ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্ব আইন করতে যাচ্ছে সরকার

দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান রেখে আইনের খসড়া অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:২১, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

দ্বৈত নাগরিকত্বের বিধান রেখে আইনের খসড়া অনুমোদন

তপন বিশ্বাস ॥ বাংলাদেশী প্রবাসীরা হারানো নাগরিকত্ব ফিরে পাবেন। বৈবাহিক সূত্রে বিদেশীরাও বাংলাদেশের নাগরিক হতে পারবেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের সন্তানরাও এদেশের নাগরিক হতে পারবেন। তবে মিথ্যা তথ্য দিলে রাখা হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদ- এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান। এছাড়া দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ বিস্তৃত করা হচ্ছে। এতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীরা দেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার সুযোগ পাবেন। এমন বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন, ২০১৬’ এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলাদেশের কোন নাগরিক সার্কভুক্ত দেশ বা মিয়ানমার বা সরকার কর্তৃক গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা নাগরিকত্ব গ্রহণের জন্য নিষিদ্ধ রাষ্ট্র ব্যতীত বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন কোন রাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন। কোন ব্যক্তি সুপ্রীমকোর্টের বিচারক, জাতীয় সংসদ সদস্য বা সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত বা শৃঙ্খলা বাহিনীতে বা প্রজাতন্ত্রে অসামরিক কর্মে বা পদে নিয়োজিত থাকাকালে দ্বৈত নাগরিক গ্রহণ করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা বৈঠকে এই আইনটি অনুমোদনের বিরোধিতা করতে গিয়ে এক মন্ত্রী বলেন, ‘কোন ব্যক্তি জন্মসূত্রে নাগরিক হবেন, যদি তার পিতা বা মাতা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হতে এই আইন বলবত হওয়ার অব্যবচিত পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ওই ব্যক্তি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হন বা থাকেন’ বিধানে থাকা এই বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর এই বিষয় ‘ওপেন’ করা ঠিক কি না। প্রভাবশালী ওই মন্ত্রীর কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের পর অনেক বিষয় সামনে এসেছে। এখনও তা নিষ্পত্তি হয়নি। এই আইনের বিধান দ্বারা অনেক কিছু নিষ্পত্তি হবে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সময় সৃষ্ট এবং ১৯৭৫-এ উত্থাপিত অমীমাংসিত অনেক ইস্যুর সমাধান হবে এতে। এর পর এই আইন অনুমোদনে আর কেউ কোন বিরোধিতা করেননি। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ একটি নাগরিকত্ব আইন করতে যাচ্ছে সরকার। এতে মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে বা তথ্য গোপন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর কারাদ- এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান থাকছে। পুনরায় একই অপরাধ সংঘটন করলে প্রথমবারে কৃত অপরাধের জন্য বর্ণিত দ-ের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে। বৈবাহিক সূত্রে নাগরিকত্ব প্রদান, নাগরিকত্বের অবসানের বিধানও থাকছে নতুন এই আইনে। সূত্র জানায়, বর্তমানে ‘দ্য সিটিজেনশিপ এ্যাক্ট ১৯৫১ এবং দ্য বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ (টেম্পোরারি প্রভিশন) অর্ডার, ১৯৭২ (অর্ডার নং ১৪৯ অব ১৯৭২) বিধান বলে দেশের নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা হয়। বিদ্যমান এই আইন ও আদেশে বৈবাহিক সূত্রে নাগরিকত্বের বিধান নাই। নতুন এই আইনে বৈবাহিকসূত্রে নাগরিকত্ব প্রদানের সুযোগ থাকছে। তবে বিদেশী নাগরিক বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকতা লাভ করলেও কোন কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিনি নাগরিকত্ব হারাবেন। বৈবাহিকসূত্রে নাগরিকত্ব ॥ আইনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কোন নাগরিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে তাকে নির্ধারিত শর্ত-সাপেক্ষে তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রেও আবেদনকারীকে নিরবচ্ছিন্নভাবে কমপক্ষে পাঁচ বছর বাংলাদেশে বসবাস করতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে চিকিৎসা, শিক্ষা অথবা জরুরী প্রয়োজনে বাংলাদেশের বাইরে গমন করতে সাময়িক অবস্থানকাল পরবর্তীতে তাকে বাংলাদেশে অবস্থান করে প্রথম আগমনের সর্বোচ্চ সাত বছরের মধ্যে মোট পাঁচ বছর পূর্ণ করতে হবে। এ সময়কে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্নভাবে বসবাসের আওতাধীন বলে গণ্য হবে। এই ধারায় আরও বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব লাভের পর কোন কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণকারী স্বামী বা স্ত্রীর নাগরিকত্ব স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের সন্ত্রানদের নাগরিকত্ব বহাল থাকবে। নিবন্ধনসূত্রে নাগরিকত্ব ॥ কোন সাবালক এবং সমর্থ ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিবন্ধন করা যাবে। যদি তার পূর্বপুরুষ (জীবিত অথবা মৃত) অবিভক্ত ভারতে জন্মগ্রহণ করেন; তিনি বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হন এবং আবেদনপত্র অব্যবহিত পূর্বে কমপক্ষে সাত বছর বাংলাদেশে বসবাস করেন। তবে শর্ত থাকে যে, উল্লেখিত সাত বছরের মধ্যে তাকে নিরবচ্ছিন্নভাবে পাঁচ বছর বাংলাদেশে বসবাস করতে হবে। বাংলাদেশের বাইরে তার অবস্থান একাধারে ছয়মাসের বেশি হতে পারবে না। আবেদনের আগে একাধারে কমপক্ষে তিন মাস বাংলাদেশে বসবাস করতে হবে। এ সকল শর্ত পূরণ করতে তিনি বাংলাদেশের স্থায়ী আবাসিক অধিকার সনদ অর্জন করার যোগ্য হবেন। অপরাধ সংঘটন ও পুনঃসংঘটনের দ- ॥ এই আইনের অধীনে কোন ব্যক্তি অসদুদ্দেশ্যে প্রণোদিত হয়ে যদি কোন মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদ- অথবা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। যদি কোন ব্যক্তি পুনরায় একই অপরাধ সংঘটন করেন সে ক্ষেত্রে প্রথমবারে কৃত অপরাধের জন্য বর্ণিত দ-ের পরিমাণ দ্বিগুণ হবে। দ্বৈত নাগরিকত্ব ॥ প্রবাসে অর্জিত নাগরিকত্বের কারণে এই আইনে নিজ দেশের অর্জিত নাগরিকত্বের অবসান ঘটবে না। সে ক্ষেত্রে নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় আবেদনের পর তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করা যাবে। এটি দ্বৈত নাগরিকত্ব হিসেবে গণ্য হবে। কোন বাংলাদেশী নাগরিক কোন কারণে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের অবসান ঘটানোর পর বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত পন্থায় তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পুনর্বহালের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলে তা বিবেচনায় নিয়ে অন্য কোন আইন দ্বারা বারিত না হলে তার নাগরিকত্ব পুনর্বহাল করার বিধান রাখা হয়েছে। জন্মসূত্রে নাগরিক ॥ বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী প্রত্যেক ব্যক্তি জন্মসূত্রে নাগরিক হবেন, যদি তার পিতা বা মাতা এই আইন বলবত হওয়ার তারিখে বা এর পরে অথবা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে এই আইন বলবত হওয়ার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হন বা থাকেন। এছাড়া খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, এই আইন বলবত হওয়ার পর দুই বছর বয়স পর্যন্ত কোন শিশু বাংলাদেশে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেলে এবং যদি সম্পূর্ণ বিপরীত কিছু প্রকাশ না পায় তাহলে ওই শিশু বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছে বলে ধরে নিয়ে তাকে জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক করা যাবে। বংশসূত্রে নাগরিকত্ব ॥ কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের বাইরে অন্য কোন দেশে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হবেন। তবে তার পিতা বা মাতা বংশসূত্র ছাড়া ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে এই আইন বলবত হওয়ার অব্যবহিত পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অন্য কোনভাবে বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে থাকলে, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হবেন। তবে কোন ব্যক্তির পিতা বা মাতা কেবল বংশসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার কারণে ওই ব্যক্তি এই আইনের অধীনে বাংলাদেশের নাগরিক হবেন না, যদি বাংলাদেশী কনস্যুলেট বা দূতাবাসে তার জন্মের এক বছরের মধ্যে নিবন্ধন করা না হয়; তিনি যে দেশে জন্মগ্রহণ করেছেন সে দেশের নিয়মানুযায়ী জন্ম নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত না হন; অথবা জন্মকালে তার পিতা বা মাতা বাংলাদেশ সরকারের অধীনে কিংবা প্রেষণে/লিয়েনে অন্যত্র চাকরিতে না থাকেন। বাংলাদেশে স্থায়ী আবাসিক অধিকার ॥ যদি কোন ব্যক্তি নির্ধারিত অঙ্কে বৈদেশিক মুদ্রায় বা বৈদেশিক মূলধন ও যন্ত্রপাতি বা উভয় প্রকারেই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন বা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও অঙ্কে বাংলাদেশের কোন কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন এবং এতদুদ্দেশ্যে বাংলাদেশে নির্ধারিত সময়কাল অবস্থান করেন, তাকে বাংলাদেশে স্থায়ী আবাসিক অধিকার সনদ প্রদান করা যাবে। তবে তিনি এই ধারার অধীনে নাগরিকত্ব অর্জন না করা পর্যন্ত, তাকে বাংলাদেশের একজন স্থায়ী নিবাসী বলে গণ্য করা হবে। এছাড়া খসড়ায় নাগরিকত্ব প্রদানসংক্রান্ত বিষয়ে-নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত জাহাজ বা উড়োজাহাজে জন্মগ্রহণ, দেশীয়করণসূত্রে নাগরিকত্ব, ভূখ- সংযোজনসূত্রে নাগরিকত্ব, স্থায়ী নিবাসের সনদ, নিবন্ধন এবং দেশীয়করণের মাধ্যমে অর্জিত নাগরিকত্বের কার্যকারিতা, নিবন্ধন বহি, নিবন্ধন সনদ, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের নিবন্ধন সংশয়ের ক্ষেত্রে প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদ, নাগরিকত্ব পরিত্যাগ, নগরিকত্বের অবসান পুনর্বিবেচনা ইত্যাদি ধারা সংযোজিত হয়েছে। কোন ব্যক্তি বাংলাদেশে নাগরিক হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন নাÑ যদি তিনি দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্র ব্যতীত কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আনুগত্য প্রকাশ করেন, বিদেশী রাষ্ট্রের কোন বাহিনীতে যোগদান করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা অন্য কোনভাবে ওই বাহিনীকে সহায়তা করে থাকেন এবং এ আইন বলবত হওয়ার অব্যবহিত পূর্বপর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস না করেন, এমন কোন দেশের নাগরিক বা অধিবাসী যে রাষ্ট্র্র বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল বা আছে, বাংলাদেশে বেআইনী অভিবাসী হিসেবে বসবাস করেন বা করে থাকেন। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, আইনটি বলবত হলে বিদ্যমান ‘দ্য সিটিজেনশিপ এ্যাক্ট ১৯৫১ এবং দ্য বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ (টেম্পোরারি প্রভিশন) অর্ডার, ১৯৭২ (অর্ডার নং ১৪৯ অব ১৯৭২) রহিত হবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, নতুন আইনে দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের সুযোগ অনেক সম্প্রসারিত হচ্ছে। আগে বাংলাদেশীদের জন্য কেবল আমেরিকা ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক হওয়ার আইনী সুযোগ ছিল। নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোন বাংলাদেশী সার্কভুক্ত দেশ বা মিয়ানমারের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিতে পারবে না। কেউ বিয়ের সূত্রে এসব দেশের কোনটির নাগরিক হলে তাদের এক দেশের নাগরিকত্ব ছাড়তে হবে। এছাড়া সরকার গেজেট জারি করে যেসব দেশকে নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেসব দেশেরও দ্বৈত নাগরিক হওয়া চলবে না। এর বাইরে বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন যে কোন রাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব বাংলাদেশিরা এই আইনের ফলে নিতে পারবেন বলে জানান সচিব। তবে সুপ্রীমকোর্টের বিচারক, জাতীয় সংসদের সদস্য, সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি, সশস্ত্রবাহিনী বা প্রজাতন্ত্রের কোন বেসামরিক পদে নিয়োজিতরা দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন না। খসড়ায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিকত্ব ছাড়া বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ আনুগত্য প্রকাশ করলে; বিদেশী রাষ্ট্রের কোন বাহিনীতে যোগ দিলে বা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা ওই বাহিনীকে সহায়তা করে থাকলে তার নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যাবে। কেউ মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাগরিক হলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদ- অথবা এক লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রাখা হয়েছে বলে জানান সচিব। তিনি বলেন, কেউ ইচ্ছে করলে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতেও পারবেন। সেক্ষেত্রে তার নাবালক সন্তানের বিষয়েও তা প্রযোজ্য হবে। বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেতে হলেও বিদেশী নাগরিকদের কমপক্ষে পাঁচ বছর এ দেশে বসবাস করতে হবে। আগের আইনে এক্ষেত্রে চার বছরের বাধ্যবাধকতা ছিল। সরকার চাইলে বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কাউকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দিতে পারবে। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া ব্যক্তিরা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনসহ যে কোন পদের নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। সুপ্রীমকোর্টের বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোন কর্মে নিয়োগ পাবেন না। কোন রাজনৈতিক সংগঠনও করতে পারবেন না। শফিউল আলম বলেন, ‘দি সিটিজেনশিপ এ্যাক্ট, ১৯৫১’ এবং ‘দি বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ টেমপোরারি প্রভিশন্স অর্ডার- ১৯৭২’ এক করেই নতুন এ আইন করা হচ্ছে। ওই দুই আইনে অনেক অসম্পূর্ণতা আছে, অনেক ব্যাকডেটেড ইস্যুজ আছে। সেগুলো পুনর্বিন্যস্ত করে নতুন এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। নতুন আইনে ছয়টি অধ্যায় ও ২৮টি ধারা থাকছে বলে জানান সচিব।
×