ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এসএসসিতে বাড়তি ফি আদায়

৪৪ স্কুল ও মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বোর্ডের চিঠি

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

৪৪ স্কুল ও মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বোর্ডের চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী ৪৪টি স্কুল ও মাদ্রাসার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধমিক শিক্ষা বোর্ড। বৃহস্পতিবার এই চিঠি পাঠান বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র। তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষিত করেছে। তিন ক্যাটাগরিতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে অতিরিক্ত ২৬টি বিদ্যালয় টাকা ফেরত দিয়েছেন এবং ৮০টি বিদ্যালয় দাবি করেছে তারা টাকা নেননি। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি অর্থ ফেরত দিতে নোটিস করে যশোর শিক্ষা বোর্ড। সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের বরাতে ওই তালিকাটি তৈরি করে বোর্ডে পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৪ ফেরুয়ারি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মধাব চন্দ্র রুদ্র স্বাক্ষরিত ওই নোটিসে ৭ ফেরুয়ারির মধ্যে টাকা ফেরত দিয়ে তা লিখিতভাবে বোর্ডকে জানানোর নির্দেশ দেয়া হয়। তবে নির্ধারিত ওই দিনে ২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিয়েছে বলে লিখিতভাবে জানিয়েছিল। পরে আর তিনটি বিদ্যালয় টাকা ফেরত দিয়েছে বলে বোর্ডকে অবহিত করে। যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র জানান, ২ ফেরুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী ১৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নোটিস দেয়া হয়েছিল। নির্ধারিত দিনে ২৬টি প্রতিষ্ঠান টাকা ফেরত দেয়ার কথা লিখিতভাবে জানিয়েছে। আর ৮০টি বিদ্যালয় লিখিতভাবে দাবি করেছে তারা ফরম পূরণের সময় অতিরিক্ত অর্থ নেয়নি। আর ৪৪টি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা আমাদের নির্দেশ মানেনি। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যেহেতু শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশ না মানলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি ও এমপিও বাতিলের কথা বলেছেন তাই ওই সব বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় এ ব্যবস্থা নেবে। যেসব বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তারা হলো খুলনার হরিঢালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, জলমা চক্রখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খড়াবাদা, কাঁঠালতলা কলেজিয়েট স্কুল, কুষ্টিয়ার খোকসা জানিপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়, গোপগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসা, বাঁশগ্রাম ফাজিল মাদ্রাসা, পান্টি বালিকা বিদ্যালয়, পাথরবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া জিলা স্কুল, কুষ্টিয়া হাই স্কুল, ভেড়ামাড়া পাইলট স্কুল, বাহাদুরপুর দাখিল মাদ্রাসা, জাহানারা বালিকা বিদ্যালয়, কূর্শা কেএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ইসলামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তারাসুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নড়াইলের শহীদ এখলাস উদ্দিন বালিকা বিদ্যালয়, গাজিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এবিএনকে বালিকা বিদ্যালয়, ইতœা স্কুল এ্যান্ড কলেজ, বাগেরহাটের এসিলাহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এসপি রাশিদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সন্ন্যাসী বালিকা বিদ্যালয়, দৈবঞ্জহাটি বিশ্বেস্বর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দৈবঞ্জহাটি আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়, মোমিন স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফুলহাতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়,, আমতলী কামিল মাদ্রাসা, ওয়াজেদ মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাংনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরকুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আলহেরা আলিম মাদ্রাসা, আট্টাকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেআলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কেএসএস হামিদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দাড়িয়ালা কাছনা কুশলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শহীদ হেমায়েত উদ্দিন বালিকা বিদ্যালয়, সাতক্ষীরার মুরারিকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ঝিনাইদহের রায়গ্রাম বালিকা বিদ্যালয়। জানা যায়, অভিযুক্ত বিদ্যালয়গুলোর লিখিত জবাব নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে যশোর শিক্ষা বোর্ড, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেই প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে মন্ত্রণালয় থেকে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত অর্থ ফেরত না দেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি, এমপিও অথবা অনুমোদন বাতিল হতে পারে বলে শিক্ষামন্ত্রী সপ্তাহখানেক আগে জানিয়েছিলেন।
×