ভাষার জন্য আন্দোলন, ভাষার জন্য রক্তপাত ও ভাষা শহীদদের জন্য প্রথম শহীদ মিনার তৈরি হয় রাজশাহীতে।
রাজশাহীতে এখনও যে কয়েকজন ভাষাসৈনিক রয়েছেন, তার মধ্যে একজন আবুল হোসেন। রাজশাহীতে ভাষা আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেছেন নানা কথা। আবুল হোসেন বলেন, তখনও রাজশাহীর মানুষ কলকাতার পত্রপত্রিকার ওপরে নির্ভরশীল ছিল। পত্রিকায় খবর পাওয়া যেত দু’-একদিন পর। তবে ২১ ফেব্রুয়ারির টেলিফোন বার্তাটি বিদ্যুতবেগে রাজশাহী শহরে ছড়িয়ে পড়ে ‘ঢাকায় ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেছে। ছাত্রদের মিছিলে গুলি চালানো হয়েছে, অনেক ছাত্র শহীদ হয়েছে।’ তিনি তখন রাজশাহী কলেজের ছাত্র।
রাজশাহীর আরেক ভাষাসৈনিক সাইদ উদ্দিন আহমদ। তিনি এখন বেঁচে নেই। দেড় বছর আগে তিনি মারা গেছেন। তিনি তাঁর এক প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, ঢাকায় গুলিতে ছাত্র মারা গেছে। সেই খবরটি তখন রাজশাহীর ছাত্র সমাজকে খুবই আবেগতাড়িত করে। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে শুরু হলো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরির কাজ।
কী দিয়ে স্মৃতিস্তম্ভ বানানো হবে? দেয়াল ভাঙ্গা ইট দিয়েই বানানো হবে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ। সিমেন্টর আর ব্যবস্থা করা গেল না। সিমেন্টের বদলে শেষ পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে পানি ঢেলে কাদা তৈরি করে শহীদ মিনার তৈরির কাজ শুরু হয়। শহীদ মিনারের কোন ডিজাইন সম্বন্ধে তখন কারও কোন ধারণা নেই। অদক্ষ হাতে ‘চার থাক’ বিশিষ্ট স্তম্ভটি বানাতে রাত শেষ হয়ে এলো। এর গায়ে লেখা হলো ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’।
Ñমামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী থেকে