ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চম হয়ে গেমস শেষ করল বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পঞ্চম হয়ে গেমস শেষ করল বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে বহুল আলোচিত সাউথ এশিয়ান গেমসের (এসএ গেমস) পর্দা নামে। গেমসের সমাপ্তি ঘোষণা করেন ভারতের যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী এবং দ্বাদশ গেমসের সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান সর্বানন্দ সেনওয়াল। ঘোষণার পরপরই আলোর মূর্ছনা। কিছুক্ষণের মধ্যেই গেমসের মশাল বন্ধ। এরপর চোখ ধাঁধানো আতশবাজি। আতশবাজির পর পতাকা হস্তান্তর পর্ব। ইন্দিরা গান্ধী এ্যাথলেটিক্স স্টেডিয়ামের ছোট মঞ্চ। সর্বানন্দ সানওয়াল গেমসের পতাকা ভারত অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম রামচন্দনের হাতে তুলে দেন। তিনি পতাকা নেপাল অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশন সভাপতি জীবন রাম শ্রেষ্ঠকে হস্তান্তর করেন। জীবন রাম নেপালের যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী সত্য নারায়ণ ম-লকে দেয়ার মধ্য গেমসের পতাকা হস্তান্তর পর্ব শেষ হয়। গেমসের স্বাগতিক নেপালের জাতীয় সঙ্গীত বাজে। জাতীয় সঙ্গীতের পর নেপালের অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জীবন রাম বলেন, ‘আবার গেমসের স্বাগতিক হতে পেরে আমরা গর্বিত। ১৯৮৪ ও ৯৯ সালে আমরা সফল আয়োজন করেছি। আশা করি আগামী ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের আরেকটি সুন্দর ও আকর্ষণীয় গেমস উপহার দিতে পারব।’ ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে নেপালের দর্শনীয় স্থান দেখানো হয়। এরপর গেমসকে স্বাগত জানিয়ে নেপালের সঙ্গীত ও নৃত্য ও আকর্ষণীয় লেজার শো অনুষ্ঠিত হয় । বাংলাদেশের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদারসহ আট দেশের শীর্ষ পর্যায়ের ক্রীড়ামন্ত্রীরা এ উপস্থিত ছিলেন। কন্টিনজেন্টদের মার্চ পাস্টের পর গেমসের ইতি টানা হয়। গেমের সমাপনী দিনেও বাংলাদেশ কোন সোনার পদক পায়নি। ব্যর্থতা দিয়েই তারা শেষ করেছে ‘দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিক’ খ্যাত সাউথ এশিয়ান গেমসের মিশন। গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতের অসম ও মেঘালয় রাজ্যের গুয়াহাটি এবং শিলংয়ে পর্দা উঠেছিল এই দ্বাদশ ক্রীড়া আসরের। এবারের গেমসের পদক তালিকায় ১৮৮ স্বর্ণসহ ৩০৮ পদক নিয়ে যথারীতি শীর্ষস্থানে আছে ভারত। আর ২৫ স্বর্ণসহ ১৮৬ পদক নিয়ে তার পরের অবস্থানে শ্রীলঙ্কা। ১২ স্বর্ণসহ ১০৬ পদক নিয়ে তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে পাকিস্তান। আসরের শেষদিকে এসে চমক দেখিয়েছে আফগানিস্তান। ৭ স্বর্ণসহ ৩৫ পদক নিয়ে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে চতুর্থ অবস্থানে আছে তারা। নেপাল যদি বাংলাদেশের সমান স্বর্ণপদক পেত নেপালের স্বর্ণ ৩টি), তাহলে তারা পেছনে ফেলতে পারত বাংলাদেশকে। কেননা তাদের রৌপ্যপদক বাংলাদেশের চেয়ে বেশি (নেপালের রুপা ২৩, বাংলাদেশের ১৫)। গত ২০১০ আসরে পদক তালিকায় বাংলাদেশ ছিল তিন নম্বরে, এবার তারা দুই ধাপ পেছনে গিয়ে পঞ্চম স্থানে। আর আগের ৪ স্বর্ণসহ মোট ৭৫ পদক নিয়ে আফগানিস্তানের পরেই আছে বাংলাদেশ। অপরদিকে এবারের আসরে নেপাল ৩ স্বর্ণ জয় করলেও এখনও স্বর্ণবঞ্চিত মালদ্বীপ ও ভুটান। বাংলাদেশের অর্জন ৪ সোনা। আর এই সোনার ৩টিই জিতেছেন নারী ক্রীড়াবিদরা। ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সিমান্ত জেতেন প্রথম স্বর্ণটি। তারপর জলকন্যা মাহফুজা আক্তার শিলা সাঁতারে একাই জেতেন ২ স্বর্ণ। আর পুরুষদের মধ্যে একমাত্র স্বর্ণজয় করেন পিস্তল শূটিংয়ে শাকিল আহমেদ। এসএ গেমসকে সামনে রেখে গত বছরের আগস্ট থেকে বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) উদ্যোগে বিভিন্ন ফেডারেশন তাদের প্রস্তুতিপর্ব শুরু করে। এবারের আসরে আরচারি, এ্যাথলেটিক্স, বক্সিং, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, কাবাডি শূটিং, সুইমিং, ভলিবল, তায়কোয়ানদো, ভারোত্তোলন, কুস্তি, সাইক্লিং, বাস্কেটবল, হ্যান্ডবল, ফুটবল, জুডো, টেনিস, হকি, খো খো, উশু ও স্কোয়াশসহ ২২ ডিসিপ্লিনে অংশ নেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ শুধু ট্রায়াথলন ডিসিপ্লিনে অংশ নেয়নি। এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ২২৩ পুরুষ এবং ১৪৭ মহিলা খেলোয়াড়, ৬০ কোচ, ৩৯ ম্যানেজার এবং অন্য কর্মকর্তাসহ মোট ৪৬৯ সদস্যের দল অংশগ্রহণ করে। তবে দল ভারি হলেও পদকের ঝোলা কিন্তু ততটা ভারি হয়নি! যা বাংলাদেশের জন্য লজ্জার, হতাশার।
×