ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কোয়ার্টারে ভারতকে এড়ানোর লড়াই বাংলাদেশ-নামিবিয়ার

আজ জিতে গ্রুপ সেরায় চোখ মিরাজদের

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আজ জিতে গ্রুপ সেরায় চোখ মিরাজদের

মোঃ মামুন রশীদ ॥ প্রথম লক্ষ্যটা সহজভাবেই অর্জিত হয়েছে। টানা দুই ম্যাচ জিতে আগেভাগেই সুপার লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে। যদিও গত বিশ্বকাপে দুই ম্যাচ জিতে গেলেও নেট রানরেটে পিছিয়ে থাকায় শেষ মুহূর্তে বাদ পড়তে হয়েছিল। এবার সেটা ঘটেনি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়েছে। ‘এ’ গ্রুপ থেকে নামিবিয়া অনুর্ধ ১৯ ক্রিকেট দলও সুপার লীগ নিশ্চিত করেছে। তারাও প্রোটিয়া ও স্কটদের হারিয়েছে। এবার এ দুই দলের লড়াই গ্রুপ সেরা হওয়ার। আজ কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শীর্ষস্থান নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার জন্য মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও নামিবিয়া। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে সুফলটা আসবে কোয়ার্টার ফাইনালে। কারণ ‘এ’ গ্রুপ সেরার প্রতিপক্ষ হবে ‘ডি’ গ্রুপ রানার্সআপ নেপাল। কিন্তু গ্রুপ রানার্সআপদের মুখোমুখি হতে হবে ‘ডি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী ভারত অনুর্ধ ১৯ দলের। তাই আজকের ম্যাচটি দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। এর আগে ২০০৪ সালে প্রথমবার যুব বিশ্বকাপ আয়োজন করে সুপার লীগ পর্বে উঠতে ব্যর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ। তবে প্লেট চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেই হতাশায় সান্ত¡নার প্রলেপ দিতে পেরেছে স্বাগতিকরা। কিন্তু এবার শুরু থেকেই যুব বিশ্বকাপে নিজেদের সেরা নৈপুণ্য দেখানোর লক্ষ্য বাংলাদেশের। তবে কোচ মিজানুর রহমান বাবুল শুরু থেকেই জানিয়েছিলেন, মূল লক্ষ্য আগে সুপার লীগ নিশ্চিত করা। এরপর পরবর্তী লক্ষ্য। আর অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ তার স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার। প্রাথমিক লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বড় বাধা ছিল গত বিশ্বকাপ শিরোপাধারী দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু মিরাজরা শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন প্রোটিয়াদের হারিয়ে দেয়ার বিষয়ে। কারণ গত বছর হোম এ্যান্ড এ্যাওয়ে উভয় দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এবার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচেও প্রোটিয়া যুবাদের সহজেই ৪৩ রানে হারিয়ে শুভসূচনা করে বাংলাদেশের যুবারা। দ্বিতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ড অনুর্ধ ১৯ দল কোন পাত্তাই পায়নি। তাদের বাংলাদেশের যুবারা বিধ্বস্ত করেছে ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে। এরপরই নিশ্চিত হয়ে গেছে মিরাজদের কোয়ার্টার ফাইনাল। নামিবিয়া অনুর্ধ ১৯ দলও নিশ্চিত করে ফেলেছে সুপার লীগ। টানা দুই ম্যাচে তারাও জিতেছে। স্কটল্যান্ডকে ৯ উইকেটে এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে। নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছে। গ্রুপের শেষ ম্যাচে নামিবিয়ার বিপক্ষে লড়াইটা তেমন সহজ হবে না বাংলাদেশের জন্য। দুই ম্যাচেই পরে ব্যাট করে জিতেছে নামিবিয়ার যুবারা। আর বাংলাদেশ দুই ম্যাচ জিতেছে আগে ব্যাটিং করে। এ দুটি ম্যাচেই দেখা গেছে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করার ক্ষেত্রে উভয়দলের স্পিন আক্রমণ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। এবার দুই দলের স্পিন লড়াইটা জমে উঠবে। উভয় ম্যাচে বাংলাদেশের মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ছিলেন ত্রাণকর্তা। প্রথম ম্যাচে ৭৩ রান করা শান্ত দ্বিতীয় ম্যাচে ১১৩ রান করেছেন। ব্যাটে-বলে অধিনায়ক মিরাজ ছাড়া আর কেউ তেমন ধারাবাহিক ছিলেন না। বিশেষ করে দুই ওপেনার পিনাক ঘোষ ও সাইফ হাসানের পারফর্মেন্স দারুণ হতাশাজনক। রান পাননি জয়রাজ শেখ। তবে পেসার সাইফুদ্দিন দারুণ বোলিং করছেন। দারুণ ফর্মে আছেন স্পিনার সালেহ আহমেদ শাওন নিজেও। এবার এদের সবারই জ্বলে ওঠার অপেক্ষা। নামিবিয়াকে হারাতে পারলে সেমিফাইনালে ওঠার পথটাও কিছুটা সুগম হবে। কারণ গ্রুপ চ্যাম্পিয়নরা কোয়ার্টারে পাবে নেপালকে। যদিও এবার বিশ্বকাপে দারুণ বিস্ময় সৃষ্টি করেছে নেপালের যুবারা। তারা নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে দিয়ে সুপার লীগ নিশ্চিত করে। কিন্তু শেষ গ্রুপ ম্যাচে ভারতের কাছে হেরে ‘ডি’ গ্রুপ রানার্সআপ হয়। সে কারণে যে কোন দলই চাইবে ভারত কিংবা নেপালকে এড়াতে। সে সুযোগটা নেই বাংলাদেশ কিংবা নামিবিয়ার। কারণ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে এখন কোয়ার্টার খেলতে হবে নেপালের বিপক্ষে, আর গ্রুপ রানার্সআপ হলে আরও কঠিন প্রতিপক্ষ ভারতের মুখোমুখি হতে হবে। সেজন্য বাংলাদেশ এবং নামিবিয়া উভয় দলেরই লক্ষ্য শেষ ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। যদিও কোয়ার্টারের প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবছে না বাংলাদেশ। এ বিষয়ে শাওন বলেন, ‘আমরা ভারত কিংবা যে কোন প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবছি না। আমাদের লক্ষ্য জেতা। সেটার জন্যই খেলব আমরা।’ তবে নামিবিয়াকে হারানো খুব একটা সহজ হবে না। নামিবিয়ার টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান লফটি ইটন সবচেয়ে বড় শক্তি। দারুণ ফর্মে আছেন এ তরুণ। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও ঝলক দেখিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের বোলার এবং ব্যাটসম্যান উভয় ক্ষেত্রেই চ্যালেঞ্জ হতে পারেন এ অলরাউন্ডার।
×