ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টাকার বিনিময়ে নৌকা পাচ্ছে কুতুবদিয়ার জামায়াত নেতা

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

টাকার বিনিময়ে নৌকা পাচ্ছে কুতুবদিয়ার জামায়াত নেতা

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ আসন্ন ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ও একক প্রার্থী দেয়ার পেছনে ব্যাপক মনোনয়ন বাণিজ্য চলছে। এর মধ্যে বেশি টাকার মিশনে শীর্ষে রয়েছে জামায়াতীরা। কক্সবাজার কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরুং ও লেমশীখালী ইউপিতে নৌকার প্রতীক পেতে চিহ্নিত দুই জামায়াত নেতার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে তাদের নাম পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমন্বয়ে নির্বাচনী বোর্ড করার নির্দেশনা দিয়ে কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এমপি স্বাক্ষরিত চিঠি পাঠালেও তা মানা হয়নি। যুদ্ধাপরাধীর দোসরদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে জামায়াত নেতা সিরাজদ্দৌল্লাহ ও আক্তার হোছাইনের নাম প্রেরণ করা হয়েছে। জানা যায়, কুতুবদিয়া উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা সিরাজদৌল্লাহ আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে জেলা আ’লীগের এক সদস্য ও উপজেলা আ’লীগের সভাপতিকে সঙ্গে নিয়ে মরিয়া হয়ে উঠেন। এ জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচও করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মোটা অঙ্কের টাকায় দু’জামায়াতীর নাম চূড়ান্ত করে কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছে কতিপয় সুবিধাবাদী নেতা। সূত্র জানায়, উত্তর ধুুরুং ইউনিয়নের সমৃদ্ধ জামায়াত পরিবারে সিরাজদৌল্লাহর জন্ম। ছাত্র জীবনে শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বশীল নেতা ছিলেন তিনি। তার বড় ভাই শামশুল আলম বাহাদুর কক্সবাজার শহর জামায়াতের সাবেক আমীর ও জেলা জামায়াতের শীর্ষ নেতা। আরেক বড় ভাই মোঃ সৈয়দ নুর কুতুবদিয়া উপজেলা জামায়াতের অন্যতম সদস্য। তার ছোট ভাই ছৈয়দ মোঃ বশির উল্লাহ বর্তমানে উত্তর ধুুরুং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কুতুবদিয়া তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, সিরাজদৌল্লাহ চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার হাতে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও মারধরের শিকার হয়েছেন আওয়ামী পরিবারের অনেক নেতা-কর্মী। ২০১৩ সালে উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর ছিদ্দিককে প্রকাশ্যে মারধর ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতেও দ্বিধা করেননি তিনি। এছাড়াও আওয়ামী পরিবারের বহু নেতা-কর্মীকে নির্যাতনের পাশাপাশি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন তিনি। এমনকি তার নির্যাতনের কাছ থেকে রেহাই পায়নি ইউপি সদস্যরাও। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকরা তার নির্যাতন থেকে রেহাই পায়নি কখনও। ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় ভিজিএফ, ভিজিডি, দুস্থভাতা, বয়স্কভাতা, বিধবাভাতাসহ যাবতীয় উন্নয়নের বরাদ্দ জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিলিয়ে দেয়া ছাড়াও আর্থিকভাবে সব সুযোগ-সুবিধা দিতেন জামায়াত-বিএনপির নেতা-কর্মীদের। ইউনিয়ন পরিষদের ১০ জন ইউপি সদস্য ২০১৪ সালের ১০ জুন জেলা প্রশাসকের কাছে এ জামায়াত নেতা সিরাজদ্দৌল্লাহর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সূত্র আরও জানায়, ২০১২ সালে ৩ মার্চ জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আজাদ কারামুক্তির পর কুতুবদিয়ায় এলে তার সহযোগী হিসেবে প্রকাশ্যে বিশাল শোডাউনের ব্যবস্থা করেছিলেন জামায়াত নেতা চেয়ারম্যান সিরাজদৌল্লাহ ও লেমশীখালী ইউপি চেয়ারম্যান যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের দেহরক্ষী আকতার হামিদের ভগ্নিপতি জামায়াত নেতা আকতার হোসাইন।
×