ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

প্রকাশিত: ০৪:০৮, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন

আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে চা পানের দাওয়াতে উপস্থিত হয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং কংগ্রেস দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, আমি অবাক ও পাশাপাশি মহাআনন্দিত হলাম। আনন্দিত হলাম এজন্যেই যে, প্রকৃত গণতন্ত্র কাকে বলে সেটা বেশ ভাল করেই আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে তারা দেখিয়ে দিয়েছেন। শুধু ভারতেই নয় পৃথিবীর সব চাইতে শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকাসহ বহু গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের নজির আছে। যে কোন জাতীয় ইস্যুতে জাতীয় সঙ্কটে, জাতীয় নিরাপত্তার কারণে সরকারী দল ও বিরোধী দল, শীর্ষ পর্যায়ের নেতা-নেত্রীরা যে কোন স্থানে যে কোন মুহূর্তে এক কক্ষে বসে আলোচনা, সলাপরামর্শ এবং সিদ্ধান্ত ঐকমত্যের ভিত্তিতে নিয়ে থাকেন। যা দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে। আমাদের নেতা-নেত্রীদের কাছে অনুরোধ আপনারা দ্বন্দ্ব-সংঘাতের রাজনীতি ছাড়ুন। জাতীয় স্বার্থে সঙ্কটকালে এক কক্ষে বসে ঐকমত্যের মাধ্যমে নীতিনির্ধারণ করুন। মোদি, সোনিয়া ও মনমোহনকে লক্ষ করুন এবং একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। কাজী নুরুল আমিন শ্রীনগর, মুন্সীগঞ্জ বারইয়ারহাটে দরকার সাব-পোস্ট অফিস দেশের প্রথম শ্রেণীর পৌরসভাগুলোর অন্যতম বারইয়ারহাট পৌরসভা। মীরসরাই উপজেলার দুটি পৌরসভার একটি। মীরসরাই সদরকে ডিঙ্গিয়ে বারইয়ারহাট প্রথমে পৌরসভায় উন্নীত হতে পেরেছে অনেকগুলো কারণে। যেমনÑ এটি মীরসরাইবাসীর সার্বক্ষণিক মিলনমেলা হিসেবে বিবেচিত, এখানে স্কুল-কলেজ, ব্যাংক-বীমা, সরকারী-বেসরকারী নানা অফিস এবং কর্পোরেট অফিস রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অন্যতম ব্যস্ততম স্থানও এটি। একটি প্রথম শ্রেণীর পৌরসভায় ডাকঘর নেইÑ এ কথা কি বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে? বারইয়ারহাটের প্রতিবেশী করেরহাট এবং জোরারগঞ্জ সাব-পোস্ট অফিস নিয়েই প্রতিষ্ঠিত। আর বারইয়ারহাট সার্বিকভাবেই আরও বেশি উপযোগী হওয়ার পরও সাব-পোস্ট অফিসের দাবি কোন এক অজানা কারণে উপেক্ষিত হয়ে আছে ডাক বিভাগের কাছে। এখানে একটি শাখা অফিস আছে, তবে তাও বারইয়ারহাটের নামে নয়, নামকরণ করা আছে ‘হিঙ্গুলী’ নামে। অর্থাৎ বিদ্যমান থাকার পরও এটা বারইয়ারহাটের বলার অবকাশ থাকছে না। গণমাধ্যমে এ নিয়ে বার বার লেখালেখি হলে ডাক বিভাগকে দায়সারা জবাব দিতে দেখা যায়। সর্বশেষ তারা বলেছিলÑ ‘বারইয়ারহাটে সাব-পোস্ট অফিস স্থাপনের যৌক্তিকতাকে কোনভাবেই অবজ্ঞা করা হচ্ছে না। তবে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লেগে যাচ্ছে...।’ এ বক্তব্যের জবাবে চমৎকার একটা সুযোগ আসে, একটি সূত্রে জানা যায়Ñ ‘বারইয়ারহাট ডিগ্রী কলেজ ডাকঘর’ নামকরণের সহজশর্তে কলেজ কর্তৃপক্ষ ডাকঘর স্থাপনে প্রয়োজনীয় জায়গার যোগান দিতে প্রস্তুত...। এ কথাও সংবাদপত্রে বেশ কয়েকবার লেখা হয়েছে। দেশের রাজস্ব আয়ের অন্যতম এ বিভাগটিকে সফল ও সার্থক করে তোলার জন্যই বারইয়ারহাটে সাব-পোস্ট অফিস স্থাপন জরুরী। মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ বারইয়ারহাট, চট্টগ্রাম আলোর আঁধার বই বইপড়া বা না পড়া একান্তই একজন মানুষের ব্যক্তিগত অভ্যাসের ব্যাপার। ছেলেবেলা থেকে যদি জানার প্রতি অদম্য আগ্রহ না থাকে তবে হয়তো বড় হয়ে বইপড়ার অভ্যাস থাকে না বা থাকতে পারে না বলেই আমি মনে করি। বইপড়া তথা সাহিত্য পাঠ মানুষের মনের অন্দর খুলে দেয়। বই মানুষের মনের খোরাক যোগায়। বইপড়া নিছক আনন্দদায়ক ব্যাপারই নয়, নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বই পড়লে চিন্তা-চেতনায় এবং মন-মানসিকতায়ও অনেকের চেয়ে প্রাগ্রসর থাকা যায়। আমি মনে করি কেবল সাহিত্যবিষয়ক বই-ই শাণিত করে তোলে মানুষের বোধ, চিন্তা-চেতনা ও মন-মানসিকতাকেও। বই পড়লে মানুষের মনের