ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক নৈরাজ্যের অবসানে...

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ ট্রাফিক আইন

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

সমাজ ভাবনা ॥ এবারের বিষয় ॥ ট্রাফিক আইন

আশাফা সেলিম ট্রাফিক আইন প্রসঙ্গ উঠলে চোখের সামনে ভেসে ওঠে কিছু চিরচেনা দৃশ্য (যার সবই ট্রাফিক আইন না মানাকে নির্দেশ করে)। এ প্রসঙ্গে সবার আগেই আসে ১. শহর-নগরের ফুটপাথগুলোর দৃশ্য: ফুটপাথের ওপর সাজানো দোকান ও মালপত্রের ভিড় ঠেলে হাঁটতে ব্যর্থ হয়ে পথচারীরা অসহায়ের মতো রাস্তা দিয়েই হাঁটছেন (এমনকি ফুটপাথ থেকে নেমে, রাস্তার কিনার দিয়েও হাঁটার সুযোগ কম; কারণ সেখানেও দোকানপাট এবং হকারদের ভিড়) এসব দৃশ্য আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক। ২. যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং, গাড়ি রেখে চালক উধাও (কখনও কখনও রাস্তা থেকে ট্রাফিক উধাও)। ৩. বিকট শব্দে হর্ন বাজানো এবং নিজে আগে যাবার মানসিকতা। ৩. বাসচালক, অটোরিক্সা ও রিক্সাচালকরা রাস্তার মাঝখানেই যখন-তখন যেখানে-সেখানে থেমে যাত্রী ওঠা-নামা করান। ৪. পথচারীরা প্রচ- ভিড়ের মধ্যেও অনাকাক্সিক্ষতভাবে রাস্তার মাঝখান দিয়ে পারাপার করছেন। ৫. ওভারব্রিজ/ফুটওভার/ফ্লাইওভার ব্যবহার না করা। ৬. মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে মোটরসাইকেল চালানো কিংবা হেঁটে রাস্তা পার হওয়া। ৭. হেলমেট ব্যবহার না করা, ভুল দিক দিয়ে (রং সাইডে) চালানো, এবং মোটরবাইকে তিন/চারজন চড়া। ৮. রাত ১০টার অনেক আগেই মালবোঝাই বড় ট্রাকগুলো শহরের জনবহুল রাস্তায় প্রবেশ করা। ৯. একদিকে সাইনবোর্ড (কিংবা অন্য কিছু) দেখতে দেখতে আরেক দিকে পথচারী চলাচল। ১০. ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো ও বেপরোয়াভাবে/প্রতিযোগিতামূলকভাবে ওভারটেকিং। ১১. রাস্তায় কলার কিংবা অন্য ফলের খোসা, আবর্জনা/পানি ইত্যাদি ফেলা। বর্ণিত অভ্যাসগুলো ছাড়া আরও নানা ধরনের ট্রাফিক আইন না মানার অভ্যাসের কারণে শহরে চলাচলকারী সবাই কমবেশি অসুবিধার শিকার হন। এসব কারণে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা, অসহনীয় জ্যাম, বাড়ছে মৃত্যু। কিন্তু, কী করে এই সামাজিক দুর্যোগের হাত থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি তাই নিয়ে এখনই ভাবতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। সবার আগে ভাবতে হবে সরকারকে; এসব বন্ধে হতে হবে আরও কঠোর। সরকারের পক্ষ থেকে রেডিও-টেলিভিশনসহ সব ধরনের প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া ব্যবহার করে, পোস্টারিং করে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে সবার আগে এদেশের সবাইকে ট্রাফিক আইন জানাতে হবে। এ বিষয়ে সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন করতে হবে। প্রচলিত ট্রাফিক আইনের যথাযথ প্রয়োগ; প্রয়োজনে আরো যুগোপযোগী নতুন নতুন আইন তৈরি করে সেসবের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইন ভঙ্গের অপরাধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের সদিচ্ছা। অর্থাৎ সরকারকে এ বিষয়ে আরও আন্তরিক হতে হবে। সেজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবার আগে আমাদেরকে হতে হবে বিবেকবোধসম্পন্ন ও নাগরিকতাবোধসম্পন্ন। প্রত্যেককে তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে শপথ করতে হবে- আমি আজ থেকে সব ধরনের ট্রাফিক আইন মেনে চলব, অন্যকেও মেনে চলতে সাহায্য ও উদ্বুদ্ধ করব। রংপুর থেকে
×