ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এসএ গেমস মহিলা ফুটবল

আজ শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আজ শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি বাংলাদেশ

রুমেল খান ॥ প্রথম ম্যাচে নেপালের কাছে অপ্রত্যাশিত হারে হিসেব নিকেশ পাল্টে গেছে অনেকটাই। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা দল এখন অনেকটাই ব্যাকফুটে। শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ফাইনালে যেতে হলে এই ম্যাচে জেতা বা ড্রর কোন বিকল্প নেই। তবে হেরে গেলে ফাইনালে যাবার আশা অনেকটাই শেষ হয়ে যাবে গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যাদের। শনিবার বাংলাদেশের মেয়েরা অনুশীলনে দেড়ঘণ্টা ঘাম ঝরায় জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামের আউটার আর্টিফিসিয়াল স্টেডিয়ামে। যদিও বাংলাদেশ দলের খেলা ছিল আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শক্তিশালী-স্বাগতিক ভারতের বিরুদ্ধে। তবে শনিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই খেলার সূচী বদল করে ভারতের পরিবর্তে শ্রীলঙ্কাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। প্রথম ম্যাচে নেপালের কাছে ০-৩ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে জিতলে ছয় বছর আগে হারের প্রতিশোধটা কড়ায়-গ-ায় নিতে পারতো বাংলাদেশ মহিলা দল। পরিসংখ্যান বলে শ্রীলঙ্কা বরাবরই বাংলাদেশের জন্য সমীহ জাগানিয়া প্রতিপক্ষ। গত ২০১০ এসএ গেমসে শ্রীলঙ্কাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। মোট তিন ম্যাচের লড়াইয়ে দুবার জিতেছে বাংলাদেশ। আর একবার শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ করেছে ৫ গোল। আর লঙ্কানদের গোল ১টি। বাংলাদেশ দল এখন আর আগের মতো দুর্বল ও ভঙ্গুর দল নয়। এখন তারা আর যাই হোক, হারার আগেই মানসিকভাবে হেরে বসে না। লড়াই করে। গড়ে তোলে কঠিন প্রতিরোধ। তাদের খেলার মান এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত। আশা জাগিয়েও মহিলা ফুটবল দলের শুরুটা হয় তিক্ত পরাজয় দিয়ে। এসএ গেমস মহিলা ফুটবলে নিজেদের উদ্বোধনী খেলায় তারা নেপালের কাছে হেরে শুরুতেই হোঁচট খায়। গোলরক্ষক সাবিনা খাতুনের ‘শিশুসুলভ’ ভুল, রক্ষণভাগের অমার্জনীয় ব্যর্থতা এবং ফরোয়ার্ডদের উপর্যুপরি গোল প্রচেষ্টা নষ্ট করার খেসারত বাংলাদেশ দেয় হেরে। এই হারের পেছনে ম্যাচের পরিবর্তিত সময়সূচী অনেকটাই দায়ী! আফগানিস্তান না থাকাতে টুর্নামেন্টের ফরমেটেও আসে পরিবর্তন। এবার খেলা হচ্ছে লীগ পদ্ধতিতে (মোট দল ৫টি)। সিঙ্গেল লীগ হওয়ার পর পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল খেলবে ফাইনালে। ফলে সেমিফাইনাল বলে কিছু থাকছে না। উদীয়মান শক্তির বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলতে হঠাৎই সূচীতে পরিবর্তন আনে আয়োজক ভারত। পূর্বের সূচী অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ছিল ৯ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সূচীতে পরিবর্তন হওয়াতে ৫ ফেব্রুয়ারিতেই প্রথম ম্যাচটা খেলতে হয় তাদের। ৯ তারিখের কথা ভেবে বাংলাদেশ দলের ভারত যাওয়ার কথা ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তারিখ এগিয়ে আসাতে বিপাকে পড়ে যায় দল। কেননা ৪ তারিখ ঢাকা থেকে রওনা হয়ে পরেরদিন সকালেই প্রথম ম্যাচটা খেলতে হবে! তাই আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া এবং ভ্রমণক্লান্তি কাটিয়ে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেয়ার সেই সুযোগ পাওয়া সম্ভব নয়। এ সঙ্কট উত্তরণে তৎপর হয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে)। তারা বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) কাছে একটি আবেদনপত্র পাঠায়। সেখানে ৪ তারিখের পরিবর্তে একদিন আগেÑ অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি মহিলা ফুটবল দলকে পাঠানোর জন্য আবেদন করে। সে আবেদনে সাড়া দেয় বিওএ। মহিলা ফুটবল দলের শিলং যাওয়ার জন্য বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করা হয়। অবশ্য একদিন আগে গিয়েও কোন লাভ হয়নি! নতুন সূচী অনুযায়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের কোন খেলা সকালে, কোন খেলা দুপুরে, আবার কোনটা সন্ধ্যায়। একেক সময়ে একেক খেলার সময় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ফুটবলপ্রেমীরা। স্বাগতিক ভারত নিজেদের সুবিধার্থে এবং উদীয়মান বাংলাদেশ দলকে বিপাকে ফেলতেই খেলার তারিখ এবং ম্যাচের এমন উদ্ভট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন ফুটবলপ্রেমীরা। এসএ গেমসের জন্য এই দলটি নিজেদের তৈরি করছে গত নবেম্বর থেকে। এর মাঝেই দলের বেশ কিছু ফুটবলার অংশ নিয়েছিল নেপালে অনুষ্ঠিতব্য এএফসির আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে। এছাড়াও দলটির অনেক সদস্যরেই আছে এএফসি অনুর্ধ-১৬ বাছাই খেলার অভিজ্ঞতা। প্রথম ম্যাচে হেরে হোঁচট খেলেও ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি বাংলাদেশ মহিলা দলের জন্য। এজন্য তাদের বাকি ম্যাচগুলোর সবগুলোতেই জেতার কোন বিকল্প নেই।
×