ক্ষুদ্রতা, নিচুতা ও হীনতা দূরীভূত হয়। বই মানুষের চিন্তার গভীরতাকে প্রসারিত করে, মানুষকে ভাবায়, হাসায় ও কাঁদায়। বই মানুষের দর্শন ও বিশ্বাসকে নির্দিষ্ট ও সুদৃঢ় করে। বই মানুষকে চিন্তা, চেতনা, মননে, বোধে ও মানসিকতায় প্রাগ্রসর হয়ে গড়ে ওঠার পথ বিস্তৃত করে তোলে। তাই বই হয়ে ওঠে প্রতিটি মানুষের কাছে আপনজন থেকেও প্রিয় যদি সে বই হয়ে থাকে সাহিত্যের রূপ, রস ও গন্ধে অতুলনীয়! সে রকম বই পড়লে সাহিত্যের রূপ, রস ও গন্ধে নিজেকে আপ্লুত করা যায় আর বই না পড়লে নিজকে আপ্লুত করা যায় না। বই মানুষের মনের আয়নাস্বরূপ। আয়নায় যেমন নিজকে প্রতিবিম্ব হিসেবে দেখা যায় তেমনি একটি মনের মতো বইও মানুষের মনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার প্রতিবিম্ব হয়ে ওঠতে পারে। কারণ মানুষ চিন্তাশীল আর বই হলো মানুষের মনের চিন্তার খোরাকদাতা। তাই বইয়ের কাছে মানুষ বারবার হাত পাততে বাধ্য হয়। জ্ঞান বা জ্ঞান প্রাপ্তির জন্য মানুষ তাই মানসিকভাবে ঋণী থাকতে বাধ্য থাকে বইয়ের কাছে। তাই বইয়ের অবস্থান থাকে মানুষের মনের কাছাকাছি আর মানুষের মনের অবস্থানও থাকে বইয়ের কাছাকাছি। তাই অবশ্যই বলা যায় বই আর মানুষের মন একে অপরের পরিপূরক। একের স্পর্শে অন্যে ধন্য হয়ে ওঠে। হাছান তৌফিক পারভেজ মধ্য মণিপুর, ঢাকা পাখি সব করে রব পাখপাখালির দেশ বাংলাদেশ। গানের দেশ পাখির দেশ বাংলাদেশ। বিচিত্র সব পাখির কলরবে মুখরিত হয় গ্রামবাংলা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এবং বনবাদাড় উচ্ছেদের ফলে ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে পাখির অনেক প্রজাতি। এর পরেও পাখির কলতানে মুখরিত হয় এ দেশ। পাখির কিচিরমিচির শব্দে এখনও আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। কবির কথা অনুরণিত হয়- পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল। রাতের প্রহরে প্রহরে ডেকে ওঠে অনেক পাখি। পাখিদের ভিড়ে রয়েছে গানের পাখি, শিকারি পাখি ইত্যাদি। টিয়া, ময়না, বক, চিল, কাক, চড়ুই, ফিঙে, ঘুঘু, কাঠঠোকরা, ডাহুক, শকুনসহ অনেক প্রজাতির পাখির কলতানে মুখরিত হতো গ্রামবাংলা। সময়ের স্রোতে অনেক প্রজাতির পাখির অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। যেমন- প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত শকুনের পাল তো দেখাই যায় না। গ্রামের কামরাঙা গাছটিতে এখন আর আগের মতো সবুজ রঙের টিয়ার দোল খাওয়ার দৃশ্য নেই বললেই চলে। বর্ষায় আমন ক্ষেতে সবুজ ধানের ডগায় লুকিয়ে থেকে ডাহুক পাখির আগের সেই কলরব কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। কাকাতুয়া, সারস পাখির অস্তিত্ব আগের মতো নেই। সুনীল গগনে চিলের চক্রাকারে উড়ে যাওয়ার দৃশ্য নেই বললেই চলে। শ্বেতশুভ্র বকের সারিও আগের মতো মেলে না। এর পরেও পাখির দেশ বাংলাদেশ। পাখি বাংলা প্রকৃতির এক মোহনীয় অলঙ্কার। সব প্রতিকূলতার মধ্যেও টিকে আছে অনেক জাতের পাখি। তালগাছে কারিগর পাখি বাবুই এখনও নিপুণভাবে তার বাসা বাঁধে। শীত মৌসুমে সাইবেরিয়াসহ শীতপ্রধান দেশ থেকে একটু ওম পাওয়ার জন্য হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আমাদের দেশে আসে। তাদের মিলনে বাংলার প্রকৃতি সেজে ওঠে এক মোহনীয় সাজে। বাংলাদেশের বড় বড় হাওড়-বাঁওড় যেমন টাঙ্গুয়ার হাওড়, বাইক্কা বিল ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে শীতে এরা আশ্রয় নেয়। এসব পাখির জলকেলি, ডুবসাঁতার ও চক্রাকারে ওড়াউড়ির দৃশ্য কার না মন কাড়ে। কিন্তু মাঝেমধ্যে শিকারিদের শিকারে পরিণত হয় অনেক প্রজাতির পরিযায়ী পাখি। কিন্তু এমনটি হওয়ার কথা নয়। পাখি প্রকৃতির অলঙ্কারÑ এ অলঙ্কারকে খোয়ানো উচিত নয়। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতেই পাখির ভূমিকা অনন্য। পাখি শিকার নয়। পাখির প্রতি আমাদের যতœবান হওয়া উচিত। পাখির আবাস নষ্ট করা নয়, পাখির জন্য নতুন নতুন আবাস তৈরি করতে হবে। বাঁচিয়ে রাখতে হবে বাংলার অহঙ্কার, বাংলার গৌরব, প্রকৃতির অলঙ্কার পক্ষীকুলকে। শ্যামল চৌধুরী মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা
×