগারিক (পরে গ্রন্থাগারিক) ছিলেন নুরুল হোসেন মোল্লা। তিনি সমন্বয় করতেন। আন্দোলনের অন্যতম নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে মোখলেছুর রহমান, সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মজির উদ্দিন আহমেদ, কৃষক নেতা আব্দুল আজিজ কবিরাজ, রাজনীতিক মোশাররফ হোসেন ম-ল, শেখ হারুনুর রশিদ, আব্দুল মতিন, জসিম উদ্দিন ম-ল, ছাত্রনেতা আব্দুস শহীদ পালাক্রমে উডবার্ন লাইব্রেরিতে সমবেত হয়ে আন্দোলনের রূপরেখা নির্ণয় করতেন। বগুড়ার গাজীউল হক ঢাকা থেকে টেলিগ্রামে ও টেলিফোনে মেসেজ পাঠাতেন নূরুল হোসেন মোল্লার কাছে। তিনি লাইব্রেরির পাঠকদের মধ্যে আন্দোলনের কর্মসূচী বলে দিতেন। যোগাযোগ রাখতেন ঢাকার সঙ্গে। ভাষা আন্দোলনের সময় বগুড়া আযীযুল হক কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। সরাসরি তার প্রেরণা আন্দোলনের গতিকে আরও তীব্র করে। একটা সময় শিক্ষিত পরিবারের প্রতিটি বাড়িতেই আলমারিকে বুক শেলফ বানিয়ে ও কাঠের বাক্সের ভেতর বইপুস্তক রেখে হোম লাইব্রেরি গড়ে তোলা হয়েছে। Ñসমুদ্র হক, বগুড়া থেকে
×