ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনে টাকা বাড়ানোর পাঁয়তারা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনে টাকা বাড়ানোর পাঁয়তারা

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ আগেও বেড়েছিল দু’ দফা। এখন ফের ব্যয় বাড়ানোর পাঁয়তারা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে। বলা হচ্ছে, প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সমাপ্ত করতেই আরও ৬২৬ কোটি টাকার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ) থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। কিন্তু তৃতীয় দফা সংশোধনের এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া এবং অর্থ দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছে পরিকল্পনা কমিশন। পরিকল্পনা কমিশনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় উচ্চ পর্যায়ের এ বৈঠক পরিকল্পনা বিভাগের সচিব তারিক উল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এম এ এন সিদ্দিকী, পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য এস এম ফারুক, সওজের প্রধান প্রকৌশলী প্রধান ইবনে আলম হাসান, প্রকল্প পরিচালক আফতাব হোসেন খানসহ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পটির ব্যয় ৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা প্রস্তাব দিয়েছে সওজ। মূলত ঠিকাদারদের মূল্য সমন্বয় (প্রাইস এডজাস্টমেন্ট) করতে প্রকল্পটির ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে। এর আগেও দুই দফা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। প্রথম দফায় ২০০৯ সালে ২১৩ কোটি টাকা। দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালে ৮০৮ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। দুই দফা বড় অঙ্কের ব্যয় বাড়ানোর কারণে তৃতীয় দফায় ব্যয় বাড়াতে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। কারণ প্রকল্পটির মূল মেয়াদ গত ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে। এখন ক্রটি মেরামতকাল চলছে। সূত্র জানায়, তিন বিদেশী ঠিকাদার শিখো পিবিএল জেভি লিমিটেড, সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড এবং গ্যানন ডানকার্লি এ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের প্রকল্প বাস্তবায়নে গাফিলতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয়নি সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পটি। অথচ নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন না হওয়ায় এ প্রকল্পে সরকারকে মূল্য সমন্বয়ের নামে ১ হাজার ২২৭ কোটি টাকা গুনতে হচ্ছে। এর মধ্যে তৃতীয় দফা সংশোধনী প্রস্তাবে মূল্য সমন্বয় খাতে ৬৮২ কোটি টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির ১৩টি প্যাকেজের মধ্যে ৭টির কাজ পেয়েছে সিনোহাইড্রো। এর মধ্যে তিনটি প্যাকেজের (২,৩ এবং ৫ নং প্যাকেজ) বাস্তবায়ন পরিস্থিতি খুবই খারাপ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সর্বশেষ ডিসেম্বর পর্যন্ত হিসেবে দেখা গেছে, দুই নম্বর প্যাকেজের আওতায় কুটুম্বপুর থেকে কুমিল্লার শুরু পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করার কথা থাকলেও গত পাঁচ বছরে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত শেষ করেছে। এখনও আট কিলোমিটার নির্মাণ কাজ বাকি রয়েছে। অন্য প্যাকেজ দুটির অবস্থাও একই রকম। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা চট্টগ্রাম চাল লেন প্রকল্পটিতে কেন বার বার ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে তা খতিয়ে দেখতে চায় পরিকল্পনা কমিশন। কেননা যৌক্তিক কোন কারণ দেখাতে ব্যর্থ হলে ব্যয় বাড়ানো হবে না। সেই সাথে ভবিষ্যতে যাতে অন্য প্রকল্পে এরকম ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে বিশেষ সতর্ক রয়েছে কমিশন। পরিকল্পনামন্ত্রী নিজেও বিষয়টি তদারকি করছেন।
×