ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আওয়ামী লীগের যৌথসভা

ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা দ্রুত কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা দ্রুত কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য দলের পূর্বসিদ্ধান্ত মোতাবেক তৃণমূল থেকে দ্রুত প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সারাদেশের জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দকে দ্রুত বৈঠক করে প্রার্থী তালিকা বাছাই করে দলের প্যাডে কেন্দ্রে পাঠাতে বলেছে দলটি। তৃণমূল থেকে আসা তালিকা যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড ইউপি নির্বাচনে দলের একক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে। সোমবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সভাপতিম-লীর সদস্য ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিক কেন্দ্রীয় যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে দলের গৃহীত এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। হানিফ বলেন, আমরা প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে দ্রুত বৈঠক করে প্রার্থী বাছাই করে তালিকা দলের প্যাডে পাঠানোর জন্য আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি। ইতোপূর্বে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা দিবেন। আমরা প্রত্যেকটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দকে দ্রুত বৈঠক করে প্রার্থী বাছাই করে দলের প্যাডে পাঠানোর জন্য আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি। তিনি জানান, ইউনিয়ন পরিষদের প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যে সব উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক গত পৌর নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কার্যক্রম করেছে তারা বাছাই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। আর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হবেন কিংবা দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকা- করবেন তাদের বিরুদ্ধেও দলীয় সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমরা আশাবাদী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের কাক্সিক্ষত বিজয় হবে। পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, পৌর নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন তাদের দল থেকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের চূড়ান্ত বহিষ্কার কেন করা হবে না- এ জন্য কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্রোহী প্রার্থীদের পক্ষে দলের যে সমস্ত নেতা অবস্থান নিয়েছিল তাদের তালিকা করতেও সাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাঁরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সে তালিকা কেন্দ্রে জমা দেবে। দলের আগামী কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডেইলী স্টার সম্পাদক দায় এড়াতে পারেন না ॥ সভায় সম্প্রতি এক টেলিভিশন টক শোতে ডেইলী স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বক্তব্য নিয়ে দলীয় ফোরামে এখনও আলোচনা হয়নি জানিয়ে সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, এ ঘটনার আট বছর পর একটি দৈনিকের সম্পাদক এ বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, ‘তাঁরা এটা ভুল করেছেন’। কিন্তু এ ভুলের জন্য দেশবাসীর যে ক্ষতি হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। সারা বিশ্বের কাছে শেখ হাসিনার সম্মান ক্ষুণœœ হয়েছিল ও অপমানিত হতে হয়েছিল। তার দায়ভার কে নেবে? এর দায়ভার এড়ানোর সুযোগ নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এ স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে জাতির কাছে পরিষ্কার হয়েছে যে, ওয়ান ইলেভেনের সময় শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্য ষড়যন্ত্র হয়েছিল। সে কারণেই বিভিন্ন পত্রিকায় ষড়যন্ত্রমূলক সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছিল। এসব মিথ্যা সংবাদের পথ ধরেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে ওই সময় গ্রেফতার করা হয়েছিল। মিথ্যা কাল্পনিক অভিযোগে তিনি ১১ মাস কারাগারে ছিলেন। যার বিরুদ্ধে সারা দেশের মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছিল। হানিফ বলেন, যেহেতু উনি (মাহফুজ আনাম) তাঁর ভুল স্বীকার করেছেন, তাই ওনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং রাজনৈতিকভাবে কি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তা আপনাদের কাছে পরে জানাতে পারব। তবে আমরা মনে করি এমন অনৈতিক কাজ করে কিছু সম্পাদক সাহেব প্রমাণ করেছেন তারা অনেক সময় এ দেশের সরকারের বিরুদ্ধের ষড়যন্ত্রে অংশীদারি ছিলেন। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি করব এ সকল ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের অপর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বীর বাহাদুর, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।
×