ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিশু-কিশোরদের কি মানসিক সমস্যা হতে পারে?

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শিশু-কিশোরদের কি মানসিক সমস্যা হতে পারে?

পরিসংখ্যান মতে : ব্রাজিলে স্কুল পড়ুয়া শিশুদের মধ্যে মানসিক সমস্যার প্রায় প্রকট ১২.৭% যদিও বাংলাদেশের কোন পরিসংখ্যান নাই তবে ধারণা করা হয় এর চেয়েও বেশি হবে। ডঐঙ-এর মতে প্রায় ৫০% বয়স্ক মানসিক রোগের উৎপত্তি শিশু-কিশোর বয়সে। অতএব মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে হলে শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ নজর, গুরুত্ব ও যতœ দিতে হবে এবং খুঁজে বের করতে হবে ঝুঁকিপূূর্ণ শিশুদের। শিশুরা নিজেদের সমস্যা বুঝতে পারে না, বলতে পারে না। শিশুরা বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন রকম আচরণ করতে পারে কোন আচরণ-কোন বয়সে স্বাভাবিক ও কোনটি অস্বাভাবিক। এগুলো অনেক বাবা-মা আত্মীয়-স্বজনরা বুঝতে পারে না। যেমন ধরুন কনডাক্ট ডিজঅর্ডারের শিশু-কিশোরদের বেলায় অনেক মুরব্বিরা বলে থাকেন বয়স হলে এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এ কথা ঠিক না। আরও একটি ঘটনা বলছিÑ সামিনার বয়স ১৩ বছর কিছুদিন আগে বিয়েও হয়েছে, বিয়ের চারদিন পর স্বামী তাকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। কারণ মেয়েটি বিছানায় প্রশ্রাব করে। এই লজ্জা, অপমান সহ্য করতে না পেরে মেয়েটি এখন খাওয়া-দাওয়া, ঘুম বন্ধ করে দিয়ে ধীরে ধীরে বিষণœতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। শিশু-কিশোরদের কয়েকটি বিশেষ সমস্যা বিছানায় প্রশ্রাব করা চার বছর বয়সের পর স্বাভাবিক না। কাপড়ে মল ত্যাগ করা (চার বছর বয়সের পরে)। খাদ্য গ্রহণে শিশুর অনিচ্ছা। ঘুমের সমস্যা। স্কুল পালানো, স্কুলভীতি। পড়াশোনায় অমনোযোগী, হিস্টেরিয়া, সুচিবাই, কনডাক্ট ডিজঅর্ডার বা আচরণের ত্রুটি- এই শিশুগুলো সাধারণত অবাধ্য থাকে, কারও কথা শোনে না, মিথ্যা কথা বলে। মৃগীরোগী, মাথা ব্যথা, অহেতুক ভয়ভীতি। হঠাৎ খেপে যাওয়া, রেগে যাওয়া, জিনিসপত্র ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলা। অটিজম, বিষণœতা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের সমস্যাগুলো বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে- একটি ৭-৮ বছরের ছেলে কেবল ভয় পায় আর কান্না করে। আত্মীয়-স্বজনরা প্রথমেই ফকির কবিরাজের কাছে নিয়ে গেল কিন্তু কোন উন্নতি না দেখে ৬ মাস ভোগান্তির পর চিকিৎসা শুরু হলো। এখন সে সম্পূর্ণ সুস্থ জীবনযাপন করছে। একটি ১০-১২ বছরের মেয়ের মাথা ব্যথা। এই ডাক্তার ওই ডাক্তার করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট নরমাল। কিন্তু মাথা ব্যথা কমছে না। এই সব রোগীগুলোর ক্ষেত্রে হয় সমস্যা তার নিজের ভেতরে অথবা ঘরের ভেতরে অথবা বাইরের পরিবেশের উপর এই ব্যাপারগুলো ক্ষতিয়ে দেখা উচিত। সুমনের বয়স ১০ বছর। বাবা-মার কথা শোনে না কেবল বাইরে বাইরে ঘুরে-বেড়ায় আর টাকা চায়। মিথ্যা কথা বলে চুরি করে। এটা যে মানসিক সমস্যা তা তার বাপ-মা মানতে নারাজ। স্কুল পড়ুয়া মেয়ে সুমী কেবল হাত ধোয়, মাথা থেকে কিছুতেই ময়লার ঘৃণা যায় না। হাত একদম সাদা করে ফেলছে। সাথী প্রেম করে পাড়ার একটি ছেলের সঙ্গে। জানাজানি হওয়ার পর বাবা-মা কিছুতেই মানতে নারাজ। এই ঘটনার পর মেয়েটি বার বার ফিট হয়ে যায়। তারপর চলে হুজুর, তাবিজ কবজওয়ালাদের চিকিৎসা। মৃগীরোগীকে অনেক জায়গায় আলগা দোষ, বাতাস লাগছে, জ্বিন-ভূতের ব্যাপার বলে কবিরাজরা দিনের পর দিন চিকিৎসা করে যাচ্ছে। অনেক ভোগান্তির পর নাকে মুখে পোড়ার দাগ ও ব্রেনের সমস্যা নিয়ে আসে ডাক্তারের কাছে। ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন এফসিপিএস (সাই) সহকারী অধ্যাপক ০১৮১৭০২৮২৭৭
×