ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে নেয়া আট কর্মসূচী দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে রূপ নিচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে রূপ নিচ্ছে

এম শাহজাহান ॥ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে নেয়া আট কর্মসূচীকে ব্র্যান্ডিং করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে দারিদ্র্য বিমোচনে দক্ষতা অর্জনে আয়বর্ধক কর্মসূচী হিসেবে নেয়া একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পকে এগিয়ে নেয়া। এই প্রকল্পটি আগামী জুলাই মাসে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক হিসেবে সারাদেশে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। মূলত দেশের দরিদ্র মানুষকে স্বল্পসুদে ঋণ দিয়ে স্বকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এই ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষকে সঞ্চয়ে উৎসাহিত করতে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বিশেষ স্কিম গ্রহণ করবে। এতে করে এনজিওগুলোর ক্ষুদ্র ঋণের যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাবে সাধারণ মানুষ। এই প্রকল্পটি সফল করতে সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আগ্রহে আট কর্মসূচী গ্রহণ করেছে সরকার, যা ‘শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ’ নামে পরিচিত। কর্মসূচীগুলো হচ্ছে- একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, যা আগামী বছরে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নামে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে, এর পরই রয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্প, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচী, নারীর ক্ষমতায়ন, ঘরে ঘরে বিদ্যুত, কমিউনিট ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ এবং সামষ্টিক নিরাপত্তা কর্মসূচী। এই আট কর্মসূচী দ্রুত বাস্তবায়ন ও ব্র্যান্ডিং সংক্রান্ত পর্যালোচনা সভা করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হতে হয়। জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আগ্রহে এই আট কর্মসূচী ব্র্যান্ডিং করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কর্মসূচীগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে ঘোষিত সময়ের মধ্যে রূপকল্প-২১ এর স্বপ্নপূরণ এবং দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটেও এই আট কর্মসূচী সামনে রেখে প্রণয়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর এটি করা গেলে দেশে আর দারিদ্র্য থাকবে না। জানা গেছে, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে শেখ হাসিনার দৃঢ় অঙ্গীকার ও বিভিন্ন গণমুখী উদ্যোগের মধ্যে এই আটটি ক্ষেত্রকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গবর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিদ্যুত বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, অগ্রাধিকার খাত হিসেবে চিহ্নিত এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠিও দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মনে করছে, দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর এবং এসডিজি অর্জনে এসব খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। এ সম্পর্কিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) মূল ভাবনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সর্বজনীন মানব উন্নয়ন চিন্তার ব্যাপক মিল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ভাবনা কার্যকরভাবে উপস্থাপন করে সকল কর্মকা-ে বিভিন্ন স্তরের নাগরিকগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে। এদিকে রূপকল্প-২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের প্রথম মেয়াদেই সরকার প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২১ ও ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে। আর সরকারের ধারাবাহিকতায় এখন ৭ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া ভিশন-২১ সামনে রেখে ইতোমধ্যে সরকার আরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর ওই সময়ে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা, ৫০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি করে শীর্ষ অবস্থানে উঠে আসা, দারিদ্র্য শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৯-১০ এর মধ্যে নিয়ে যাওয়াসহ এসডিজি অর্জনে সাফল্য পাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
×