স্টাফ রিপোর্টার ॥ নীলাভ জমিনে আঁকা চিত্রপট। এক পাশ থেকে বেরিয়ে এসেছে লতাপাতার ঝাঁক। সেই তৃণলতার মাঝে দৃশ্যমান এক নারীর মুখাবয়ব। দীঘল কেশবতী সুন্দর মুখশ্রীর রমণীর নাকে নথ, কপালে টিপ ও কানের দুলে প্রকাশ পাচ্ছে বাঙালী নারীর স্বতন্ত্র সাজ। বালাভর্তি হাতের ওপর বসে আছে শালিক পাখি। এ্যাক্রেলিক মাধ্যমের আশ্রয়ে সৃজিত চিত্রকর্মটির শিরোনাম বিউটি ইন নেচার। আবদুল আযীযের আঁকা এই ছবিটি এখন শোভা পাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে। এখানে চলছে সাত শিল্পীর যৌথ শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। শিরোনাম যুথবদ্ধ ছন্দময়তা।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী সাত শিল্পী হলেন আবদুল আযীয, শিবানন্দ অধিকারী, হারুন-অর-রশীদ, তারানা হালিম, দীপা ইসলাম, শক্তিপদ হালদার ও সুমা দেবী ম-ল। এই সাত শিল্পীর মধ্যে আবার পাঁচজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ও শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বিচিত্র বিষয়ের ওপর নানা মাধ্যমে চিত্রকর্ম এঁকেছেন শিল্পীরা।
নমনীয় রঙের আশ্রয়ে প্রাচ্যকলা রীতিতে চিত্রপট সাজিয়েছেন আবদুল আযীয। কোমল ও ছন্দময় রেখার ব্যবহারে ক্যানভাসে মেলে ধরেছেন প্রকৃতির অনবদ্য অনুষঙ্গ নারী, পাখি ও বৃক্ষ। অভিজ্ঞতার সঙ্গে বাস্তবতার সম্মিলনে শিল্প সৃজন করেছেন হারুন-অর-রশীদ। আধুনিক জীবনের জটিলতার বয়ান উঠে এসেছে এই শিল্পীর চিত্রপটে। ভাস্কর তারানা হালিম আধা-বিমূর্ত উপস্থাপনায় মানবদেহের জ্যামিতিক ফর্মে তুলে ধরেছেন মানুষের নানামুখী চরিত্রের মুখোশ। রং ও রেখায় প্রকৃতির অন্তর্লীন শক্তি ও রহস্যময়তা উন্মোচনের প্রয়াস নিয়েছেন শিবানন্দ অধিকারী। পদ্মপাতা ও ফুলের সমারোহে রূপকের আশ্রয়ে প্রাচ্যের দর্শন ও ধর্মের প্রতীকী ছবি এঁকেছেন দীপা ইসলাম। শক্তিপদ হালদারের ছবিতে বিশেষ ভঙ্গিমায় উদ্ভাসিত হয়েছে প্রকৃতি, মানব-মানবী ও সাপ। ফর্ম ও টেক্সচারের মাধ্যমে নিরীক্ষাধর্মিতাচার পথে চিত্রপট সাজিয়েছেন সুমা দেবী ম-ল।
৩১টি চিত্রকর্ম ও একটি ভাস্কর্য দিয়ে সাজানো হয়েছে প্রদর্শনী। রবিবার থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনী শেষ হবে ৬ ফেব্রুয়ারি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
জাতীয় পথনাট্যোৎসবে চার নাটকের প্রদর্শনী ॥ ‘জঙ্গীবাদ রুখে দাঁড়াও, বিশ্ব শান্তির পতাকা উড়াও’ সেøাগানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন আয়োজিত আট দিনের জাতীয় পথনাট্যোৎসব। সোমবার ছিল উৎসবের দ্বিতীয় দিন। এদিন চারটি নাটকের প্রদর্শনী হয়। মতিঝিল থিয়েটার সার্কেল পরিবেশন করে এসএম সোলায়মান রচিত ও আক্কাস আলী নিদের্শিত নাটক ‘খ্যাপা পাগলার প্যাচাল’। মলয় ভৌমিক রচিত ও খালিদ হাসান রুমি নিদের্শিত নাটক ‘গরু’ পরিবেশন করে বাতিঘর। শহীদুল হক খান শ্যানন রচিত ও শাহজাহান শোভন নিদের্শিত ‘কানার হাটবাজার’ পরিবেশন করে নাট্যভূমি। দ্বিতীয় দিনের শেষ নাটক ছিল ‘জন্মান্ধ’। দেবাশীষ ঘোষ রচিত ও শহীদুল ইসলাম নিদের্শিত এই নাটকটি পরিবেশন করে ঝিনাইদহের নাট্যদল বনলতা নাট্য সংসদ। উৎসবের তৃতীয় দিন আজ মঙ্গলবার ছয়টি নাটকের প্রদর্শনী হবে। নাটকগুলো হলোÑ সংলাপ থিয়েটারের ‘কাটুক ঘোর’, নাট্যপূরাণের ‘তন্ত্র বনাম মন্ত্র’, নাট্যযোদ্ধা ‘বুদ্ধি’, অবয়ব নাট্যদল ‘পুকুরচুরি’, দিবালোক থিয়েটার ‘এই পিরিতি সেই পিরিতি নয়’ এবং মুন্সীগঞ্জের থিয়েটার সার্কেল পরিবেশন করবে ‘পাহারা’। আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান উৎসবে প্রতিদিন ছয়টি করে নাটকের প্রদর্শনী হবে। প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে শুরু প্রদর্শনী।
মঞ্চস্থ কণ্ঠশীলনের নাটক ‘যা নেই ভারতে’ ॥ সোমবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হলো কণ্ঠশীলন প্রযোজিত নাটক ‘যা নেই ভারতে’। মহাভারতের কাহিনী অবলম্বনে বর্তমান সময়কে ধারণ করে নাটকটি রচনা করেছেন মনোজ মিত্র এবং নির্দেশনা দিয়েছেন মীর বরকত।
বগুড়া সরকারী আযিযুল হক কলেজে বইমেলা ॥ বগুড়া সরকারী আযিযুল হক কলেজ নতুন ভবন চত্বরে সোমবার সকালে শুরু হলো ২১ দিনব্যাপী বইমেলা। আনুষ্ঠানিকভাবে মেলা উদ্বোধন করেন কলেজ অধ্যক্ষ সামস্ উল আরেফিন জয়। মেলা মঞ্চে প্রতিদিন বিষয়ভিত্তিক বিতর্ক প্রতিযোগিতার পাশাপাশি থাকছে লোকজ ধারার সংস্কৃতির অনুষঙ্গসহ নাটক ও আবৃত্তিতে সাজানো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে মেলা।