ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

স্কটল্যান্ড ১১৪ রানে ধরাশায়ী

শান্তর শতকে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

শান্তর শতকে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ যুব দলের পরামর্শক স্টুয়ার্ট ল’র আশা দ্বিতীয় ম্যাচেই পূরণ হয়ে গেল। শতক মিলে গেল। নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকেই এলো সেই শতকটি। দক্ষিণ আফ্রিকা যুব দলের বিপক্ষে অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে যখন শতকের কাছে গিয়েও শান্ত (৭৩ রান করেছিলেন) তা ছুঁতে পারেননি, তখন স্টুয়ার্ট ল বলেছিলেন, ‘শতক চাই।’ সেই শতক হলো এবং শান্তর (১১৭ বলে অপরাজিত ১১৩) এই শতকে স্কটল্যান্ডকে ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে সুপারলীগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা নিশ্চিতও করে ফেলল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের গড়া ২৫৬ রান করতে গিয়ে ১৪২ রানেই গুটিয়ে যায় স্কটল্যান্ড। অবশ্য রবিবারই যে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার টিকেট মিলল, সেটি দক্ষিণ আফ্রিকা যুব দলের বিপক্ষে নামিবিয়া যুব দলের ২ উইকেটের জয়েই নিশ্চিত হলো। প্রোটিয়ারা জিতলে তখন শেষ ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করতে হতো বাংলাদেশকে। তা আর লাগল না। এখন ২ ফেব্রুয়ারি নামিবিয়ার বিপক্ষে ‘এ’ গ্রুপের সেরা দল হওয়ার জন্যই লড়াই করবে বাংলাদেশ। গ্রুপের সেরা হোক কিংবা না হোক বাংলাদেশ; সুপারলীগের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা হবে ভারত নয়ত নেপালের বিপক্ষেই। দক্ষিণ আফ্রিকার পর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও বড় জয় পেয়েছে মেহেদি হাসান মিরাজ বাহিনী। চট্টগ্রামের পর কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামেও জয় মিলল। টানা দুই জয়ের সুবাদে শেষ আটের টিকেট নিশ্চিত হয়ে গেছে যুবাদের। স্কটল্যান্ডের বিদায় ঘণ্টা বেজেছে। দিনের অপর ম্যাচে নামিবিয়ার কাছে হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাও বিদায় নিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও স্কটল্যান্ডকে খেলতে হবে প্লেট পর্বে। বাংলাদেশের যুবাদের দেয়া ২৫৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে স্কটল্যান্ড সেভাবে কোন সাফল্য পায়নি। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আজিম দার ছাড়া কেউই উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি। সম্মিলিত বোলিং নৈপুণ্যে শুরু থেকেই স্কটিশদের চাপে রাখে বাংলাদেশ। যদিও নেইল ফ্ল্যাক ও জোরি জনস্টন ৪৮ রানের ওপেনিং জুটি গড়েছিলেন। তবে সেখান থেকে ইনিংস টেনে নেয়ার কেউ ছিলেন না। ফ্ল্যাকের (২৮) উইকেট নিয়ে প্রথম আঘাত হেনেছিলেন মিরাজ। একই ওভারে ওয়াইস শাহ খাতা খোলার আগেই রান আউট হয়ে যান। জনস্টন (২০) দলীয় ৫৬ রানে এলবিডাবলিউয়ের ফাঁদে পড়েন আরিফুল ইসলামের বলে। পরে আজিম দার ও জ্যাক ওয়ালার কিছুটা লড়াকু মনোভাব দেখান। কিন্তু সেই লড়াইয়ে কাজের কাজ হয়নি। দলীয় ৮৯ রানে আরিফের বলে শাওনের হাতে ধরা পড়েন ওয়ালার (২৪)। এরপর টানা তিনটি উইকেট তুলে নেন আসিফ আহমেদ শাওন। ম্যাকরিয়াথকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এছাড়া হ্যারিস আসলাম জাকিরের ক্যাচে পরিণত হন। আর রায়ান ব্রাউনকে বোল্ড করেই ফেরান শাওন। হঠাৎই শাওনের ঘূর্ণিতে কাবু স্কটল্যান্ড কোণঠাসা হয়ে যায়। বাংলাদেশের জয় তখন সময়ের ব্যাপারে পরিণত হয়। শাওন থামলে শুরু হয় সাইফুদ্দিনের পালা। হ্যারিস কার্নেগি ও মিচেল রাওকে বোল্ড করে ফেরত পাঠান তিনি। এর মধ্যেই হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ হয় আজিমের। ৮৮ বল খেলে কোন বাউন্ডারির মার ছাড়াই অর্ধশত রান পূর্ণ করেন তিনি। অর্ধশত রান পূর্ণ হওয়ার পর সেই সাইফুদ্দিনের বলেই শাওনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আজিম। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সাইফুদ্দিন ৭.২ ওভারে ১৭ রানে এবং ১০ ওভার বল করে শাওন ২৭ রানের খরচায় তিনটি করে উইকেট নেন। এছাড়া আরিফুল দুটি ও অধিনায়ক মিরাজ নেন একটি করে উইকেট। এর আগে টস হেরে ব্যাট হাতে নেমে মাত্র ১৭ রানে দুই উইকেট হারিয়ে শুরুতে চাপে ছিল বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই পিনাক ঘোষ ফিরে যান সাজঘরে। স্বল্প সময়ের মধ্যেই জয়রাজ (১৩) শেখও তাকে অনুসরণ করেন। এরপর সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে সেই চাপ কাটায় বাংলাদেশ। যদিও দলীয় ১১৮ রানে হাফসেঞ্চুরি থেকে এক রান পেছনে থাকতেই আউট হয়ে যান সাইফ। সাইফ হাফসেঞ্চুরি করতে না পারলেও শান্ত সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকেন। ১১৭ বল থেকে ১০টি চারের মারে তিনি করেন অপরাজিত ১১৩ রান। এছাড়া মিরাজ ৪৮ বল থেকে চারটি চারের মারে করেন ৫১ রান। শেষ দিকে ছোট একটা ঝড় তোলেন সাঈদ সরকার। ছয় বলে এক চার ও এক ছক্কার মারে তিনি করেন ১৬ রান। স্কটিশ বোলারদের মধ্যে মোহাম্মদ গাফফার ৬০ রানের বিনিময়ে চারটি উইকেট তুলে নেন।
×