ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৪৮ বছর ফাইলবন্দী নওগাঁর চিনামাটি প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

৪৮ বছর ফাইলবন্দী নওগাঁর চিনামাটি প্রকল্প

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ দীর্ঘ ৪৮ বছরেও আলোর মুখ দেখল না উত্তরের আরেক সম্ভাবনাময় জেলা নওগাঁর খনিজ সম্পদ চিনামাটি প্রকল্পটি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদাসীনতা আর অবহেলার কারণে প্রকল্পটি কোথায় যে ফাইলবন্দী হয়ে পড়ে রয়েছে, তার কোন হদিসও মিলছে না। ৪৮ বছর আগে নওগাঁ জেলার পতœীতলা উপজেলার আমবাটিতে আবিষ্কৃত এ চিনামাটি প্রকল্পটি আঁতুড় ঘরেই মুখথুবড়ে পড়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান সরকার উত্তরাঞ্চলে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান করতে গিয়ে বর্তমান নওগাঁ জেলার পতœীতলা উপজেলা সদরের ৫ কি.মি উত্তরে পতœীতলা-ধামইরহাট সড়কের পাশে আমবাটি গ্রামের একটি পুকুরের পাশে চিনামাটির এ খনিটি আবিষ্কার করে। সেই খনির মুখে যেখানে জরিপ কাজ চালানো হয়েছিল, সেই স্থানে চারিধারে সিমেন্টের পিলার দিয়ে সেসময়কার জরিপকারীরা চিহ্নিত করে রেখেছিল। ভূতত্ত্ববিদগণ যেখানে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন, সেই স্থান এখনও বাঁধানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পিলারগুলোও বিক্ষিপ্ত অবস্থায় রয়েছে। নেই শুধু প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জোরালো কোন পদক্ষেপ। সমতলভূমির প্রায় ২ হাজার ফুট নিচে উন্নত ও উৎকৃষ্টমানের চিনামাটির আবিষ্কার করায় সেসময় পুরো উত্তরাঞ্চলের মানুষের মাঝে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। সেসময় চিনামাটির খনি আবিষ্কারকদের মধ্যে উৎসাহ আর উদ্দীপনা দেখে সমগ্র নওগাঁ জেলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। কিন্তু অদ্যাবধি ওই চিনামাটির খনি সম্পর্কে সরকারের সুষ্ঠু কোন পদক্ষেপ না থাকায় জেলাবাসীর মধ্যে সৃষ্ট উৎসাহ-উদ্দীপনার আজ বিলুপ্তি ঘটেছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সেসময় জরিপকারী দল কয়লার স্তর বিন্যাস ও মান নির্ণয়ের সময় কয়লার পাশাপাশি চুনা পাথরের মতো ওই চায়না ক্লে বা চিনামাটির সন্ধান পায়। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের সীমাহীন বৈষম্যতার কারণে চিনামাটি প্রকল্পটি ফাইলচাপা দেয়া হয়। সে সময় এলাকাবাসীর দাবি ছিল, ওই খনিজ প্রকল্পের কাঁচামাল দিয়ে চিনামাটি শিল্প গড়ে তোলা, যাতে এলাকার শিক্ষিত বেকারসহ জেলাবাসীর একটা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। সে সময় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য এলাকাবাসী আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান সরকার সেই আন্দোলন স্তিমিত করে দেয়। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও ওই চিনামাটি প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কোন পদক্ষেপ নজরে আসেনি।
×