ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্বাগত জানিয়েছে এফবিসিসিআই

কমানো হলো সকল ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নিবন্ধন ফি

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কমানো হলো সকল ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নিবন্ধন ফি

মশিউর রহমান খান ॥ অবশেষে সব ধরনের ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও নিবন্ধন ফি কমিয়েছে সরকার। এর ফলে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যবসা পরিচালনাকারীরা সরকার নির্ধারিত বর্তমানের হ্রাসকৃত হারে গত বছরের ট্রেড লাইসেন্স ফি ও নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ ও বকেয়া ফি পরিশোধ করতে পারবেন। গত ৩১ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় পূর্বের ধার্যকৃত ফি কমানোর এ সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের এ সিদ্ধান্ত সকল সিটি কর্পোরেশনের কার্যকর করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ফির হার কমানোর সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে ট্রেড লাইসেন্স ফি কমালেও আদর্শ কর তফসিল- ২০১৬ তে হোল্ডিং ট্যাক্স হার ২০১৫ এর ধার্যকৃত ফি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গত বছর জারি করা হারেই আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে। উল্লেখ্য, গত বছরের মার্চে বর্ধিত হারে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ব্যবসা করার জন্য সব ধরনের ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ ও নিবন্ধন ফি বাড়ানো হয়। এর পর থেকেই ফি কমানোর দাবি জানিয়ে আসছিল ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। এ দাবিতে রাজধানীসহ বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স নবায়নও বন্ধ রাখেন অনেক ব্যবসায়ী। এর পরিপ্রক্ষিতে ব্যবসায়ী মহল ও সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ফি কমানো হয়। গত বছরের মার্চে কোম্পানি, ব্যাংক, বীমা থেকে শুরু করে সব ধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়ানোর সময় আদর্শ কর তফসিল ২০১৫ জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহীসহ সব সিটি কর্পোরেশনেই ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়ানো হয়। তবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ফি বড় ব্যবসায়ীদের তুলনায় বেশি বাড়ানো হয়। এরপর থেকেই ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে মাত্রাতিরিক্ত ফি কমানোর জোর দাবি ওঠে। এদিকে সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। তাদের মতে, নতুন ধার্যকৃত ফি দিয়ে গঠন করা আদর্শ কর তফসিল ২০১৬ অনেক বেশি ব্যবসাবান্ধব। সূত্র জানায়, আদর্শ কর তফসিল ২০১৫তে ট্রেড লাইসেন্স ফি অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়। তা নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী, সচিব, মেয়র ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে এফবিসিসিআই কয়েক দফা বৈঠক করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত ফি পুনর্বিবেচনা করতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত কমিটি সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে বিভিন্ন প্রকারের ব্যবসা অনুযায়ী ফি’র যৌক্তিক নতুন হার নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়নে সুপারিশ করে। উক্ত সুপারিশের ভিত্তিতে ট্রেড লাইসেন্স ফি কমানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাজধানীতে কনফেকশনারি বা ফাস্টফুডের দোকান প্রতিষ্ঠায় আগে ট্রেড লাইসেন্স ফি দিতে হতো ৩০০ টাকা। গত বছর মার্চে তা বাড়িয়ে করা হয় যথাক্রমে ২ হাজার ও ৪ হাজার টাকা। ফার্মেসির ক্ষেত্রে এ ফি ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে করা হয় ৭ হাজার টাকা। আবার গাড়ি মেরামতকারী ওয়ার্কশপ বা মিষ্টির দোকানের ক্ষেত্রে ৭৫০ টাকার ট্রেড লাইসেন্স ফি বাড়িয়ে করা হয় ৪ হাজার টাকা। তবে নতুন ধার্যকৃত নিয়মে কনফেকশনারি বা মিষ্টির দোকানের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স ফি পরিশোধ করতে হবে অনেক কম। এক্ষেত্রে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বড় কনফেকশনারির ক্ষেত্রে এ হার ২ হাজার ও ছোট কনফেকশনারির ক্ষেত্রে ১ হাজার টাকা। অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনে আনুপাতিক হারে তা আরও কম। মিষ্টির দোকানের লাইসেন্সের ক্ষেত্রে বড় হলে ১ হাজার ২০০ ও ছোট হলে ১ হাজার টাকা ফি দিতে হবে। ফার্মেসির ট্রেড লাইসেন্স ফি ঢাকা ও চট্টগ্রামে বড় ফার্মেসি ২ হাজার ৫০০ ও ছোট ফার্মেসি ১ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে। অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনে এ হার যথাক্রমে ২ হাজার ও ১ হাজার টাকা।
×