ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের সোর্স পরিচয়ে চাঁদা চাইলে থানায় জানানোর পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৭:১৪, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

পুলিশের সোর্স পরিচয়ে চাঁদা চাইলে থানায় জানানোর পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পুলিশের সোর্স পরিচয়ে চাঁদা দাবিকারীদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় বিষয়টি জানানোর পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। অভিযোগ পাওয়া মাত্র পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। কোন থানা বা দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা ব্যবস্থা না নিলে ওইসব থানা বা সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ। শনিবার ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার এ কথা জানান। তিনি পুলিশের সোর্স পরিচয়ে কেউ চাঁদা দাবি করলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবহিত করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ামাত্রই পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। কোন পুলিশ সদস্য বা সংশ্লিষ্ট থানা ব্যবস্থা না নিলে, ওইসব পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট থানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাঁদাবাজির সঙ্গে কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলে, তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পুলিশের সোর্স বা পুলিশ পরিচয়ে বা পুলিশ চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত থাকলে এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স দেখানোর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। সোর্সকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ, পুলিশ তদন্ত করলেও কোন সমস্যা নেই। নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। তদন্তে কোন ত্রুটি থাকবে না। গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাট এলাকার কিংশুক সমবায় সমিতির কাছে বাবুলের চা দোকানে যায় পুলিশের দুই সোর্স দেলোয়ার হোসেন ও আইয়ুব আলীসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য। পুলিশ সদস্যরা বাবুল মাতুব্বরকে টহল গাড়িতে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তিনি দোকানের খুঁটি ধরে বসে পড়েন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ কেরোসিনের স্টোভে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। স্টোভটি ছিটকে বাবুলের গায়ে গিয়ে পড়ে। মারাত্মক দগ্ধ হন বাবুল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মৃত্যু হয় তার। এমন ঘটনায় পুলিশের দায়িত্ব পালন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বৃহস্পতিবারই ডিএমপির তরফ থেকে এবং মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনারের তরফ থেকে ২টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এদিনই টহল ডিউটিতে থাকা শাহআলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিয়াজ উদ্দিন মোল্লা ও মমিনুর রহমান খান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দেবেন্দ্র নাথ ও কনস্টেবল জসিম উদ্দিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে শাহআলী থানার আরেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) শ্রীধাম চন্দ্র হাওলাদারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। শুক্রবার বিকেলে প্রত্যাহার করা হয় শাহআলী থানার ওসি একেএম শাহীন ম-লকে। নিহতের মেয়ে রোখসানা বাদী হয়ে মাদক ব্যবসায়ী মোছা. পারুলী বেগম (৪০), পুলিশের সোর্স দেলোয়ার হোসেন (৩২) ও মোঃ আইয়ুব আলী, মোঃ রবিন (২৫), শঙ্কর (৩০), দুলাল হাওলাদার (৪০) ও পারভীনকে (৩৫) আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পারুলীকে বৃহস্পতিবার আটক করা হয়। এদিকে বুধবার রাতেই আটক করা মামলাটির এজাহারনামীয় তিন নম্বর আসামি আইয়ুব আলীকে আটক করা হয়। পরে আইয়ুব পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যায়। যদিও পুলিশ আইয়ুবকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাহআলী থানা পুলিশ। নিহতের ছেলে রাজুর দাবি, বছর দুয়েক আগে ৯০ কেজি গাঁজাসহ পারুলীকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়েছিল তার পিতা। তারই জেরধরে পারুলী বেগম পিতাকে পুলিশ ও তাদের সোর্স দিয়ে নানাভাবে হেনস্তা করার এক পর্যায়ে ঘটনাটি ঘটে।
×